পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়েন্ত্রণে দীর্ঘমেয়াদের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করার জন্য ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের প্রতি প্রস্তাব করেছেন ঢাকা থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক, টেলিভিশন চ্যানেল ও অনলাইন সংবাদমাধ্যমের সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিকরা। এডিস মশা নিধন এবং আক্রান্তদের চিকিৎসা ব্যবস্থা সহায়তাসহ পরিস্থিতি মোকাবিলায় এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে গণমাধ্যমের সহযোগিতা চেয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। গতকাল সোমবার রাজধানীর গুলশান ক্লাবে গণমাধ্যমের সম্পাদকদের সঙ্গে ‘ডেঙ্গু মোকাবিলা ও পরিচ্ছন্ন নগরী বিনির্মাণ’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম।
এতে অংশগ্রহণ করেন প্রখ্যাত সাংবাদিক রাহাত খান, প্রখ্যাত সাংবাদিক প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, ডেইলি সান সম্পাদক এনামুল হক চৌধুরী, দৈনিক ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, গাজী টেলিভিশন ও সারাবাংলাডটনেট’র এডিটর ইন চিফ সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, দৈনিক সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি, দৈনিক ইনকিলাবের সিটি এডিটর স্টালিন সরকার, বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর.কম সম্পাদক জুয়েল মাজহার, দৈনিক বণিক বার্তা সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, এবি নিউজ২৪.কম এর সম্পাদক সুভাষ সিংহ রায়সহ সিনিয়র সাংবাদিকরা। এছাড়া বক্তব্য রাখেন ডিএনসিসির ১১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মশক নিধন কমিটির সভাপতি এম এ মান্নান এবং ১৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ডা. জিন্নাত আলী।
নিজেদের বক্তব্যে এডিস মশা নিধনে দীর্ঘমেয়াদে ও সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করার প্রস্তাব দেন বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদক এবং সিনিয়র সাংবাদিকরা। একইসঙ্গে বক্তব্য দেওয়ার সময় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ও নগরবাসীর অবস্থার প্রতি সংবেদনশীল থাকার আহ্বান জানান তারা।
রাহাত খান বলেন, ডেঙ্গু মোকাবিলায় সব নাগরিকের দায়িত্ব আছে। একইসঙ্গে সিটি কর্পোরেশনকেও তার দায়িত্ব পালন করতে হবে।
ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, সিটি কর্পোরেশনকে রক্ষণাত্মক না হয়ে ক্ষমা চাওয়ার মানসিকতা নিয়ে সেবা দিতে হবে। আপনাদের কোথাও ত্রæটি থাকলে দুর্বলতা থাকলে স্বীকার করে নিতে হবে। সিটি কর্পোরেশন এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে এ বিষয়ে গবেষণা সেল থাকা দরকার। স্থায়ী তথ্য সেল থাকা দরকার। নগরবাসীকে বোঝাতে হবে যে সিটি কর্পোরেশন তাদের পাশে আছে।
নঈম নিজাম বলেন, মন্তব্য ও মতামত প্রকাশের সময় ঔদ্ধত্য না দেখিয়ে রোগীদের প্রতি, নগরবাসীর প্রতি সহানুভ‚তি নিয়ে বক্তব্য দেওয়া উচিত। লোক দেখানো কাজের দরকার নেই। মশা মারার ফগার মেশিন দিয়ে ওষুধ মেয়রকে ছিটাতে হবে না। তারা প্রয়োজনে অফিসে থেকে সবকিছু তদারকি করবেন।
ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের জন্য বিশেষায়িত চিকিৎসাসেবা দেওয়ার আহ্বান জানান শ্যামল দত্ত। তিনি বলেন, প্রয়োজনে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের তিনটি ভাগে ভাগ করে চিকিৎসা দেওয়া যেতে পারে। যারা প্রাথমিকভাবে আক্রান্ত হয়েছেন, পরবর্তী ধাপে যাদের চিকিৎসা চলছে এবং তৃতীয় ধাপে যারা গুরুতরভাবে আক্রান্ত তাদের চিকিৎসা দেওয়া যেতে পারে।
সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা বলেন, দুই মাস বা তারও কিছু আগে থেকে গণমাধ্যম তার বিভিন্ন প্রতিবেদনের মাধ্যমে সিটি কর্পোরেশনকে সতর্ক করেছিল যে ডেঙ্গু আসছে এবং তা জটিল আকার ধারণ করতে পারে। এখন আপনারা (মেয়র) ডেঙ্গু মোকাবিলায় যে ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছেন, সচেতনতামূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করেছেন। শুরু থেকে যদি এসব পদক্ষেপ নিতেন তাহলে পরিস্থিতি এমন মহামারি আকার ধারণ করত না। দায় এড়ানো ও অস্বীকার করার প্রবণতা আমাদের এখানেই বেশি দেখা যায়। নাগরিকদের সেবা প্রদানে সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে ব্যত্যয় হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী কোনো নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত কোনো কাজ হতে দেখি না আমরা। ঢাকা শহরে বিশাল কনস্ট্রাকশন কর্মযজ্ঞ চলছে। এগুলোতে পানি জমে এডিস মশার প্রজনন হচ্ছে। বিভিন্ন থানার সামনে অনেক পরিত্যক্ত যানবাহন পড়ে থাকে। সেগুলোতে মশার প্রজনন হয়। এদিকে নজর দিতে হবে।
স্টালিন সরকার বলেন, যেহেতু সরকারি হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর জন্য ঠাঁই নেই অবস্থা, আর বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গুর চিকিৎসা ব্যয়বহুল। এরিমধ্যে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রের ২২ ঘণ্টার চিকিৎসা বাবদ ১ লাখ ৮৬ হাজার টাকার বিলের দৃষ্টান্ত দেখা গেছে। এ অস্থায় ডেঙ্গু চিকিৎসায় ব্যবহৃত স্যালাইনটি যদি সরকারিভাবে সল্পমূল্যে রোগিদের মধ্যে দেয়া যায় তাহলে হাসপাতালে ভিড় কিছুটা হলেও কমে যাবে। কারণ এই স্যালাইনটি সহজভাবে সংগ্রহ করতে পারলে ঘরে বসেই রোগির চিকিৎসা চালাতে পারবে; তখন হাসাপাতালে রোগীর চাপ কমে যাবে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে সিটি কর্পোরেশন সমন্বয় করে ব্যবস্থা নিতে পারে।
জুয়েল মাজহার বলেন, স্কুলে ক্লাস করতে আসা কোমলমতি শিশুরা ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত স্কুল বন্ধ রাখা যেতে পারে। এসব স্কুল ও সিটি কর্পোরেশনের কমিউনিটি সেন্টারগুলোতে অস্থায়ী চিকিৎসাক্যাম্প স্থাপন করা যেতে পারে। একইসঙ্গে হতদরিদ্র মানুষের ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসায় যেন ভোগান্তি পোহাতে না হয় সেদিকে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে। এর জন্য সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে আসতে পারেন।
মতবিনিময সভার আয়োজক ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, এটা সত্য যে আমরা জনগণকে খুশি করতে পারিনি। তবু বলবো সবাইকে নিয়ে কাজ করবো। সিটি কর্পোরেশনের কাজে গতি আনতে হবে। সমন্বয় অবশ্যই করতে হবে। ৩৬৫ দিনে কাজের কোনো বিকল্প নেই। গবেষণা ও তথ্য সেল তৈরি করতে হবে। আমাদের কথা বলার সময় বিনয়ী হতে হবে। মশককর্মীদের জবাবদিহিতার মধ্যে আনতে হবে।
এমন পরিস্থিতিতে সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে নতুন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান মেয়র আতিক। তিনি বলেন, আমরা ভেইকল মাউন্টেন মেশিন আনার পরিকল্পনা করছি। ডেঙ্গু রোগীদের সঙ্গে হাসপাতালগুলো যেন ব্যবসা না করে সে আহ্বান জানাচ্ছি। মানবিক কারণে আপনারা সবাই এগিয়ে আসুন, আমি সিটি কর্পোরেশন থেকে পাঁচজন ম্যাজিস্ট্রেট বিভিন্ন হাসপাতালের রোগীদের সঙ্গে কথা বলার জন্য পাঠিয়েছি। বাসাবাড়ি ও উচ্চ ভবনগুলোতে যেন পানি না জমে তা দেখার জন্য তাদের নির্দেশ দিয়েছি।
মেয়র বলেন, মশার ওষুধে সাধারণত ৮০ শতাংশের বেশি মশা মারা হয়। কিন্তু টেস্টে দেখা গেছে সেই হারে মশা মরে নাই। যার কারণে আমরা একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করি এবং কালো তালিকাভুক্ত করি। তিনি আরও বলেন, এত দিন একটি বিজ্ঞপ্তিকে বিধি হিসেব দেখিয়ে তারা ওষুধ আনত। সেটা আমরা ভেঙ্গেছি। সিদ্ধান্ত হয়েছে সিটি কর্পোরেশন সরাকরি ওষুধ আমদানি করবে। তবে এখনই আনা সম্ভব হবে না।
মেয়র কাউন্সিলরদের নিজ নিজ এলাকায় কাজের গতি বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনারা মানুষের পাশে দাঁড়ান। আর মশক নিধনকর্মীদের কাজে স্বচ্ছতা আনতে আগামী সপ্তাহ থেকে জিপিএস ট্রাকার চালু হবে। একইসঙ্গে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি যাবে কোন এলাকায় কে যাবে। #
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।