পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীসহ সারাদেশে স্ফুলিঙ্গের মতো ছড়িয়ে পড়ছে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগ। এ মাসের শুরুতে অর্থাৎ ১ জুলাই পর্যন্ত সারাদেশের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছিল মাত্র ৯২ জন। কিন্তু ২৯ দিনের ব্যবধানে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৩৫ জনে।
অর্থাৎ গত ২৪ ঘণ্টায় প্রতি মিনিটেই একজন করে ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এতদিন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী শুধু রাজধানীতে সীমাবদ্ধ থাকলেও কয়েক সপ্তাহ ধরে ঢাকা বিভাগসহ অন্যান্য বিভাগের প্রায় সব জেলায় ছড়িয়ে পড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বিভিন্ন জেলায় হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন ৩৬১ জন।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে আজ ৩০ জুলাই পর্যন্ত সারাদেশের হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ১৫ হাজার ৩৬৯ জন। এর মধ্যে চলতি মাসেই আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ হাজার ১৮২ জন। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ইতোমধ্যে চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল ত্যাগ করেছেন ১০ হাজার ৯৫৩ জন।
এদিকে সরকারি রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) হিসাবে, ডেঙ্গু রোগে মৃত রোগীর সংখ্যা মাত্র আটজন বলা হলেও, বেসরকারি হিসাবে এ সংখ্যা পাঁচ গুণেরও বেশি। আজও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একজন উপসচিবের স্ত্রীসহ দুজন ডেঙ্গু রোগী মারা গেছেন। ডেঙ্গু আশঙ্কায় সরকারি বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে এখন শত শত রোগীর লম্বা লাইন দেখা যাচ্ছে।
হঠাৎ ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে জায়গা সঙ্কট দেখা দিয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে শয্যা খালি নেই দোহাই দিয়ে রোগীদের ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে। সরকারি হাসপাতাল থেকে ফেরত না দিলেও, সেখানে শয্যার অভাবে রোগীদের ঠাঁই হচ্ছে ওয়ার্ডের ফ্লোর, বারান্দা, গলিপথ এমনকি সিঁড়ি কোটায়।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেল্থ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তারের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল মিলিয়ে চিকিৎসাধীন মোট ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৪ হাজার ৪০৮ জন।
এদিকে আজ (মঙ্গলবার) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ভাইরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সাইফ উল্লাহ মুন্সী ডেঙ্গু-সংক্রান্ত এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশকালে বলেন, গত কয়েক বছরের গবেষণালব্ধ তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, আগস্টে ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দেশের সিনিয়র এক রোগতত্ত্ববিদ বলেন, ডেঙ্গুর এ পরিস্থিতি কিন্তু একদিনে হয়নি। স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে যদিও বলা হচ্ছে, ঢাকা শহর থেকে ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে ঢাকার বাইরে রোগীরা ভর্তি হচ্ছেন। কিন্তু বাস্তবে তা নয়। ঢাকার বাইরে ডেঙ্গুবাহী এডিস মশার বংশ বিস্তার হয়েছে। অনেক দিন ধরে এডিস মশা থাকলেও তা নিয়ে গবেষণা না হওয়ায় তা প্রকাশ্যে আসেনি বলে এই কর্মকর্তা মন্তব্য করেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু জ্বরে মোট আক্রান্ত এক হাজার ৩৩৫ জনের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২২১, মিটফোর্ড হাসপাতালে ১০৫, ঢাকা শিশু হাসপাতালে ৪৮, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ৬১, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ৪২, বারডেম হাসপাতালে ১৭, বিএসএমএমইউতে ২৬, পুলিশ হাসপাতাল, রাজারবাগে ৩৩, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৬৩, বিজিবি হাসপাতাল, পিলখানায় ২ এবং কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ৯০ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন।
এছাড়া বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ২৬৫ জন ভর্তি হন। ঢাকা শহর ছাড়া ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ১০৪ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৫৫ জন, খুলনা বিভাগে ৫৬, রংপুর বিভাগে ২০, রাজশাহী বিভাগে ৫৬, বরিশাল বিভাগে ছয়, সিলেট বিভাগে ৫৫ ও ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৯ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেল্থ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা গেছে, রাজধানী ঢাকার বাইরে এখন পর্যন্ত এক হাজার ৮৪৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। অবশ্য অনেক রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।