Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্দোলনের মাধ্যমে নেত্রীকে মুক্ত করতে না পারা দুর্ভাগ্য

‘খালেদা জিয়ার জন্মদিন-রোগমুক্তির জন্য দোয়া মাহফিল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৭ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০১ এএম

বেগম খালেদা জিয়াকে আন্দোলনের মাধ্যমে কারামুক্ত করার ব্যাপারে নিজেদের অসহায়ত্বের কথা স্বীকার করলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসরাম আলমগীর। তিনি বলেন, অসুস্থ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আন্দোলনের মাধ্যমে মুক্ত করতে না পারা দুর্ভাগ্য। আইন আদালতের ভূমিকা কী, সেটা আমরা জেনে গেছি। আমাদের দুর্ভাগ্য, আমরা এমন কিছু করতে পারছি না যে, দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রীকে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে মুক্ত করতে পারব। গতকাল শুক্রবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে তিনি এই আসহায়ত্বের কথা প্রকাশ করেন। ‘বেগম খালেদা জিয়ার ৭৫তম জন্মদিন’ উপলক্ষে এবং তার কারামুক্তি, রোগমুক্তি ও দীর্ঘায়ু কামনা করে এ মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের সুসংগঠিত হয়ে আন্দোলনের মাধ্যমে দেশনেত্রীকে মুক্ত করতে হবে। আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। আসুন, এই দিনে আল্লাহর কাছে তাঁর দীর্ঘায়ু কামনা করে তাঁর মুক্তির জন্য নিজেদের সংগঠিত করি ও আন্দোলন বেগবান করি। বেগম জিয়ার জন্মদিনে এটাই হোক আমাদের শপথ।

মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশকে পরনির্ভরশীল করার সুদূরপ্রসারী যে ষড়যন্ত্র, সেই কাজ এই সরকার বহুদূর এগিয়ে নিয়ে গেছে। তারা (সরকার) যে শুধু জনগণের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চালাচ্ছে তা নয়, এ দেশকে পরনির্ভরশীল করার জন্য সেই চক্রান্তে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করছে। তিনি আরও বলেন, আজকে খালেদা জিয়াকে ইচ্ছাকৃতভাবে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। কারণ তিনি যদি বাইরে থাকতেন তাহলে দেশের অর্থনীতিকে যে পরনির্ভরশীল করে ফেলা হচ্ছে, অর্থনীতিকে ফোকলা করে ফেলা হচ্ছে- সেটা সম্ভব হতো না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের জন্য সারাজীবন সংগ্রাম করেছেন। তার রাজনৈতিক জীবনের শুরু হচ্ছে রাজপথে। তিনি স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশের পথে-প্রান্তরে জনগণকে সংগঠিত করেছেন। তিনি কোনো রাজনৈতিক নেতা ছিলেন না, একজন গৃহবধূ যিনি রাজনীতি সম্পর্কে একেবারেই অনভিজ্ঞ ছিলেন। তিনি আরো বলেন, যখন তার ওপর দলের দায়িত্ব এসে পড়েছে তখন তিনি (খালেদা জিয়া) সেই দায়িত্বকে সত্যিকার অর্থে বাস্তবায়ন করার জন্য সব সময় জীবন উৎসর্গ করেছেন। এই নেত্রী গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য শুধু কারাবরণই করেননি, তার সবচেয়ে প্রিয়জনদেরকে হারিয়েছেন। দলের প্রতিষ্ঠাতা বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুনঃপ্রবর্তক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাহাদতের পরে যখন সবাই মনে করেছিল, বিশেষ করে যারা বাংলাদেশের বিরোধী মনে করছিল যে, এবার বিএনপি ধ্বংস হয়ে যাবে, শেষ হয়ে যাবে, এটা আর দাঁড়াতে পারবে না। তখন খালেদা জিয়া এসে বিএনপির পতাকা তুলে নিয়ে জনগণকে সংগঠিত করতে নিরলস পরিশ্রম করেছিলেন।

কোরবানির পশুর চামড়ার দরে বিপর্যয় পরিকল্পিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার পরিকল্পিতভাবে চামড়া শিল্পকে ধ্বংস করেছে। এক সময় পাট শিল্পকে ধ্বংস করা হয়েছিল আর আজকে চামড়া শিল্পকে ধ্বংস করা হয়েছে। বাংলাদেশকে পরনির্ভরশীল করার সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত এই সরকার বহুদূর এগিয়ে নিয়ে গেছে।
দেশের গণতান্ত্রিক সব প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, এই সরকারের সময় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করা হয়েছে বিচার বিভাগের। আজকে বিচার বিভাগের কোনো স্বাধীনতা নেই। এই অনির্বাচিত-জনবিচ্ছিন্ন সরকার বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে এদেশের রাজনৈতিক কর্মীদের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতন চালাচ্ছে। একইভাবে দেশনেত্রীকেও কারাগারে রেখেছে।

দোয়া ও মুনাজাত পরিচালনা করেন ওলামা দলের নেতা মাওলানা রফিকুল ইসলাম। মাহফিলে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, নিতাই রায় চৌধুরী, শওকত মাহমুদ, উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, সাইফুল আলম নীরব, এস এম জাহাঙ্গীর, আবুল কালাম আজাদ, আনোয়ার হোসেইন, নুরী আরা সাফা, শিরিন সুলতানা, আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খালেদা জিয়া

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ