Inqilab Logo

রোববার ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ কার্তিক ১৪৩১, ৩০ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

জনসেবার পরিবর্তে পুলিশ কর্তৃত্ববাদী কাজ করতে চায় -জেনারেল মাহবুব

প্রকাশের সময় : ৩০ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেছেন, পুলিশের দায়িত্ব জনগণের সেবা করা। আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখা। এটা না করে তারা এখন আলাদা ব্যাংক চায়, মেডিকেল কলেজ চায়। এটা কোন গণতান্ত্রিক মানসিকতা নয়; এটা কর্তৃত্ববাদিতা। জনগণের সেবক পুলিশ আজ কর্তৃত্ববাদীর কাজ করতে চায়। শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৮০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ‘গণতন্ত্র ও সমকালীন রাজনীতি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দল এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
জেনারেল মাহবুবুর রহমান বলেন, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি আজ ধসে পড়েছে। দেশে পারিবারিক নিরাপত্তা নেই, নেই সামাজিক নিরাপত্তাও। মসজিদে মসজিদে বোমা হামলা হয়। বিদেশি নাগরিকদের হত্যা করা হয়। আর বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের গুম-খুন করা হয়। এসব দেশের জন্য অশনিসংকেত। পুলিশের এসব দিকে নজর দেয়া উচিত; কিন্তু তারা তা করছে না। তিনি বলেন, পুলিশের দায়িত্ব হলো জনগণের সেবা করা। কিন্তু তারা আজ ব্যাংক, নিজস্ব বিভাগ দাবি করছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আলাদা হয়ে কর্তৃত্ববাদীর কাজ করতে চায়। এসব তো তাদের কাজ নয়। দেশের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখা তাদের কাজ।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ও জিয়াউর রহমানের মাঝে কোনো বিরোধ ছিলো না। কিন্তু যারা দেশে শান্তি চায় না, তারাই তাদের নিয়ে বির্তক তৈরি করছে। গণতন্ত্রের সঙ্কট থেকেই এ ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
জেনারেল মাহবুব বলেন, দেশের আইন-শৃঙ্খলা অবনতি হয়েছে। গুম, খুন ও দুর্নীতি নিত্যদিনের সঙ্গী হয়েছে। এ থেকে উত্তরণের জন্য গোটাজাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের জন্য ‘কাল’ হয়ে দাঁড়াবে। তিনি বলেন, ঠুনকো অভিযোগে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করা হয়েছে। কারণ, তার বক্তব্যে রাষ্ট্রাদ্রোহিতার লেশমাত্রও ছিল না। এটি অবৈধ মামলা। তবে এ মামলা শেখ হাসিনা ও বর্তমান সরকারের জন্য ‘কাল’ হয়ে দাঁড়াবে। হাসিনার ‘তকতে তাউশ’ একদিন ভেঙে পড়বে।’
দুদু বলেন, বিএনপি কখনও গণতন্ত্রকে হত্যা করেনি বরং দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথ সুগম করেছিলেন। তাই আমরা বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে চিন্তিত নই। চিন্তিত শেখ হাসিনার জন্য। কারণ, তিনি গণতন্ত্রের ট্র্যাকের বাইরে চলে গেছেন। আর গণতন্ত্রের বাইরে চলে গেলে তার ফল এ দেশে যে কী হয়, বিগত ৪৪ বছরে আমরা তা দেখেছি। গণতন্ত্রের বাইরে যাওয়ার জন্য এরশাদ বিশ্ববেহায়া হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, বাংলাদেশে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও অগ্রগতির জন্য আপনি গণতন্ত্রের ট্র্যাকে ফিরে আসুন। শহীদ জিয়াকে আপনার অনুসরণ করতে হবে না। গণতন্ত্রকে অনুসরণ করলেই আপনি শহীদ জিয়াকে স্মৃতিপটে দেখতে পাবেন।
জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান বলেন, দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রে জিয়াউর রহমানকে হত্যা করা হয়েছে। বিএনপি ৩ বার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু জিয়ার রাজনৈতিক হত্যার বিচার হয় নাই। ষড়যন্ত্রকারীদেরও চিহ্নিত করা হয়নি। এ কলঙ্ক মোচনের দায়িত্ব যতদিন জাতীয়তাবাদী শক্তি গ্রহণ না করবে, ততদিন গজব থেকে আমরা মুক্তি পাব না।
বিএনপি চেয়ারপারসনের আরেক উপদেষ্টা এডভোকেট আহমেদ আযম খান বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা আইনি ও রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করার কথা ঘোষণা করেন।
জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বেপারীর সভাপতিত্বে এতে অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার হায়দার আলী, বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূইয়া, এনডিপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মঞ্জুর হোসেন ঈসা, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরীন সুলতানা প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জনসেবার পরিবর্তে পুলিশ কর্তৃত্ববাদী কাজ করতে চায় -জেনারেল মাহবুব
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ