পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আজিবুল হক পার্থ : অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. মইনুল ইসলাম। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক আওয়ামী লীগপন্থী বুদ্ধিজীবী হিসেবে চিহ্নিত। প্রচুর পড়াশোনা করেন এবং লেখালেখিও করেন। লেখালেখিতে আওয়ামী লীগ প্রীতিই প্রাধান্য পায়। প্রগতিশীল এবং সাংস্কৃতিমনা ড. মইনুল ইসলাম ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের মূল্যায়ন করতে গিয়ে বলেছেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে নির্বাচন ব্যবস্থা ও গণতন্ত্রের ‘পরিসমাপ্তি’ হয়েছে। আমাদের তো নির্বাচন নেই। নির্বাচনকে আমরা কোথায় নিয়ে গেছি! কত বড় ক্ষতি হয়ে গেছে তা বুঝতে সময় লাগবে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে এ জন্য ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। কীভাবে নিজ হাতে তিনি নির্বাচন ব্যবস্থাকে শেষ করে দিলেন! শুধু ড, মইনুল নন; ইউপি নির্বাচন নিয়ে অধ্যাপক তোফায়েল আহমদ, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাখাওয়াত হোসেন, সৈয়দ আবুল মকসুদ, নির্বাচন পর্যবেক্ষক মনিরা খান, শারমিন মুসশিদ, ড. শাহাদীন মালিক, ড. সাদৎ হোসাইনসহ বিশিষ্টজনদের বক্তব্য প্রায় অভিন্ন। তাদের কেউ এ নির্বাচনকে ‘শহিদী নির্বাচন’, কেউ ‘নির্বাচনী ব্যবস্থায় বিচ্যুতি’ কেউ ‘নির্বাচন প্রক্রিয়া ধ্বংস’ আবার কেউ ‘নির্বাচন প্রক্রিয়ার সর্বনাশ’ হিসেবে অবিহিত করেছেন। ৬ দফায় নির্বাচনে ১৩৫ জনের প্রাণহানি এবং প্রায় ১০ হাজার আহতের পরও প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিন আহমদ দাবী করেছেন নির্বাচনী প্রক্রিয়ার উন্নতি ঘটেছে। নির্বাচন নিয়ে গবেষণাকারী প্রতিষ্ঠান সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার স্পষ্ট করে বলেছেন, ইউপি নির্বাচনে জনমতের প্রতিফলন ঘটেনি। এটি কারচুপি, ব্যালট বক্স ছিনতাই, কেন্দ্র দখল, ভোটের আগের রাতে ব্যালটে সিল মারার নির্বাচন হয়েছে। এখানে পেশিশক্তির প্রভাব দেখা গেছে। স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, সরকার ও নির্বাচন কমিশন ধারাবাহিকভাবে গোটা নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। ব্রিগেডিয়ার জেনালের (অব.) এম. সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, নির্বাচনের ধারা নষ্ট হয়ে গেছে। ড. শাহাদীন মালিক বলেছেন, নির্বাচনের দুঃভাগ্যজনক ও দুঃখজনক দিক হলো ব্যাপক সংঘর্ষ এবং বিপুল হতাহতের ঘটনা। নির্বাচন নিয়ে এত হানাহানি গত ২৫ বছরে হয়েছে বলে মনে পড়ে না। ইউপি ভোটের পুরো নির্বাচনেই নির্বাচন কমিশনের এক অসহায় রূপ দেখা গেল। নির্বাচনের এই কুৎসিত রূপ দেখার পরও নির্বাচন কমিশন দাবি করছে নির্বাচন পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে। পুরো নির্বাচনজুড়ে কখনো ইসি সরকারকে দায়ী করেছেন, কখনো আইন-শৃংখলা বাহিনীকে দায়ী করেছেন, কখনো সরকারি দলের নেতাদের ওপর দোষ চাপিয়েছেন, কখনো বা প্রশাসন আমাদের কথা শোনে না বলে নিলর্জের মতো মিথ্যাচার করেছেন। নির্বাচন কমিশনের এই ভূমিকা এবং ভোটের চিত্র বিএনপি নেতাদের সেই দাবিই যৌক্তিকতাই প্রমাণ করে যে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারীর নির্বাচনের আগ থেকেই বলে আসছেন এ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। তৃর্ণমূল পর্যায়ের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ইসির ভূমিকা এবং ভোটের গ্রহণের চালচিত্রই বলে দেয় ‘জনগণের ভোট’ নামক নাগরিক অধিকারকে পায়ে পিঁষিয়ে ফেলা হয়েছে।
৬ ধাপের ভোট পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, প্রিসাইডিং অফিসারদের জালভোট, পুলিশের সামনে সিল মারা, চেয়ারম্যান পদের ব্যালট ছাড়া ভোট, প্রকাশ্যে ছিল মারতে বাধ্য করা, কেন্দ্রে বিজয় হওয়ার পরে অন্য প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা, কেন্দ্রের পরিবর্তে উপজেলায় এনে ফলাফল ঘোষণা সহিংসতা প্রাণহানির রেকর্ড, হামলা, মামলা, হুমকি, মনোনয়ন জমাদানে বাধা, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচনের রেকর্ড হয়েছে সদ্য সমাপ্ত ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে। ভোট শেষ হলেও সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে। পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধনের বাইরে ভোটের সহিংসতা ছড়িয়েছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে। বিপরীত মতাদর্শের পক্ষে কাজ করা বা প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করে স্থানীয় রাজনীতিকদের কথা না শোনায় তাদের উপর নির্যাতনের খড়গ নামছে।
স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞদের মতে, এবার ইউপি নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি ও সহিংস ঘটনা ঘটেছে। ভোট পড়েছে অস্বাভাবিক হারে। সহিংসতা ও ভোটের হার এ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এ ধরনের নির্বাচনে জয় সামগ্রিকভাবে দলের জনপ্রিয়তা প্রমাণ করে না।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, এবারের নির্বাচনে জনমতের প্রতিফলন ঘটেনি। এটি কারচুপি, ব্যালট বক্স ছিনতাই, কেন্দ্র দখল, ভোটের আগের রাতে ব্যালটে সিল মারার নির্বাচন হয়েছে। এখানে পেশিশক্তির প্রভাব দেখা গেছে। যেহেতু দলীয় প্রতীকে ইউপি নির্বাচন হয়েছে, সেহেতু এটি সুষ্ঠু হলে প্রমাণ হতো কোন দলের কি পরিমাণ জনপ্রিয়তা রয়েছে।
স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, সরকার ও নির্বাচন কমিশন ধারাবাহিকভাবে গোটা নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। এতে বিদ্যমান রাজনৈতিক কাঠামোই ধসে পড়বে এবং দেশ সীমাহীন নৈরাজ্য ও সংঘাতের দিকে এগিয়ে যাবে।
তিনি বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নির্বাচন ও অবাধে ভোট প্রদানের অধিকার হচ্ছে প্রধান অবলম্বন। নির্বাচনী ব্যবস্থার প্রতি গণহতাশা ও গণঅনাস্থা তৈরি হয়েছে। অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত না করে নির্বাচন কমিশন ধারাবাহিকভাবে তার সাংবিধানিক দায়িত্ব লঙ্ঘন করে চলেছে।
সহিংস নির্বাচনে স্বস্তি নেই রাজনৈতিক অঙ্গনে। সংিহসতার এই ভোটে রাজনীতিকরা দায় না এড়ালেও দায় চাপিয়েছেন অন্যের ঘাড়ে। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, বিএনপি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করলে সহিংস ঘটনা কম হতো। বিএনপি শুরু থেকেই ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে এই নির্বাচন ও নির্বাচন কমিশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পথ বেছে নিয়েছে। এর ফলে যেসব স্থানে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা মনোনয়ন পাননি, সেসব স্থানে বিদ্রোহী প্রার্থীদের ওপর ভর করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করেছে। পাশাপাশি ব্যক্তিগত ও সামাজিক দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে কিছু সহিংসতা হয়েছে।
অন্যদিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দলীয় প্রতীকে ইউপি নির্বাচন দিয়ে সরকার তৃণমূল পর্যায়ে সন্ত্রাস ঢুকিয়ে দিয়েছে। বিভক্ত করে ফেলা হয়েছে গ্রামের মানুষ ও সমাজকে। আ.লীগ ভোট চুরি করেই ক্ষান্ত হয়নি। পরবর্তী সময়ে তাদের সন্ত্রাসীরা প্রতিপক্ষ বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে এবং তাদের বাসা-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আক্রমণ করে ভাঙচুর করেছে।
তিনি বলেন, এবারের ইউপি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আবার প্রমাণিত হয়েছে আওয়ামী লীগের অধীনে ও বর্তমান নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় কোনো নির্বাচনই সুষ্ঠু হতে পারে না। আসলে এই দল গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তারা বিশ্বাস করে, এ দেশ শাসনের অধিকার শুধু তাদেরই আছে। অন্য কোনো দলের দেশ পরিচালনার অধিকার রাখে না।
ইউপির জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের এই প্রক্রিয়াকে ‘নির্বাচন’ বলা যাবে কিনা তা জনগণের কাছে জানতে চেয়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এ সভায় তিনি সভার কাছে প্রশ্ন করেন এটাকে কি আপনারা নির্বাচন বলবেন?
স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে সর্ব প্রথম ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে কোনো প্রাণহানি ঘটেনি। একইভাবে ১৯৭৭ সালে জিয়াউর রহমানের আমলে অনুষ্ঠিত নির্বাচনেও প্রাণহানির ঘটনা ছিল না। ১৯৮৩ সালে এরশাদের শাসনকালে নির্বাচনে প্রাণহানির ঘটনা না ঘটলেও ১৯৮৮ সালে নির্বাচনে হত্যাকা-ের সূত্রপাত ঘটে। ওই নির্বাচনে ৮০ জন নিহত হন। এর পর খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন ১৯৯২ সালের নির্বাচনে হত্যাকা- না হলেও ১৯৯৭ সালে আওয়ামী লীগের আমলে ৩১ জন নিহতের মধ্য দিয়ে আবার নির্বাচনে হত্যাকা-ের ধারা চালু হয়। পরে ২০০৩ সালে বিএনপির আমলে ২৩ জন এবং ২০১১ সালে আওয়ামী লীগের আমলে ১০ জনের প্রাণহানি ঘটে। এবারের নির্বাচনে ১৩৫ জন নিহতের মধ্য দিয়ে অতীতের সব রেকর্ড অতিক্রম করে।
১১ ফেব্রুয়ারি প্রথম ধাপের তফসিলের মাধ্যমে গত ২২ মার্চ ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে ছয় ধাপে চার হাজারের বেশি ইউপিতে নির্বাচন শেষ হয়েছে ৪ জুন। নবমবারের এই ইউপি ভোটের এটি ছিল প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচন। ৬ ধাপের ভোটে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ প্রাণ গেছে ১৩৫ জনের । দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি প্রাণঘাতী হয়েছে এবার। ভোটহীনে নির্বাচন, প্রাণহানি, সংঘর্ষ, অনিয়ম সবদিক থেকেই এই ভোট রেকর্ড গড়েছে।
নির্বাচনী ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গড় ভোটের হার শতকরা ৭৬ শতাংশের কিছুটা বেশি। ৬ ধাপে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে কমপক্ষে ১ হাজার ৩৫৩টিতে। এর মধ্যে ২৭টিতে ভোট পড়েছে ৯০ শতাংশের বেশি। আর ৮০-৯০ শতাংশ পর্যন্ত ভোট পড়েছে এমন ইউপির সংখ্যা অন্তত ১৩২৬টি।
গতকাল নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে নির্বাচনী সহিংসতায় মনির হোসেন (৩৫) নামে আহত আরো একজনের মৃত্যু হয়েছে। পাবনা সদর উপজেলার হিমায়েতপুর ইউনিয়নের চরঘোষপুর গ্রামে বকুল সরদার ও আবজাল হোসেন নামে পরাজিত দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে দু’জন গুলিবিদ্ধসহ প্রায় ৩০ জন আহত হয়েছেন। সিলেটের চুনারুঘাটে বিএনপির চেয়ারম্যান সৈয়দ লিয়াকত হাসানের বিজয় মিছিলে হামলায় মনির মিয়া নামে নবম শ্রেণি পড়ুয়া এক স্কুলছাত্র নিহত হয়েছে। এঘটনায় আহত হয়েছে কমপক্ষে অর্ধশতাধিক লোক। আওয়ামী লীগের পরাজিত প্রার্থী নোমান চৌধুরীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে হমলার অভিযোগ উঠেছে।
৬ ধাপের ভোট শেষে মোট ৪ হাজার ১০৪টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে ক্ষমতাসীন আ’লীগ ২৬৫৪, বিএনপির ৩৬৭, জাতীয় পার্টি ৪৮, স্বতন্ত্র ৮৭৪ টি ইউপির চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছে। প্রথম ধাপে আ’লীগ ৫৩০টি, বিএনপি ৪৭টি ও স্বতন্ত্র ১০৩টিতে জয় পেয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে আ’লীগ ৪৪৭টি, বিএনপি ৬১টি ও স্বতন্ত্র ১১৫টিতে এবং তৃতীয় ধাপে আ’লীগ ৩৯৫টি, বিএনপি ৬০টি ও স্বতন্ত্র ১৩৯টিতে জয় পায়। চতুর্থ ধাপে আ’লীগ ৪৩৯টি, বিএনপি ৭০টি ও স্বতন্ত্র ১৬১টি, পঞ্চম ধাপে আ’লীগ ৪৩১টি, বিএনপি ৬৭টি ও স্বতন্ত্র ১৭০টি এবং ষষ্ঠ ধাপে আ’লীগ ৪১২টি, বিএনপি ৬২টিতে ও স্বতন্ত্র ১৮৬টিতে জয় পেয়েছে।
এদিকে রাতের কেন্দ্রের ফল পাল্টেছে সকালে উপজেলা নির্বাচন অফিসে। কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার রাজাখালী ইউপির ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরতি মহিলা মেম্বর পদে ছাদেকা বেগম বক প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে পান দুই হাজার ৩২৭ ভোট। আর তালগাছ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছেন মোহছেনা বেগম পান এক হাজার ২৫১ ভোট। কিন্তু রিটার্নিং অফিসার হাসান মুরাদ চৌধুরী স্বারিত ফলাফলে ছাদেকা বেগমকে বক পাল্টিয়ে দেয়া হয়েছে তালগাছ। মোহছেনা বেগমকে বক প্রতীক দিয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। শ্যামনগরের রমজাননগর ইউনিয়নে ভোট গ্রহণ শেষে রিটার্নিং কর্মকর্তা সঞ্জয় বিশ্বাস শুরুতে বিএনপির প্রার্থী আকবর আলীকে ১৮ ভোটে বিজয়ী ঘোষণা করেন। রাতে কয়েক ঘণ্টা পর একই ইউনিয়নে বিএনপির প্রার্থীর বদলে আওয়ামী লীগের শেখ আল মামুনকে ৩৩ ভোটে বিজয়ী ঘোষণা করেন। এ জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তা স্থানীয় রমজাননগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ফলাফল বিবরণীতে ফুইড মেখে ঘঁষামাজা করেন। একই কমপক্ষে ১০টি ধরনের অভিযোগ পড়েছে ইসি সচিবালয়ে নানা বিধ অভিযোগ নিয়ে হাজারো ভুক্তভোগী আাসলেও অভিযোগ খুলে দেখেননি ইসি কর্মকর্তারা। যে অভিযোগগুলো গণমাধ্যমে এসে সমালোচনার মধ্যে পড়েছিলেন সেগুলোতে সামান্য কিছু ব্যবস্থা নিয়ে দায় এড়ানোর কৌশল নিয়েছিলেন। এবারের নির্বাচন দলভিত্তিক হলেও নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনার কোনো উদ্যোগ নেয়নি। কয়েকজন পুলিশ সুপার (এসপি) ও থানার ওসি প্রত্যাহার এবং সাতীরার এসপি ও পাঁচ ওসিকে ঢাকায় ডেকে এনে ভর্ৎসনা করা ছাড়া কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি ইসি। অন্যদিকে প্রত্যাহার ও বরখস্তের আদেশও যথাযথ পালিত হয়নি। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে কমিশন গত ২১ এপ্রিল গাজীপুরের এসপিকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয়। কিন্তু মাত্র ১৩ দিনের মাথায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কমিশনের অনুমতি না নিয়ে ওই প্রত্যাহার আদেশ প্রত্যাহার করে নেয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।