Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাইবেল বিষয়ে অভিবাসন কর্মকর্তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মুখীন উদ্বাস্তুরা

প্রকাশের সময় : ৯ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণের ভিত্তিতে যুক্তরাজ্যে আশ্রয়ের জন্য আবেদন করা উদ্বাস্তুদের বাইবেল খেকে নানা (বাইবেল ট্রিভিয়া) বিষয়ে অভিবাসন কর্মকর্তাদের প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। যুক্তরাজ্যের সর্বদলীয় এমপিরা এ কথা জানান।
আন্তর্জাতিক ধর্মীয় বা ধর্মবিশ্বাস স্বাধীনতাবিষয়ক সর্বদলীয় পার্লামেন্ট সদস্য (এমপি) গ্রুপ কর্তৃক প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলা হয়, ধর্মান্তরের দাবি পরীক্ষা করার জন্য আশ্রয় প্রার্থীদের এ রকম প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা হয়, টেন কমান্ডমেন্টস কি কি? পেন্টেকস্ট হয় কখন? বাইবেলে কতগুলো পুস্তক আছে? উদ্বাস্তুরা এসব প্রশ্নের উত্তর সঠিকভাবে দিতে না পারলে তাদের আশ্রয়ের আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়।
নিপীড়ন থেকে পলায়ন : ধর্মীয় স্বাধীনতার ভিত্তিতে যুক্তরাজ্যে আশ্রয় দাবি শীর্ষক এ রিপোর্ট ৭ জুন সর্বদলীয় পার্লামেন্ট সদস্যদের গ্রুপ ও আশ্রয়প্রার্থী সমর্থক গ্রুপ কর্তৃক প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, এ ধরনের শিশুসুলভ প্রশ্ন আশ্রয়প্রার্থীর ধর্মান্তরকরণের দাবি যাচাই করার দুর্বল পন্থা এবং তা ভুল সিদ্ধান্ত ও ব্যয়বহুল আবেদনের কারণ হতে পারে।
ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হওয়ার প্রেক্ষাপটে আশ্রয় প্রার্থীদের মধ্যে খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত মুসলমান, আহমদিয়া মুসলিম, হিন্দু , অন্য ধর্মের লোক কিংবা কোনো ধর্মই নেই এমন লোকরাও রয়েছে। যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের গির্জাগুলোতে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সাপ্তাহিক প্রার্থনার দিনে আশ্রয় প্রার্থীদের সংখ্যা বৃদ্ধির কথা জানিয়েছে যারা বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য ও মধ্য এশিয়া থেকে আগত।
ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র্র দফতর বা চার্চগুলো কর্তৃক কোনো তথ্য না রাখা হলেও রিপোর্টে বলা হয়, আমরা যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় প্রার্থনার বহু ঘটনা দেখতে পাচ্ছি যারা তাদের ধর্মবিশ্বাসের কারণে নিপীড়নের শিকার হয়ে যুক্তরাজ্যে আশ্রয় প্রার্থী হয়েছে।
রিপোর্টে বলা হয়, বাস্তবতা হচ্ছে, এ প্রবণতা অব্যাহত থাকবে। আগামী বছরগুলোতেও ধর্মীয় নিপীড়নের কারণে আশ্রয় প্রার্থীদের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে না।
রিপোর্টে বলা হয়, কোনো ব্যক্তি প্রকৃতই খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করেছে কিনা তা যাচাইয়ের জন্য তথ্যভিত্তিক জিজ্ঞাসাবাদ খুবই সাধারণ বিষয়। আরো কথা হলো, সাক্ষ্য-প্রমাণ থেকে দেখা যায়, কিছু লোক হোম অফিসের সাক্ষাৎকারের প্রস্তুতি হিসেবে যতটা পারে শিখে নিয়েছে।
যদিও ধর্মীয় নিপীড়ন আশ্রয়ের ক্ষেত্র তৈরি করে, প্রশ্ন ও উত্তর অধিবেশন ধর্ম ও বিশ্বাসের ঐতিহ্যগত অভ্যন্তরীণ ও ব্যক্তিগত প্রকৃতির প্রতিফলন ঘটাতে ব্যর্থ বলে রিপোর্টে বলা হয়।
এতে আরো বলা হয়, যারা আশ্রয়ের জন্য আবেদন করছে তাদের মধ্যে ধর্ম সম্পর্কে বোঝার অভাব ও ভুল ধারণা রয়েছে।
তবে সর্বদলীয় গ্রুপের সভাপতি এলিজাবেথ বেরিজ স্বীকার করেন যে, হোম অফিস প্রকৃতই খ্রিস্টানদের আবেদনগুলো গ্রহণ ও যারা প্রকৃত খ্রিস্টান নয় তাদের আবেদন প্রত্যাখ্যান নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে।
রিপোর্ট প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক জিওফ গিলবার্ট বলেন, শারীরিক সহিংসতার মাধ্যম নিপীড়ন চালানো হলে তা চিহ্নিত করা সহজ। কিন্তু কারো ধর্মবিশ্বাসের কারণে নিপীড়নের বিষয়টি প্রমাণ করা কঠিন।
সর্বদলীয় সংসদ সদস্যরা হোম অফিসের অভিবাসন ও আশ্রয়দান কর্মকর্তাদের ধর্মীয় শিক্ষা প্রশিক্ষণ প্রদানের এবং ধর্মীয় নিপীড়নের কারণে আশ্রয় দানের আবেদন সংখ্যার তথ্য রাখার আহ্বান জানান। তারা বলেন, ধর্মীয় নিপীড়ন সংশ্লিষ্ট আবেদনগুলো একজন বিশেষজ্ঞ তত্ত্বাবধায়ক দ্বারা পরীক্ষা করতে হবে।
রিপোর্টে বলা হয়, আবেদনকারীরা যেন অকারণ হয়রানির শিকার না হয় এবং তাদের মুক্তভাবে কথা বলতে দিতে হবে। সূত্র দি গার্ডিয়ান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাইবেল বিষয়ে অভিবাসন কর্মকর্তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মুখীন উদ্বাস্তুরা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ