পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীতে মহামারীর আকার ধারণ করেছে ডেঙ্গু। রাজধানীসহ দেশের সব বিভাগের বেশিরভাগ জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে। বছর শেষ হতে এখন পাঁচ মাস বাকি থাকলেও চলতি মাসেই বাংলাদেশের ইতিহাসে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। এদিকে রাজধানীতে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে কেউ যদি গ্রামের বাড়িতে যায়, তাহলে তার মাধ্যমে এ রোগ দ্রুত ওই এলাকার অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তখন পরিস্থিত হয়তো নিয়ন্ত্রন করা আর সম্ভব হবে না।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন্স সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সহকারি পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে চলতি বছরে সর্বোচ্চ ১১ হাজার ৬৫৪ ডেঙ্গু রোগী সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে নতুন রেকর্ড স্থাপন করেছেন। যদিও বছরের এখনো ৫ মাস বাকী। গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৮২৪ জন। এই সংখ্যা গত এক মাসের (২৭ জুন-২৮ জুলাই) মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে সবচেয়ে বেশি ৬৮৩ জন রোগী ভর্তি হয়েছিল গত শনিবার (২৭ জুলাই)। শুধু জুলাই মাসেই ৯ হাজার ৫১০ জন রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে এ বছর মৃতের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম, মাত্র আটজন। যদিও অন্যান্য হিসেব মতে এই সংখ্যা ৩৫। সবার কাছেই প্রধান আলোচনার বিষয় ও আতঙ্কের নাম ডেঙ্গু। এ রোগের ভয়াবহতা ক্রমেই বাড়ছে। প্রতিদিনই হাসপাতালে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীদের সংখ্যা। ডেঙ্গুর ভয়াবহতা থেকে বাদ যাচ্ছে না শিশুরাও।
এদিকে জ্বর হলেই ডেঙ্গু পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। ফলে যে কোনো কারণে জ্বরে আক্রান্ত হলেই মাননুষ ছুটে যাচ্ছে নিকটস্থ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে। জ্বর হলেই মনে সৃষ্টি হচ্ছে ডেঙ্গুর আতঙ্ক। ডেঙ্গু পরীক্ষা করানোর জন্য চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে উপচেপড়া ভিড়। গতকালও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ঝালকাঠির রাজাপুরে নিগার সুলতানা নামে দুই সন্তানের এক মা’র মৃত্যু হয়েছে। পরিস্থিতির ভয়াবহতা বিবেচনায় নিয়ে মশা মারতে কার্যকর ওষুধ ছিটাতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আসন্ন ঈদুল আজহায় ঢাকা থেকে প্রায় অর্ধকোটি মানুষ ঢাকা ছাড়বে। তখন এই পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই জ্বরে আক্রান্তদের ঈদে রাজধানী না ছাড়তে পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
মুগদা মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রফেসর ডা. এ কে এম শামসুজ্জামান বলেছেন, এডিস মশার দুটি জাত রয়েছে। একটি এডিস ইজিপ্টি। এটি শহুরে মশা। এর মাধ্যমেই ঢাকা শহরে ডেঙ্গু রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। আরেকটি এডিস এলবোপিকটাস। এটি মূলতো গ্রাম এলাকার মশা।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা পরীক্ষা করে দেখেছে যে, এই মশাও ধীরে ধীরে ডেঙ্গুর বাহকে পরিণত হয়েছে। তাই ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত রোগীরা গ্রামে গেলে এডিস এলবোপিকটাস মশার মাধ্যমে এ রোগ ছড়িয়ে পড়াই স্বাভাবিক।
আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহায় ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্তদের গ্রামের বাড়িতে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখতে হয়। অনেক গ্রাম্য এলাকায় প্রশিক্ষিত চিকিৎসক থাকে না। সেক্ষেত্রে সুচিকিৎসার অভাবে আক্রান্ত রোগী প্রাণহানির মতো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এমন আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না।
প্রফেসর ডা. আজাদ বলেন, বর্তমানে চলমান ডেঙ্গু পরিস্থিতিতে গ্রামের বাড়িতে ঈদ করতে যাওয়ার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। এ অবস্থায় বাড়িতে না যাওয়াই ভালো। এর কারণ হিসাবে তিনি বলেন, ডেঙ্গুবাহী এডিস মশার কামড় খেয়ে জ্বর নিয়ে কেউ গ্রামে গেলে এবং ওই আক্রান্ত ব্যক্তিকে গ্রামের মশা কামড়ালে সেই মশার মধ্যে ডেঙ্গু সংক্রমিত হয়ে অন্যরাও এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। সে কারণে জ্বর নিয়ে গ্রামে ঈদ করতে যাওয়া ডেঙ্গু ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়া। তিনি বলেন, আমরা বিভাগীয় পরিচালক ও সিভিল সার্জনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন এলাকার হাসপাতালে চিকিৎসারত ডেঙ্গু রোগীদের বিষয়ে জানতে পেরেছি যে, বেশিরভাগ ডেঙ্গু রোগী ঢাকা থেকে জ্বর নিয়ে বাড়িতে গিয়ে ডেঙ্গু ধরা পড়ছে। এ কারণেই আমরা আসন্ন ঈদে রাজধানীবাসী যাদের শরীরে জ্বর থাকবে তাদের গ্রামে ঈদ করতে না যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।