Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নতুন মোড়কে পুরনো খেজুর!

প্রকাশের সময় : ৮ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে ঃ খেজুর দিয়ে ইফতার করাটা রাসুল (সা.)-এর সুন্নত অনুসরণ হিসেবেই পালন হয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে। আর তাই ইফতারে অন্য যত আইটেমই থাকুক, খেজুর থাকতেই হবে। ধনী-গরিব সবাই অন্তত একটি খেজুর মুখে নিয়ে ইফতার শুরু করে থাকেন। ইফতারের অন্যতম অনুষঙ্গ খেজুরের এ চাহিদাকে টার্গেট করে রোজা এলেই এটির দাম বেড়ে যায়। রোজায় খেজুরের দাম বাড়ানোর এ কালচার দেশের অন্যান্য জায়গার মতো কুমিল্লার ফল ব্যবসায়ীদের কাছেও রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। খেজুরের দাম নিয়ে ক্রেতাদের বাড়াবাড়ি করার কোনো সুযোগ নেই কুমিল্লার বাজারে। রহমত, মাগফিরাত ও নাযাতের এ মাসের শুরুতে ক্রেতারা রীতিমত জিম্মি হয়ে পড়ছে খেজুর কিনতে এসে। এছাড়া গত বছরের পুরনো খেজুরও নতুন মোড়কে মিলছে ফল দোকানগুলোতে।
আজ থেকে রোজা শুরু হয়েছে। ইফতারে খেজুরের আমেজ রাখার জন্য বাজার থেকে গতবারের চেয়ে অধিক দামে খেজুর কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। কুমিল্লা নগরীসহ গ্রাম-গঞ্জের ফল দোকানিরা খেজুরের দাম বাড়িয়ে অযৌক্তিক লাভ নিতে শুরু করেছে। ইফতারের অপরিহার্য অংশ খেজুর বেশি দামে বিক্রির লোভনীয় অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না কুমিল্লার ফল ব্যবসায়ীরা। কুমিল্লা নগরীর রাজগঞ্জ, কান্দিরপাড়, টমছমব্রিজ, শাসনগাছা, চকবাজার, রানীরবাজার, পদুয়ার বাজার ও ক্যান্টনমেন্টের ফলবাজার ঘুরে জানা গেছে, রোজা উপলক্ষে বাজারগুলোতে সৌদি আরব, তিওনিশিয়া, আলজেরিয়া, দুবাই, পাকিস্তানসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের আমদানি করা খেজুর উঠেছে। গত ২-৩ বছর ধরে ইরানের সুস্বাদু খেজুর বাজারে নেই। কুমিল্লার বাজারে একচেটিয়া স্থান দখল করে আছে তিউনিশিয়ার খেজুর। গত বছরের পুরনো খেজুরও নতুন মোড়কে কুমিল্লার ফল দোকানগুলোতে স্থান পেয়েছে। আবার সৌদি আরবের উৎকৃষ্ট মানের মরিয়ম খেজুরও নকল হয়েছে, যা লোকাল প্যাকেটে ফল দোকানে কম দামে পাওয়া যাচ্ছে।
রোজা শুরুর আগের দিন থেকে কুমিল্লার বাজারে বিভিন্ন দেশের খেজুরের দাম অত্যধিক বেড়েছে, যা গতবছরের তুলনায় কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকার ব্যবধান রয়েছে। দামের দিক থেকে গতবছরের চেয়ে কেজিতে ৭০/৮০ টাকা বাড়তি ভেজা খেজুর বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়। নাগাল খেজুর কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। তিউনিশিয়ার এডি ফ্রুটসের আধা কেজি প্যাকেট ৫০ টাকা বেড়ে হয়েছে ২৫০ টাকা। ২০০ টাকার এক কেজির ক্রাউন খেজুর এবারে ২৫০ টাকা। ৫০০ গ্রামের আলজেরিয়ার বারারি খেজুর ১০০ টাকা বেশিতে এবারে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। ২০০ টাকা ফরিদা কেজিতে বেড়েছে ৫০ টাকা। লুলু কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা। বড়ই খেজুর কেজিতে ৮০ টাকা বেড়ে এবারে ২৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আধাকেজির মদিনার প্যাকেট ৫০ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫০ টাকায়। উৎকৃষ্ট মানের সৌদিআরবের মরিয়ম খেজুর কেজিতে ২০০ টাকা বেড়ে এবারে বিক্রি হচ্ছে ১২০০ টাকায়। ফল দোকানিরা জানান, এবারের রমজানকে কেন্দ্র করে আড়ত থেকেই বেশি দামে খেজুর কিনে আনতে হয়েছে।
এদিকে মরিয়ম খেজুরের আধা কেজির দেশীয় প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে মাত্র ২০০ টাকায়। স্বচ্ছ প্যাকেটের গায়ে আরবি ও ইংরেজিতে মরিয়ম লেখা থাকলেও দোকানিরা জানান, এটি আসল মরিয়ম নয়। ঢাকা-চট্টগ্রামে খোলা খেজুর প্যাকেটজাত করে মরিয়ম নামে এবারে বাজারে ছেড়েছে। এছাড়া কুমিল্লার অধিকাংশ ফল দোকানে গতবারের খেজুর তোলা হয়েছে। নতুন মোড়কে এসব পুরনো খেজুর এবারে রোজাদারদের স্বাস্থ্যহানির কারণ হতে পারে বলে বিশিষ্ট চিকিৎসকরা মন্তব্য করেছেন। রমজান মাসে খেজুরসহ অন্যান্য ফলের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং ভেজালবিরোধী ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার দাবি রোজাদারদের।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নতুন মোড়কে পুরনো খেজুর!
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ