পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, জঙ্গিগোষ্ঠী দেশকে অস্থিতিশীল করতে এ ধরনের টার্গেট কিলিং চালিয়ে যাচ্ছে। এদের বিদেশী গোয়েন্দা সংস্থা ও দেশের একটি গোষ্ঠী মদদ দিচ্ছে। গতকাল সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
কোন গোষ্ঠী মদদ দিচ্ছে, তা জানতে চাইলে সাংবাদিকদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এরই মধ্যে একটি দলের একজন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’ তবে এ বিষয়ে এর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।
সম্প্রতি দেশে ঘটে যাওয়া বেশ কিছু হত্যাকা-ের দায় স্বীকার করে ইসলামিক স্টেটের দেয়া বক্তব্য প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে আইএসের অস্তিত্ব নেই। দেশে এখন যে ধরনের টার্গেট কিলিং হচ্ছে, তেমনটি যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নত বিশ্বের দেশেও হচ্ছে। সেখানে এগুলো এখন আর অস্বাভাবিক ঘটনা নয়।
তিনি বলেন, যেসব হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটছে, সেগুলো সবই টার্গেট কিলিং। এ সব করা হচ্ছে পুলিশের মনোবল ভেঙ্গে দেয়ার জন্য। দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং মানুষ নিরাপদে আছে।
মন্ত্রী বলেন, দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য ঠিকমতো চলছে, মানুষ ঠিকমতো ঘুমাচ্ছে। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘জঙ্গি দমনে পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার উল্লেখযোগ্য এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন। আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, এ জন্যই তার স্ত্রীকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। হত্যাকা-ে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়েছে। শিগগিরই হত্যাকারীরা শনাক্ত হবে এবং ধরা পড়বে বলে আমরা আশা করছি।’
পুলিশের প্রতিটি বিভাগ, গোয়েন্দা সংস্থা এ ঘটনাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে বলে জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, দেশের উন্নয়ন স্বাভাবিক আছে, জনগণের জানমালের নিরাপত্তা আছে, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিও স্বাভাবিক আছে। এই শান্তিপূর্ণ অবস্থাকে বিশৃঙ্খলার দিকে নেয়ার জন্য এ ধরনের ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। প্রতিটি হত্যাকা-ের ক্লু উদ্ঘাটিত হবে।
আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, একই ধরনের ৩৬টি হত্যাকা-ের মধ্যে ৩৫টির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করা গেছে। এর মধ্যে তিনটি হত্যাকা-ের বিচার নিষ্পত্তি হয়েছে। আরো ছয়টি হত্যার ঘটনায় আদালতে অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে। এই ৩৫টি ঘটনার জন্য মোট ৪৯ জন হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। কাজেই হত্যাকারী যেই হোক, তাদের ধরে ফেলতে পারবেন।
হত্যাকারীরা নতুন নতুন কৌশল অবলম্বন করছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তারা যে পুলিশ কর্মকর্তার পরিবারকে টার্গেট করবে, এটা আমাদের ধারণা ছিল না। তবে তারা যত কৌশলই অবলম্বন করুক, রেহাই পাবে না।
মোটরসাইকেলে তিনজন ওঠার ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি এখন আরো কঠোরভাবে তদারক করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী।
অন্যদিকে গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদে একাদশ অধিবেশনের প্রশ্নোত্তর পর্বে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য নূরজাহান বেগমের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বর্তমান সরকার দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় বদ্ধপরিকর। দুষ্কৃতকারী ও সন্ত্রাসীরা বিস্ফোরক দ্রব্য ব্যবহার করে যাতে নাশকতামূলক কর্মকা- না ঘটাতে পারে, সেজন্য দেশের সব থানায় এলাকায় নিয়মিত তল্লাশি এবং সন্দেহভাজন লোকদের গতিবিধির প্রতি গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলার উন্নয়নে সরকার আন্তরিক ও নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে সরকার পুলিশ বাহিনীর জনবল বৃদ্ধিসহ পরিবহন ও অন্যান্য লজিস্টিকস বৃদ্ধি করেছে। অপরাধীদের গ্রেপ্তারপূর্ব আইনের আওতায় আনার জন্য নিয়মিতভাবে পুলিশি অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
মন্ত্রী আরও জানান, দুষ্কৃতকারীরা যাতে নাশকতামূলক কর্মকা- ঘটাতে না পারে, সেজন্য দেশের সব থানা এলাকার মেস, ভাড়া ঘর, আবাসিক হোটেল ও বাসস্ট্যান্ডসমূহে নিয়মিত তল্লাশি ও সন্দেহভাজন লোকদের গতিবিধির প্রতি গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত আছে। সেইসঙ্গে তাদের কার্যক্রম সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের জন্য গোয়েন্দা সংস্থাকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
সরকারী দলের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিনের অপর এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশি হত্যাকা- বন্ধের ব্যাপারে বাংলাদেশের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দুইদেশের সীমান্ত রক্ষা বাহিনীর সর্বোচ্চ নেতৃত্ব পর্যায়ে আলোচনা হয়ে থাকে। ভারতের সরকার সীমান্তে হত্যাকা- বন্ধ করতে যাবতীয় ব্যবস্থা নেয়ার ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছে। ইতোমধ্যে বিসিএফ প্রাণঘাতী মারণাস্ত্র ব্যবহারের পরিবর্তে নন-লেথাল উইপন (অস্ত্র) ব্যবহার করছে।
মন্ত্রীর দেয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০০৬ সালে যেখানে সীমান্তে ১০৬ বাংলাদেশী নিহত হয়েছিল, ২০১৫ সালে তা নেমে ৪৫ জনে দাঁড়িয়েছে। চলতি বছরের ২৯ মে পর্যন্ত সীমান্তে বিএসএফের হাতে ৮ বাংলাদেশী নিহত হয়েছে। এই পরিসংখ্যান তুলে ধরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পরিসংখ্যানটি পর্যালোচনা করলে সহজেই প্রতীয়মাণ হয় যে, সীমান্তে বাংলাদেশী নাগরিকদের হত্যাকা- পূর্বের তুলনায় ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে। আশা করা যায়, আগামী দিনগুলোতে তা আরও হ্রাস পাবে।
জাতীয় পার্টির সালমা ইসলামের প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার নিয়ন্ত্রণে মাদক অপরাধের প্রকৃতির ভিত্তিতে কঠোর হতে কঠোরতর পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। মাদকের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিকে লালন করে কাজ করে যাচ্ছেন। সীমান্ত এলাকা এবং অধিক মাদকপ্রবণ এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।