Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গণহত্যায় সংখ্যা গুণে নির্ধারণ করা যায় না -হানিফ

প্রকাশের সময় : ৩০ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধে যে গণহত্যা হয়েছে তা একজন দু’জন করে গুণে নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। এটা অনুমানভিত্তিক সংখ্যায় নির্ধারণ করা হয়েছিল। মানুষের মৃত্যুর ধরন দেখে, মৃত্যুর মিছিল দেখেই হয়তো সংখ্যাটাকে অনুমানভিত্তিকই করা হয়েছে। খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করে পরিকল্পিতভাবে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করার চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছেন। ইতিহাস ‘বিকৃতির ষড়যন্ত্র’ বন্ধ করতে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়ে হানিফ বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশে এই রকম গণহত্যা হয়েছিল। জার্মানিতে নাৎসি বাহিনীর দ্বারা ইহুদি হত্যা হয়েছিল। ২০১০ সালে রুয়ান্ডাতে গণহত্যা হয়েছিল। এর আগে আণবিক বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ জাপানে গণহত্যা চালিয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত গণহত্যার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘কী নিষ্ঠুর হত্যাকা- ঘটেছিল! সারা দেশে এখানে-ওখানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল লাশ আর লাশ। লাশের মিছিল ছিল। নদীতে, পুকুরে, এখানে-সেখানে লাশ ভাসত। গণহত্যার চিহ্ন যেন সারা দেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল। ৩০ লাখ মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের এই বিশাল সংখ্যা একজন-দু’জনের নাম করে কখনও হিসাব করা যায় না। গতকাল শুক্রবার দুপুরে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ ইউনাইটেড ইসলামী পার্টির জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশনে তিনি এসব কথা বলেন।
পাকিস্তানের নির্দেশে বিএনপি-জামায়াত বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে চায় দাবি করে মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের সংখ্যা নিয়ে কটাক্ষ করে পাকিস্তানের অপকর্মকে পাকিস্তান যেভাবে অস্বীকার করে আসছে, সেই পাকিস্তানের অপকর্মকে জায়েজ করার জন্য বিএনপি ও জামায়াত আজ একই সুরে কথা বলে যাচ্ছে। পাকিস্তান যেভাবে বলেছে, একাত্তর সালে তারা এ দেশে গণহত্যা করেনি। আজ বিএনপিও গণহত্যার সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলে পাকিস্তানের সেই বক্তব্য সমর্থন করে যাচ্ছে।’
বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে বিএনপির নেতা রুহুল কবির রিজভীর এক বক্তব্যের সূত্র ধরে আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, আমরা পরিষ্কারভাবে বিএনপির নেতৃবৃন্দকে জানিয়ে দিতে চাই, ইতিহাস বিকৃতি করার ষড়যন্ত্র বন্ধ করুন। বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এক দিনে হন নাই। ১৯৪৯ সাল থেকে বাংলাদেশের স্বাধিকার আন্দোলনের জন্য উনি সংগ্রাম শুরু করেন। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ছয় দফার মধ্য দিয়েই আমাদের স্বাধীনতার সোপান রচনা করেছিলেন। ‘৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে ‘৭০-এর নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে স্বাধীনতার ঘোষণা করেছিলেন। এই স্বাধীনতা এক দিনে আসেনি। এই স্বাধীনতা কোনো ব্যক্তির এক হুইসেলে আসেনি।
হানিফ বলেন, এই ধৃষ্টতা দ্বিতীয়বার না দেখানোর জন্য আমরা অনুরোধ করে যাচ্ছি। জাতির পিতাকে নিয়ে, মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে কটাক্ষ করে এই ধৃষ্টতা যদি ভবিষ্যতে কেউ দেখায়, তাহলে বাংলার জনগণ তাকে ক্ষমা করবে না। সমূচিত জবাব দিয়ে স্বাধীনতা ও ইতিহাস বিকৃত করা ব্যক্তিদের এই বাংলাদেশ থেকে চিরদিনের জন্য উৎখাত করবে।
আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশের আইন-আদালত খালেদা জিয়ার দ্বারা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। কারণ আদালতের তারিখ পড়লেও উনি যান না। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইসলামের প্রকৃত খাদেম হলেন শেখ হাসিনা এবং শেখ হাসিনা
ইউনাইটেড ইসলামী পার্টির চেয়ারম্যান মাওলানা ইসমাইল হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য আমিনুল ইসলাম, ইউনাইটেড ইসলামী পার্টির মহাসচিব মুফতি তাজুল ইসলাম ফারুকী প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গণহত্যায় সংখ্যা গুণে নির্ধারণ করা যায় না -হানিফ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ