Inqilab Logo

বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মুদ্রানীতি বেসরকারি বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত করবে- এফবিসিসিআই

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩ আগস্ট, ২০১৯, ৭:৫১ পিএম

২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য ঘোষিত মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা কমানো হয়েছে। এটি এ খাতের ঋণপ্রবাহ নিরুৎসাহিত ও বাধাগ্রস্ত করবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। মুদ্রানীতি নিয়ে শনিবার (৩ আগস্ট) এক প্রতিক্রিয়ায় সংগঠনটির পক্ষ থেকে এ আশঙ্কার কথা জানানো হয়েছে।

মূল্যস্ফীতি নিম্নমুখী রেখে উচ্চতর হারে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জনের ওপর গুরুত্বারোপ করে ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য গত বুধবার মুদ্রানীতি ঘোষণা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। অর্থবছরের সঙ্গে মিল রেখে একবছর মেয়াদি মুদ্রানীতি প্রণীত হওয়ায় মুদ্রানীতি এবং বাজেট ও রাজস্ব নীতির মধ্যে সমন্বয় থাকবে। তাই উচ্চতর প্রবৃদ্ধিকে ধরে রাখতে ব্যবসাবান্ধব মুদ্রানীতি ও ব্যাংকিং ব্যবস্থা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে এফবিসিসিআই।

এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, ঘোষিত মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ। আগের অর্থবছরে এ খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি নির্ধারিত ছিল ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ। উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জনে ব্যাপক বিনিয়োগ প্রয়োজন। সহজলভ্য ঋণ প্রবাহ ছাড়া কাঙ্খিত বিনিয়োগ ও শিল্পায়ন সম্ভব নয়। বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে দেয়ায় এ খাতে ঋণপ্রবাহ সংকুচিত হতে পারে, যা বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত ও বাধাগ্রস্ত করবে। বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হলেও বিনিয়োগের স্বার্থে এ খাতে ঋণ প্রবাহের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা হ্রাস করা সঙ্গত নয় বলে এফবিসিসিআই মনে করে।

অন্যদিকে ঘোষিত মুদ্রানীতিতে সরকারি খাতে ঋণপ্রবাহের লক্ষ্যমাত্রা বৃদ্ধি করে ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ করা হয়েছে; যেখানে গত অর্থবছরে এ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ৯ শতাংশ। সরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ বৃদ্ধি করায় তা বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহের ক্ষেত্রে চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এতে উৎপাদনশীল খাত বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বেসরকারি খাতের জন্য এফবিসিসিআই ঋণের উচ্চতর প্রবৃদ্ধি সংকুলানের সুযোগ রাখার আহŸান জানাচ্ছে।

ঘোষিত মুদ্রানীতি যথাযথভাবে বাস্তবায়নে মনিটরিং জোরদার করারও দাবি জ‌ানিয়েছে এফবিসিসিআই।

জাতীয় উচ্চতর প্রবৃদ্ধিকে আরও গতিশীল করতে সব ব্যাংকে এক অঙ্কের (সিঙ্গেল ডিজিট) সুদহার নিশ্চিত করা প্রয়োজন বলে এফবিসিসিআই মনে করে। এখনও প্রায় সব বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান সুদের হার এক অঙ্কের উপরে রয়েছে। এফবিসিসিআই মনে করে, শিল্পায়নের স্বার্থে সব বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান তাদের ঋণের সুদের হার অবিলম্বে এক অঙ্কে নামিয়ে আনবে।

ব্যাংকিং খাতে নন-পারফর্মিং লোন বা খেলাপি ঋণের বিষয়টি একটি সংবেদনশীল ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, দীর্ঘদিন ধরে এ দুর্বিসহ বোঝা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অন্তরায় হিসেবে কাজ করছে। ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে আরও দক্ষ এবং বিনিয়োগবান্ধব করতে খেলাপি ঋণ কমানোর প্রচেষ্টা আরও বাড়াতে হবে। এ জন্য ব্যাংকগুলোর ঝুঁকি ব্যবস্থাপনাকে আরও জোরদার করা প্রয়োজন।

সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নপূরণের ধারাবাহিকতায় দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজড এবং পেপারলেস ব্যাংকিং কার্যক্রমে নিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে স্বচ্ছ, যুগোপযোগী ও আধুনিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মনিটরিং ও সুপারভিশনকে আরও নিবিড় ও জোরদার করার দাবি জানিয়েছে এফবিসিসিআই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: এফবিসিসিআই


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ