Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গ্রামমুখী মানুষের ঢল

সুন্দরবন লাইনচ্যুত : উত্তর-দক্ষিণের যাত্রীদের ভোগান্তি

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১০ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০১ এএম

ঈদযাত্রার তৃতীয় দিনে সড়কপথে যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। আগে থেকেই যারা দুরপাল্লার বাসের টিকিট কেটে রেখেছিলেন তারা সময়মতো রওনা করে পথিমধ্যে আটকা পড়েছেন। বিশেষ করে গত ঈদের মতো এবারও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ভয়াবহ যানজটে আটকা পড়েছে শত শত যানবাহন। গতকাল সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখার সময় ৭০ কিলোমিটার যানজট ছিল। ঘরমুখি যাত্রীদের একজন টেলিফোনে জানান, সাড়ে ৪ ঘণ্টা একই স্থানে থেমে আছে বাস। অন্যদিকে, ঢাকা-ময়মনসিংহ, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কেও যানজট ছিল। তবে তা ছিল সহনীয় পর্যায়ে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগিরা জানান, গাজীপুরের চন্দ্রা মোড় থেকে শুরু হয়ে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব প্রান্ত পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে গতকাল শুক্রবার ভোররাত থেকে তীব্র যানজট ছিল। ভোররাত ৩টা থেকে এই যানজট শুরু হলে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়েন। অসংখ্য গাড়ি রাস্তায় আটকে যায়। মাঝে মাঝে গাড়িগুলো সামান্য এগোলেও খানিক পর আবার থেমে যাচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মতে, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানজটের মূল কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে গতকাল থেকে ঈদের ছুটি শুরু হওয়ায় ঘরমুখো মানুষের বাড়ি ফেরার চাপ, অসংখ্য গাড়ি এবং রাস্তায় খানাখন্দ।
বৃষ্টির কারণে রাস্তার অবস্থা আরো খারাপ হয়ে গেছে। রাস্তার পাশে কাদা। এর ফলে ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গমুখী লেনটায় বেশির ভাগ সময়ই গাড়িগুলো আটকে থাকছে বলেও জানান তারা।

এর ফলে ঈদের ঘরমুখো যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছেন। তবে পুলিশের দাবি, গাড়িগুলো ধীরে ধীরে এগোচ্ছে।
টাঙ্গাইল শহর বাইপাসে দায়িত্বরত টাঙ্গাইল সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনিসুর রহমান জানান, ভোররাত ৩টা থেকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।

টাঙ্গাইল জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আহাদুজ্জামান মিয়া বলেন, বৃহস্পতিবারের ভারি বৃষ্টিতে রাস্তার অবস্থা খুব খারাপ হয়ে গেছে। মহাসড়কের বিভিন্নস্থানে খানা-খন্দক, কাদা রয়েছে। এছাড়াও, রাস্তায় ছোট-খাটো দুর্ঘটনা ও গাড়ি নষ্ট হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনায় এই যানজট সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের টাঙ্গাইল অংশে পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবকরা প্রাণপণ চেষ্টা করছেন যাতে গাড়িগুলোকে চলমান রাখা যায়।

তিনি জানান, রাস্তার বিভিন্ন অংশ আগে থেকেই ভাঙ্গা ছিলো এবং মহাসড়কের বিভিন্নস্থানে আন্ডারপাসের নির্মাণকাজ চলছে। রাস্তার বিভিন্নস্থানে খানা-খন্দক, কাদা। বৃষ্টিতে রাস্তার অবস্থা খারাপ হয়ে যাওয়ার কারণে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

ভুক্তভোগী যাত্রী রবিউল ইসলাম নিজেকে এনজিও কর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়ে বলেন, আমি কুমিল্লা থেকে যাচ্ছি টাঙ্গাইলের মধুপুরে। ভোররাত ৩টার দিকে চন্দ্রার মোড়ে এসে জ্যামে পড়ি। চন্দ্রা থেকে টাঙ্গাইল আসতে যেখানে দেড় ঘণ্টা লাগার কথা, সেখানে ছয় ঘণ্টা পর টাঙ্গাইল শহর বাইপাসে আসি। সঙ্গে পরিবারের সদস্যরা রয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাচ্চারা বমি করছে, নারীরা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

এদিকে, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কেও গতকাল দুপুরের পর থেকে পথে পথে থমকে ছিল গাড়ি। ঢাকা থেকে আরিচা-পাটুরিয়ার ঘাটের যাত্রীদের ভোগান্তি তাই ক্রমশই বেড়েছে। যাত্রীদের অপেক্ষার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রোদের তীব্র গরম আবার কখনো মুষলধারে বৃষ্টি। এসব সঙ্গে করেই এই রুটের হাজারো যাত্রীকে অপেক্ষা করতে হয়েছে কখন পৌঁছাতে পারবেন প্রিয়জনের কাছে।

জানা যায়, রাজধানী ছাড়ার পরপরই ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের যাত্রীদের দীর্ঘ সময়ে বাসে থাকতে হয়েছে। কোনো কোনো জায়গায় ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট পর পর গাড়ির চাকা একটু ঘুরছে, আবার কোনো জায়গায়ও ১ ঘণ্টাতেও নড়ছে না। সব মিলিয়ে ঈদে বাড়ি ফেরা যাত্রীদের অবস্থা ছিল নাজেহাল।

যাত্রীরা জানান, হেমায়েতপুর থেকে নবীনগর যেতে দেড় ঘণ্টারও সময় বেশি লেগেছে। আর অন্যান্য স্থানে গাড়ি একবারে থেমে ছিল। দাঁড়িয়ে থাকা থ্রি স্টার পরিবহনের যাত্রী আজিজ জানান, মানিকগঞ্জ পার হওয়ার পর প্রায় ৪৫ মিনিট একই জায়গায় গাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল। এমন জায়গায় গাড়ি থেমেছিল যে আশপাশের কোনো খাবারের দোকানও ছিল না। এতো যানজট লেগেছে তা ছাড়ারও নামও ছিল না।

শুভযাত্রা পরিবহনের যাত্রী মিতালি বলেন, কোলে দুই বছরের মেয়ে নিয়ে বাসে বসে থাকা অনেক কষ্টকর। গার্মেন্টস কর্মী হওয়ায় ছুটি পেতে দেরি হওয়ায় টিকিট কাটতে পারিনি। এজন্য লোকাল সিটিং সার্ভিসে বাসে যাত্রা করছি। বাচ্চা গরম সহ্য করতে পারছে না। কখন যে গন্তব্য পৌঁছাবো সেই অপেক্ষা করেছি।

অন্যদিকে, ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কেও যানজট ছিল। ঢাকা থেকে বাস ছাড়ার পর কাঁচপুর সেতু পার হওয়ার পর ভুলতা-গাউসিয়া এলাকায় কয়েক ঘণ্টা যানজটে আটকে ছিল। ব্যতিক্রম শুধু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। এই মহাসড়কে গতকালও কোনো যানজট ছিল না।



 

Show all comments
  • Nazrul Islam Babu ১০ আগস্ট, ২০১৯, ১২:৫৭ এএম says : 0
    I am Suffering in Dhumketu Express.
    Total Reply(0) Reply
  • MD Abul Kalam Mortaz ১০ আগস্ট, ২০১৯, ১২:৫৭ এএম says : 0
    বাংলাদেশ রেলওয়ে দীর্ঘদিন কর্তপক্ষে দুর্নীতি করনে লাইন নিরর্মান দৈনিক না করার রেল কতৃপক্ষ দায়ী নিতে হবে
    Total Reply(0) Reply
  • Engr Moqbular Rahman Nannu ১০ আগস্ট, ২০১৯, ১২:৫৭ এএম says : 0
    ঈদ যাত্রীদের ঈদ বরবাদ
    Total Reply(0) Reply
  • Mah Sajeeb Khan ১০ আগস্ট, ২০১৯, ১২:৫৭ এএম says : 0
    হে-আল্লাহ্ সবাইকে হেফাজত করুন।
    Total Reply(0) Reply
  • Bashir Ahmmed ১০ আগস্ট, ২০১৯, ১২:৫৯ এএম says : 0
    এটা তো প্রতি বছর কোরবানী'র সময় স্বাভাবিক ঘটনা। এ সময়ে রাস্তা ফাকা, সেটাই অস্বাভাবিক ঘটনা।
    Total Reply(0) Reply
  • Krishibid Shamim Hasan Jewel ১০ আগস্ট, ২০১৯, ১২:৫৯ এএম says : 0
    নদীর অবস্থাও বেশি ভালো নয় Meghna ও Padma নদীতে প্রচন্ড স্রোত , যেকোনো সময় water vessel sink করতে পারে |
    Total Reply(0) Reply
  • মেহেদি হাসান ১০ আগস্ট, ২০১৯, ১:০১ এএম says : 0
    পাটুরিয়া ঘাটে প্রায় ২০০০ প্রাইভেট কার আটকা। সকাল নয়টায় এসে এখনো ১০০০ গাড়ির পেছনে। বাচ্চাসহ বৃদ্ধ ও নারীদের অবর্ননীয় দুর্ভোগ। ঘাট কর্তৃপক্ষ টাকার বিনিময়ে বাস ট্রাক অগ্রাধিকার দিচ্ছে বলে অভিযোগ।
    Total Reply(0) Reply
  • Abortive Man ১০ আগস্ট, ২০১৯, ১:০১ এএম says : 0
    কিছু করার নাই। জনবহুল এমন দেশে হতেই পারে
    Total Reply(0) Reply
  • ash ১০ আগস্ট, ২০১৯, ৬:০১ এএম says : 0
    OTA KI RASTA NA CHASHA KHET?? HAY RE BANGLADESHER WNNOONNNN ! AMAGO ...WNNOOON
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঈদুল আজহা

৯ জুলাই, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ