পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের ¯œাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ও ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটারের সদস্য সোহাগী জাহান তনুর শরীরের জামা-কাপড়সহ সাতটি আইটেমের ডিএনএ প্রতিবেদন দ্বিতীয় ময়নাতদন্তকারী মেডিকেল বোর্ডের হাতে। গতকাল বেলা ১২টার দিকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি কুমিল্লার এএসআই মোশাররফ হোসেন মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কামদা প্রসাদ সাহার কাছে ডিএনএ’র পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন। এসময় মেডিকেল বোর্ডের অন্য সদস্যরা উপস্থিত থাকলেও তনুর প্রথম ময়না তদন্তকারী চিকিৎসক শারমিন সুলতানা সাংবাদিকদের উপস্থিতি দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন।
কুমিল্লার অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম জয়নাব বেগম গত রোববার দ্বিতীয় ময়নাতদন্তকারী মেডিকেল বোর্ডকে ডিএনএ’র পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেয়ার জন্য সিআইডিকে আদেশ দেন। আদালতের ওই আদেশের প্রেক্ষিতে গতকাল বেলা ১২টায় সিআইডির পক্ষ থেকে মেডিকেল বোর্ডকে তনুর ডিএনএ প্রতিবেদন দেয়া হয়। প্রতিবেদন পাওয়ার পর মেডিকেল বোর্ডের প্রধান কামদা প্রসাদ সাহা (কেপি সাহা) সাংবাদিকদের জানান, ‘তনুর পূর্ণাঙ্গ ডিএনএ প্রতিবেদন আমরা হাতে পেয়েছি। ডিএনএ প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে রোববারের মধ্যে দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দিতে পারব বলে আশা করছি।’ এদিকে ডিএনএ প্রতিবেদন সম্বলিত খাম হস্তান্তরের সময় ডা. কেপি সাহার অফিস কক্ষে বসা তনুর প্রথম ময়না তদন্তকারী চিকিৎসক শারমিন সুলতানা সাংবাদিকদের দেখে তেলে-বেগুনে জ্বলে ওঠেন। ডা. শারমিন উপস্থিত সাংবাদিকদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন এবং অফিস কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। ডা. শারমিনের এমন আচরণে বিস্মিত হয়ে পড়েন ডা. কেপি সাহা। তিনি ডা. শারমিনের আচরণের জন্য সাংবাদিকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন এবং ডা. শারমিনকে মানসিকভাবে বিপদগ্রস্ত বলে মন্তব্য করেন।
গত ২৯ মে তনুর ভেজাইনাল সোয়াব ও দাঁতের ডিএনএ প্রতিবেদন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে হস্তান্তর করতে সিআইডিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন কুমিলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মুস্তাইন বিল্লা। কিন্তু তনুর ভেজাইনাল সোয়াব, অন্তর্বাস, শরীরের অংশবিশেষ, কাপড়, চুলসহ ভিন্ন ভিন্ন ডিএনএ প্রতিবেদন একসঙ্গে সন্নিবেশ থাকায় আলাদাভাবে দেয়ার সুযোগ নেই এবং পুরো প্রতিবেদনই ফরেনসিক বিভাগে সরবরাহ করার বিষয়ে আদালতে যৌক্তিকতা তুলে ধরে সিআইডি। গত রোববার কুমিল্লার অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম জয়নাব বেগমের আদালত সিআইডির যৌক্তিকতার প্রেক্ষিতে তনুর পূর্ণাঙ্গ ডিএনএ প্রতিবেদন দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত মেডিকেল বোর্ডকে সরবরাহ করার নির্দেশ দেয়।
উল্লেখ্য, গত ২০ মার্চ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্রী সোহাগী জাহান তনুর লাশ রাত ১০টার দিকে তার বাড়ির কাছাকাছি কুমিল্লা সেনানিবাসের আবাসিক এলাকা পাওয়ার হাউজের জঙ্গল থেকে তার বাবা ইয়ার হোসেন ও প্রতিবেশী এক শিক্ষকসহ উদ্ধার করেন। ২১ মার্চ তনুর লাশের ময়না তদন্ত সম্পন্ন হয়। তাড়াহুড়া করে দেয়া হয় ময়না তদন্তের রিপোর্ট। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক শারমিন সুলতানা প্রথম ময়না তদন্তের রিপোর্টে উল্লেখ করেন ধর্ষণের আলামত ও মৃত্যুর সুনির্দিষ্ট কারণ নেই। ৩০ মার্চ দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের জন্য তনুর লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়। প্রায় ৬৭ দিন গড়ালেও ডিএনএ প্রতিবেদন না পাওয়ার অজুহাতে দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত রিপোর্ট দিতে সময় ক্ষেপণ করে ডা. কেপি সাহার নেতৃত্বাধীন মেডিকেল বোর্ড।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।