Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এডিস মশা নির্মূলে ‘ত্রুটিপূর্ণ’ কার্যক্রম সিটি কর্পোরেশনের

বাসাবাড়ির চেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ পরিবহন পুল অফিস আদালত ও নার্সারি

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০০ এএম

রাজধানীসহ দেশের ৬৪ জেলায় ছড়িয়ে পড়ছে ডেঙ্গু। সব বয়সি মানুষই এখন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এ মশা কেমন, কয়দিন বাঁচে, কোথায় থাকে, কখন কামড়ায়, এ থেকে পরিত্রাণের উপায় কি-এসব নিয়ে মানুষের এখন ব্যাপক কৌতুহল।

জানা গেছে, ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশা নির্মূল ও প্রতিরোধে ‘ত্রুটিপূর্ণ কার্যক্রম’ পরিচালনা করেছে সিটি করপোরেশন। এতদিন মনে করা হতো বাসাবাড়িতেই এডিস মশার জন্ম বেশি। তাই বাসাবাড়ির আশপাশেই মশার ওষুধ বেশি ছিটানোতে অধিক গুরুত্ব দেয়া হতো। কিন্তু বাসাবাড়ির চেয়ে অন্য স্থানে এডিস মশার প্রকোপ বেশি হয় বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক কার্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ ভারতীয় নাগরিক বিএন নাগপাল গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের সভাপতিত্বে সভায় এডিস মশা দমনে করণীয়, বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে অবস্থান ও মশা নির্মূলে করণীয় সম্পর্কে নতুন তথ্য তুলে ধরেন।

বৈঠকে উপস্থিত স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. আবুল কালাম আজাদ ওই বিশেষজ্ঞের বরাত দিয়ে জানান, বাসাবাড়ির চেয়ে অন্য স্থান যেমন সরকারি পরিবহন পুল, থানার পরিত্যক্ত যানবাহন, নার্সারি, হাসপাতালের বাইরে ফেলে দেয়া কাঁচ ও প্লাস্টিকের বোতল, অফিস আদালতের বাইরে ফেলে থাকা আসবাবপত্র, বড় বড় নির্মাণাধীন ভবনে পরিত্যক্ত গাড়ির চাকার টায়ার টিউবসহ অন্য ব্যবহার্য পরিত্যক্ত দ্রব্য সামগ্রীতে এডিস মশা বংশ বিস্তার ঘটায়। তাই বাসাবাড়ির চেয়ে এ সব জায়গায় মশক নিধন বেশি জরুরি জানিয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কার্যক্রম পরিচালনার পরামর্শ দেন তিনি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এডিস মশা দিনের বেলায় কামড়ায়। এ মশা থাকে টেবিল, চেয়ার ও খাটের নীচে। তাই দেয়ালের মধ্যে মশার ওষুধ স্প্রে করলে মশা মরবে না, ঘরের দরজা ও জানালা বন্ধ করে বেশি করে মশার ওষুধ ছিটাতে হবে। বাইরে স্প্রে করলে ঘরের ভেতর কাজ করবে না। যে সব জায়গায় অনেকদিন ধরে পানি মজুদ থাকে ( যেমন ওয়াটার ট্যাংকি) সে সব জায়গায় ‘টেমেফস’ নামক এক ধরনের লিকুইড ওষুধের বদলে দানা ব্যবহার করতে হবে। লিকুইড ছিটালে সেই ওষুধের কার্যকারিতা সাতদিন ও দানা ব্যবহার করলে ২১ দিন থাকে। সিটি করপোরেশন এতদিন দানা কিনে আনতে পারত না। দানা কেনার বাধা দূর হয়েছে।

যেখানে দিনের বেলায় লোক সমাগম বেশি থাকে যেমন অফিস আদালত, হাটবাজার ও স্কুলে এডিস মশা বেশি কামড়ায়। যতক্ষণ পর্যন্ত পেট না ভরবে ততক্ষণ এটি কামড়াবে। একটা এডিস মশা সর্বোচ্চ ১৫ জনকে আর গড়ে পাঁচজনকে কামড়ায়। সব এডিস মশা এমনি ডেঙ্গু ভাইরাস বহন করে না। কিন্তু ডেঙ্গুবাহী এডিস মশার কামড়ে কোনো ব্যক্তি আক্রান্ত হলে সেই ব্যক্তিকে কোনো ভাইরাসমুক্ত এডিস মশা কামড়ালে সেই মশার মধ্যে ভাইরাস সংক্রমিত হবে। ওই মশা যে ডিম পাড়বে তা ফুটে বাচ্চা বের হলে শতকরা ৬০ ভাগের মধ্যে ডেঙ্গু ভাইরাস থাকবে। অন্য মশার ক্ষেত্রে এমনটা হয় না। কোনো ব্যক্তিকে কামড়ানোর পর সেই মশা আবার অন্য কাউকে কামড়ালে সেই ব্যক্তির ডেঙ্গু হতে পারে। এ কারণেই বর্তমান সময়ে বেশি লোক ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে।

একটি এডিস মশা ১০০টি ডিম পাড়ে। পুরুষ মশা ১০ দিন বাঁচে আর স্ত্রী মশা বাঁচে ৩০ দিন। সংখ্যায় সামান্য হলেও মশার বংশবৃদ্ধি দ্রুত হয়। স্বাস্থ্য মহাপরিচালক বলেন, শুধুমাত্র মশার ওষুধ ছিটালেই হবে না। বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী মশার ওষুধ জায়গামতো ছিটাতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ডেঙ্গু

২৭ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ