Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দক্ষিণাঞ্চলে যাতায়াত করবে দশ লাখ যাত্রী

বিআইব্লিউটিসির উদাসীনতায় দুর্ভোগের আশঙ্কা : অতিরিক্ত ভাড়া আদায়

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ৪ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০১ এএম

ঈদুল আজহার আগে ও পরে রাজধানী ঢাকাসহ চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে অন্তত দশ লাখ মানুষ দক্ষিণাঞ্চলে যাতায়াত করার কথা। কিন্তু সরকারি নৌ পরিবহন ব্যবস্থা হতাশাব্যাঞ্জক। বেসরকারি নৌযানগুলো ৮ আগস্ট থেকে বিশেষ সার্ভিস পরিচালনা করবে। ৯ আগস্ট থেকে অন্তত ২০টি নৌযান ঢাকা-বরিশাল নৌপথে প্রতিদিন ডবল ট্রিপে যাত্রী পরিবহন করবে।

এসময়ে রাজধানী থেকে দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় ৩০টি রুটে দেড়শ’ নৌযান যাত্রী পরিবহন করবে। এরমধ্যে ঢাকা-বরিশাল নৌপথে ২০টি এবং ঢাকা-ভোলা ও ঢাকা-পটুয়াখালী নৌপথে আরো অন্তত ১০টি নৌযান প্রতিদিন ডবল ট্রিপে অন্তত দেড় লাখ করে যাত্রী বহন করবে। এরপরেও একটি কেবিন টিকেটের জন্য যাত্রীরা বিভিন্ন নৌযান কোম্পানীর অফিসে ধর্ণা দিচ্ছেন। ২৮০ ফুট থেকে সোয়া ৩শ’ ফুট দৈর্ঘ্যরে এসব নৌযানে অনুমোদিত যাত্রীবহন ক্ষমতা ১ হাজার থেকে সাড়ে ১২শ’ পর্যন্ত। এছাড়াও প্রতিটি নৌযানে ১শ’ টন থেকে দেড়শ’ টন পর্যন্ত পণ্য পরিবহনের অনুমতি রয়েছে। কিন্তু ঈদের আগে পরে সবগুলো নৌযানই পণ্য পরিবহনের পরিবর্তে যাত্রী বহন করে। ফলে নৌযানগুলোর লোডলাইন সীমা অনুযায়ী ধারণক্ষমতার দ্বিগুনেরও বেশি যাত্রী বহনের ক্ষমতা থাকছে। কিন্তু বাস্তবে প্রায় প্রতিটি নৌযানেই এসময় ৩-৪ গুন পর্যন্ত যাত্রী বহন করে।

ঈদের আগে পরে চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে সড়ক পথে লক্ষীপুর হয়ে নৌপথে সরাসরি বরিশাল ছাড়াও ভোলা হয়েও লক্ষাধিক যাত্রী যাতায়াত করবে। এছাড়াও চট্টগ্রাম থেকে সড়ক ও রেল পথে চাঁদপুর হয়ে নৌপথে দক্ষিণাঞ্চলে যাতায়াত করবে বিপুল সংখ্যক যাত্রী। সড়ক পথে ঢাকা থেকে প্রতিদিন গড়ে ২শ’ যাত্রীবাহী বাস দক্ষিণাঞ্চলে যাত্রী পরিবহন করবে। এছাড়াও সাতক্ষীরা, বেনাপোল, যশোর, খুলনা ও উত্তরাঞ্চল থেকে আরো শতাধিক বাস প্রতিদিন যাত্রী পরিবহন করবে। আকাশ পথে নিয়মিত ফ্লাইটের অতিরিক্ত বেসরকারি নভো এয়ার ৩টি এবং বিমান ১টি ফ্লাইট পরিচালনার কথা জানিয়েছে।
তবে ঈদকে সামনে রেখে বেসরকারি নৌযান ছাড়াও আকাশ পথে সরকারি-বেসরকারি সব এয়ারলাইন্সই খেয়াল খুশিমত ভাড়া আদায় করছে। ঈদের আগের তিন দিন ঢাকা-বরিশাল এবং ঈদের পরে ৭ দিন বরিশাল-ঢাকা আকাশ পথে ২ হাজার ৭শ’ টাকার ভাড়া ৭ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করছে এয়ারলাইন্সগুলো। এক্ষেত্রে বেসরকারি নৌযান মালিকদের দাবি, সারা বছরই তারা মন্ত্রণালয় নির্ধারিত ভাড়ার কমে যাত্রী পরিবহন করে থাকেন। ঈদের সময় তা কিছুটা পুশিয়ে নিতে সরকার নির্ধারিত ভাড়াই আদায় করেন। তবে যাত্রী সাধারণের অভিযোগ, সরকারি নৌযানের অভাবেই বেসরকারি নৌযানে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়সহ ওভারলোডিং হয়ে থাকে।
এদিকে এবারের ঈদেও বরিশাল-চট্টগ্রাম রুটে উপক‚লীয় স্টিমার সার্ভিস পুনর্বহাল হচ্ছে না। অথচ এ রুটের জন্য প্রায় ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি পুরনো জাহাজের পাশাপাশি নতুন একটি নৌযান সংগ্রহে বিআইডব্লিউটিসিকে আর্থিক সহায়তা দেয় সরকার। বরিশাল-লক্ষীপুর রুটে সি-ট্রাক সার্ভিসটিও গত বছর থেকে বন্ধ রয়েছে। এরফলে চট্টগ্রাম অঞ্চলের যাত্রীদের সড়ক পথে লক্ষীপুর এসে সেখান থেকে নৌযানে বরিশালে পৌঁছার পথও রুদ্ধ হয়ে গেছে।

প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত ঢাকা-বরিশাল-খুলনা রকেট স্টিমার সার্ভিসটি আবারো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। মংলা-ঘাশিয়াখালী চ্যানেলটি উন্নয়নের পরে ২০১৬ সালে সপ্তাহে একদিন করে ঢাকা থেকে বরিশাল হয়ে খুলনা পর্যন্ত রকেট স্টিমার সার্ভিসটি পুনর্বহাল করা হয়েছিল। অভিযোগ রয়েছে, নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের অভাবে সংস্থার নতুন পুরনো সবগুলো নৌযানেরই জীর্ণ দশা। অথচ এসব নৌযানের মেরামতের নামে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা ব্যয় দেখানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

সংস্থার নিয়মিত নৌযানগুলো সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এবং বিশেষ সার্ভিসগুলো সন্ধ্যা ৭টায় ঢাকা থেকে ছাড়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যা মোটেই যাত্রীবান্ধব নয় বলে অভিযোগ উঠেছে ইতোমধ্যে। অন্তত আরো এক ঘণ্টা পরে ঢাকা থেকে ছাড়ার ব্যবস্থা করার দাবি যাত্রীদের।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঈদুল আজহা

৯ জুলাই, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ