পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ডেঙ্গুর জীবানু বাহক এডিস মশা নির্মূলে ঢাকায় বসবাসকারীদের আগামী শুক্রবার জুমার পরে নিজেদের বেসিনে ৫০০ এমএল হারপিক কিংবা ব্লিচিং পাউডার ঢেলে পানি দিয়ে দেয়ার মত একটি তথ্য সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
বার্তাটিতে দাবি করা হয়েছে, "এতে করে ঢাকা শহরের ৭০ ভাগ ড্রেন, ডোবা-নালাসহ মশার ডিম পাড়ার পানির উৎসে থাকা মশা এবং লার্ভা ধ্বংস হয়ে যাবে"।
এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশেষ করে ফেসবুকে বেশ বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
অনেকেই এটা জানিয়ে পোস্ট দিয়েছেন নিজেদের ফেসবুক টাইমলাইনে। অনেকেই আবার বিষয়টি নিয়ে সতর্ক করে এর বিকল্প পোস্ট দিচ্ছেন।
ফেসবুক ব্যবহারকারী জিয়া চৌধুরী তার পোস্টে হারপিকের পরিবর্তে বাড়ির চারপাশের আবর্জনা পরিষ্কার, জমে থাকা পানি সরিয়ে ফেলা এবং ব্যক্তি উদ্যোগে মশা মারার ওষুধ স্প্রে করার আহ্বান জানিয়েছেন।
আরেক ব্যবহারকারী মো: রফিকুল হক মিরাজ এক কমেন্টে লিখেছেন, "হারপিকে ডেঙ্গু মরলেও ডেঙ্গু তো বেসিনে জন্মায় না বা চলমান পানির ড্রেনে থাকে না।"
লিনা দিলরুবা শারমীন তার ফেসবুক পোস্টে বলেছেন, "ডেঙ্গু মশা জন্মানোর সুযোগ করে দেয়া ছাড়াও পানির অনেক ব্যবহার আছে। দয়া করে হারপিক আর গুঁড়ো সাবান দিয়ে জলজ উদ্ভিদ এবং প্রাণীগুলোকে মেরে ফেলেন না। নিজেও মারেন না।"
এদিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার সিকিউরিটি''র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকেও বিষয়টিকে গুজব বলে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
বেসিনে হারপিক বা ব্লিচিং পাউডারে ডেঙ্গু মশা নিমূর্ল হবে?
কীটতত্ত্ববিদ তাহমিনা আক্তার বিবিসি বাংলাকে বলেন, "এটা তো ড্রেনেই চলে যাচ্ছে, এতে লাভ কোথায়? ডেঙ্গু মশা পরিষ্কার পানিতে হয়। ড্রেনের পানির মধ্যে ডেঙ্গু মশা কমই থাকে।"
চলমান পানিতে মশার লার্ভা থাকে না। সেগুলো চলেই যায় বলে তিনি জানান।
"এই হারপিক দিয়ে আসলে কোন লাভ হবে না। পানি যদি পুরাটাই দূষণ করে ফেলা যায় তাহলে ভিন্ন কথা। তবে পানিও নষ্ট হয়ে যাবে। আর হারপিক বা ব্লিচিং তো বেশ ব্যয়বহুল।"
তিনি বলেন, "যারা হারপিক ঢালতে চায় তারা সেটা না করে বরং বিল্ডিংয়ের চতুর্দিকে যে কার্নিশের ভাঙা অংশ এবং এগুলোর উপরে যদি পলিথিনে পানি জমে থাকে তাহলে সেগুলো পরিষ্কার করা যাতে মশা ডিম পাড়তে না পারে।"
তিনি বলেন, অনেক সময় বাচ্চাদের ফেলে দেয়া চিপসের প্যাকেটে পানি জমে থাকে। এগুলোতে যদি এক সপ্তাহও পার হয় তাহলেও মশা তার জীবনচক্র শেষ করে ফেলতে পারে।
এদিকে, হারপিক ও ব্লিচিং পাউডার বেসিন থেকে ড্রেন এবং শেষমেশ নদী ও জলাশয়ের পানিতে গিয়ে পড়লে সেটিও পরিবেশের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষক ড. মো: খলিলুর রহমান বলেন, এ ধরণের পদার্থ নদী কিংবা জলাশয়ে গেলে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে তার কোন সন্দেহ নাই। এখানকার 'ইকোসিস্টেম নষ্ট হবে'।
বড় ধরণের শিল্প কারখানা বা চামড়া শিল্পের বর্জ্য যেমন পরিবেশ দূষণ করে, এক্ষেত্রেও একই ধরণের প্রভাব পড়তে পারে।
তিনি বলেন, "জলজ পরিবেশ যেমন প্ল্যাঙ্কটন আছে, অন্যান্য জলজ প্রাণী আছে তাদের জীবনযাত্রায় মারাত্মক প্রভাব পড়বে। তাদের অক্সিজেন কমে যেতে পারে, খাবার- দাবারে সমস্যা হতে পারে।"
মিস্টার রহমান সতর্ক করে বলেন, কোন ভাবে যদি এসব দ্রব্য পানি সরবরাহের লাইনে মিশে যায় তাহলে মানব স্বাস্থ্যের উপরও মারাত্মক প্রভাব পড়বে।
তিনি বলেন, "পানির লাইন ডিসরাপটেড হলে হাসপাতালে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না। তখন আর ডেঙ্গু লাগবে না, পচা পানির প্রভাবেই মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হবে, ডায়রিয়ায় ভুগবে।"
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।