পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
ব্রাহ্মণপাড়া (কুমিল্লা) উপজেলা সংবাদদাতা : বাংলাদেশের অর্থকরী ফসল, সোনালি আঁশ পাট চাষে দিনে দিনে আগ্রহ বাড়ছে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার কৃষকদের। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চাষিরা সঠিক সময়ে জমিতে বীজ বপন করার সুযোগ পাওয়ায় এ উপজেলায় গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি জমিতে পাট চাষ হয়েছে। গতবছর পাটের ন্যায্যমূল্য না পেলেও অন্যান্য ফসলের তুলনায় পাট চাষে খরচ কম ও অধিক লাভজনক ফসল হওয়ায় এবার এ অঞ্চলের কৃষকেরা পাট চাষের প্রতি ঝুঁকে পড়েছেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, স্বাধীনতার পর থেকেই এ অঞ্চলে ব্যাপকভাবে পাট চাষ হত। কারণ তখন অন্যান্য ফসলের তুলনায় পাট চাষ ছিল অধিক লাভজনক একটি ফসল। কিন্তু বিগত কয়েক বছর পূর্বে হঠাৎ করে পাটের দাম আকস্মিকভাবে কমে যায়। এতে পাট চাষ করে এ অঞ্চলের কৃষকেরা একদিকে যেমন আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন অন্যদিকে ব্যবসায়ীরাও লাভের আশায় বাজার থেকে পাট কিনে মজুদ করে রেখে পরবর্তীতে লাখ লাখ টাকা লোকসান দিয়ে তা বিক্রি করতে বাধ্য হয়। এ পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীরা লোকসনের হিসাব কষতে গিয়ে প্রায় নিঃস্ব হয়ে পড়েন। তারা পাট ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে অন্যান্য ব্যবসা শুরু করেন। কৃষকরাও পাট চাষ ছেড়ে দিয়ে ধান চাষে বেশি ঝুঁকেছেন। এতে এ এলাকায় পাটচাষ অস্বাভাবিকভাবে কমে যায়। তবে সাংসারিক কাজকর্ম ও জ্বালানি হিসাবে পাট খড়ির প্রয়োজনে কেউ কেউ সামান্য পরিমাণ জমিতে পাট চাষ করতে থাকেন। এ অবস্থায় এ এলাকায় পাট চাষ প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। কিন্তু গত অর্থবছরে ঘোষিত বাজেটে সরকারিভাবে পাটের দাম বৃদ্ধি করায় এ অঞ্চলের কৃষকরা আবারো পাট চাষের প্রতি ঝুঁকে পড়েছেন। এ প্রসঙ্গে উপজেলার দুলালপুর গ্রামের কৃষক জানু মিয়া বলেন, গত বছর তিনি ১৫ শতক জমিতে পাট চাষ করে ভালো দাম পেয়েছেন। এ কারণে এ বছর তিনি ৩০ শতক জমিতে পাট চাষ করেছেন। একই গ্রামের কৃষক শানু মিয়া ও ফজলুর রহমান জানান, এক সময় তারা পাট চাষের উপরই নির্ভরশীল ছিলেন। বিগত কয়েক বছর পূর্বে হঠাৎ করে পাটের দাম কমে যাওয়ায় তারা পাট চাষের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। গত বছর পাটের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এ বছর তাদের অধিকাংশ জমিতে পাট চাষ করেছেন বলে তারা জানান। এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মুশিউল ইসলাম জানান, অন্যান্য ফসলের তুলনায় পাট চাষে আর্থিক খরচ ও শ্রম দু’টোই কম লাগে। তা ছাড়া পাট অধিক লাভজনক একটি ফসল হওয়ায় এবং গত বছর চাষিরা পাটের ন্যায্যমূল্য পাওয়ায় এ অঞ্চলের কৃষকেরা এবার পাট চাষের প্রতি ঝুঁকে পড়েছেন। তিনি আরো জানান, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া পাট চাষের অনুকূলে থাকায় কৃষকেরা সঠিক সময়ে জমিতে বীজ বপন করার সুযোগ পেয়েছে। এ বছর এ উপজেলায় গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি জমিতে পাট চাষ হয়েছে। ২০১৫ সালে এই উপজেলায় দেশি জাতের পাটের চাষ হয়েছিল ১৫০ হেক্টর এবং তুষা জাতের পাটের চাষ হয়েছিল ২০ হেক্টর মোট ১৭০ হেক্টর জমিতে। চলিত বছরে পাটের চাষ হয়েছে দেশি জাতের ৩৮০ হেক্টর এবং তুষা জাতের ২ হেক্টর জমি। এ বছর এই উপজেলার কৃষকরা মোট ৩৮২ হেক্টর জমিতে পাটের চাষ করেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।