পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
তৈরী পোশাক শিল্পের প্রসারের লক্ষ্যে এ খাতে ভবনের অগ্নি নির্বাপণ, কর্মপরিবেশ উন্নয়ন, শ্রমিকের নিরাপত্তা এবং সর্বোপরি পরিবেশ বান্ধব বা নিরাপত্তা জোরদারে বিনিয়োগের জন্য উন্নয়ন সহযোগীদের সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এজেন্সি ফ্রাঞ্চাইজ ডেভলপমেন্টের (এএফডি) ৫০ মিলিয়ন ইউরো ঋণ ও ইউ, কেএফডব্লিউ এবং জিআইজেড প্রদত্ত অনুদান ও বাংলাদেশ ব্যাংক প্রদত্ত তহবিলসহ মোট ১৪ দশমিক ২৯ মিলিয়ন ইউরোর সমন্বয়ে এসএমই এন্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস ডিপার্টমেন্টের অধীনে বাস্তবায়িত প্রোগ্রাম টু সাপোর্ট সেফটি রেট্রোফিটস এন্ড এনভায়রনমেন্টাল আপগ্রেডস ইন দি বাংলাদেশী রেডি-মেড গার্মেন্টস (আরএমজি) সেক্টর প্রজেক্ট (এসআরইইউপি) প্রকল্পটির পিএআই স্বাক্ষর অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকে এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস এম মনিরুজ্জামান, প্রকল্প পরিচালক মো. আব্দুল মান্নান সহ প্রকল্প কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এ প্রকল্পের আওতায় প্রাক-অর্থায়ন সুবিধা গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক নির্বাচিত পার্টিসিপেটিং ফিনান্সিয়াল ইন্সটিটিউশন হিসেবে পাঁচটি ব্যাংক তথা সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেড, ওয়ান ব্যাংক লিমিটেড, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড, ব্যাংক এশিয়া লিমিটেড ও ন্যাশনাল ক্রেডিট এন্ড কমার্স ব্যাংক লিমিটেড (এন সি সি ব্যাংক) এবং দুইটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেড ও আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেড এর সাথে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম কামাল হোসেন এবং আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম জামালউদ্দিন বক্তব্য রাখেন। ডেপুটি গভর্নর এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, স্বল্প সুদের হার এবং আর্থিক প্রণোদনার ভিত্তিতে এ প্রকল্পটি একটি ইউনিক প্রকল্প। গ্রাহক পর্যায়ে স্বল্প সুদে (৭ শতাংশ) ঋণ দানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক হতে যথাযথ সময়ে প্রকল্পটির প্রাক-অর্থায়ন সুবিধা প্রদান করা হবে। তিনি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে তৈরী পোশাক শিল্প কারখানা সমূহে ঋণ প্রদান ও যথাযথ মনিটরিং এর দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি আশা করেন এই প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের তৈরী পোশাক রপ্তানী খাত আরও গতিশীলতা অর্জন করবে। এর মাধ্যমে এ খাতের শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং এ খাতের শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে পরিবেশ বান্ধব করে গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
তৈরী পোশাক শিল্প কারখানার মালিকগণ এ্যাকর্ড, এ্যালায়েন্স ও এনটিপিএ উল্লেখিত কমপ্লায়েন্সজনিত বিষয়ে ভবনের বৈদ্যুতিক সংযোগ, অগ্নি নির্বাপণ ও কাঠামোগত সংস্কারসহ কর্মপরিবেশ উন্নয়ন, শ্রমিকের নিরাপত্তা এবং সর্বোপরি পরিবেশ-বান্ধব বা নিরাপত্তা জোরদার বিষয়ক বিনিয়োগের জন্য এ প্রকল্পের আওতায় নির্বাচিত পার্টিসিপেটিং ফিনান্সিয়াল ইন্সটিটিউশন (পিএফআই)-এর মাধ্যমে ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন। প্রকল্পটির গ্রাহক পর্যায়ে প্রতিষ্ঠানসমূহ সর্বোচ্চ আরোপিত সুদ ৭ শতাংশ হারে ঋণ গ্রহণ করতে পারবে। এছাড়া, ঋণের যথাযথ ব্যবহারকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ঋণপ্রস্তাব অনুযায়ী যথাযথভাবে কার্যসম্পাদনের সাপেক্ষে ঋণ গ্রহণকারী তৈরী পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে নির্দিষ্ট আনুপাতিক হারে আর্থিক প্রনোদনা দেয়া হবে।
এছাড়া, তৈরী পোশাক খাতের প্রতিষ্ঠানসমূহকে নিরাপত্তা ও পরিবেশ বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং প্রকল্পের আওতায় ঋণ প্রস্তাব তৈরীর জন্য প্রয়োজনীয় কারিগরী সহায়তা প্রদান এবং প্রকল্প সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রতিনিধিদের সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সংশ্লিষ্ট বিষয় এর উপর প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। ফলশ্রুতিতে, এ খাতের টেকসই উন্নয়ন ঘটবে যা প্রতিযোগিতামূলক বাজার ব্যবস্থায় বাংলাদেশের তৈরী পোশাক খাতের সম্ভাবনাকে আরও বেগবান ও টেকসই করবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।