পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : মাহে রমজানের পবিত্রতা রক্ষা, দ্রব্যমূল্য কমানো, যানজট নিরসন, অশ্লিলতা এবং দিনের বেলা হোটেল রেস্তোরাঁ বন্ধের দাবিতে গতকাল রাজধানী ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ইসলামী দল ও অন্যান্য সংগঠন পৃথক পৃথক মিছিল-সমাবেশ করেছে। পৃথক পৃথক সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, রমজানের পবিত্রতা রক্ষা কুফরি পাঠ্যসূচি বাতিল এবং বাজার নিয়ন্ত্রণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সকলকে পদত্যাগ করা দরকার।
ইমলামী আন্দোলন মহানগর
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর যুগ্ম মহাসচিব মাও. এটিএম হেমায়েত উদ্দিন বলেছেন, রমজান মাসকে সামনে রেখে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্য বৃদ্ধিতে জনজীবন চরম দুর্বিষহ করে তুলেছে। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী রমজানকে সামনে রেখে একদিকে ইবাদত বন্দেগী করে, অপরদিকে জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে অতিরিক্ত মুনাফা আদায় করে। এমন ইবাদত আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। তাই মূল্য বৃদ্ধি, খাদ্যে ভেজাল বন্ধ করতে হবে। মাহে রমজানের সম্মানে সব ধরনের গর্হিত কাজ থেকে বিরত থাকতে ও রাখতে সরকারকে কার্যকরী উদ্যোগ নিতে হবে। তিনি বলেন, নাস্তিক্যবাদী পাঠ্যসূচি স্থগিত করে নতুন পাঠ্যসূচি প্রণয়ন না করলে পরবর্তী কর্মসূচিতে সর্বাত্মক আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে।
গতকাল বিকেলে পুরানা পল্টন হাউজ বিল্ডিংয়ের সামনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগরীর রমজানের পবিত্রতা রক্ষার দাবিতে আয়োজিত মিছিলপূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। মহানগর সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক মাহাবুবুর রহমান, প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূূম, দপ্তর সম্পাদক মাওলানা লোকমান হোসেন জাফরী, উত্তর সভাপতি মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, মহানগর সহ-সভাপতি আলহাজ আলতাফ হোসেন, আলহাজ আবদুর রহমান দক্ষিণ সেক্রেটারি মাওলানা এবিএম জাকারিয়া, উত্তর সেক্রেটারি মু. মোশারফ হোসেন শ্রমিক মুহাম্মদ খলিলুর রহমান প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা ইমতিয়াজ আলম বলেন, রহমত, মাগফিরাত, নাজাত ও মহাগ্রন্থ আল-কুরআন নাযিল ও ঐতিহাসিক বদর যুদ্ধ সংগঠিত হওয়ার মাস রমজান। রমজানের পবিত্রতা রক্ষা করা প্রত্যেক মুসলমানের ঈমানী দায়িত্ব।
কর্মসূচি : ১। ৬ জুন ঢাকা মহানগরীর থানায় থানায় সমাবেশ ও মিছিল ২। পীর সাহেব চরমোনাই স্বাক্ষরিত পত্র থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট পেশ। ৩। ১ রমজানÑ২০ রমজান কুফরি সিলেবাসের বিরুদ্ধে জনমত গঠনের লক্ষ্যে থানা ও ওয়ার্ডে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল, ৪। ১৭ রমজান বাদ জোহর ঐতিহাসিক বদর দিবসের আলোচনা ও ইফতার মাহফিল।
সমাবেশের পূর্বে মাহে রমজানকে স্বাগত জানিয়ে পল্টন হাউজ বিল্ডিং থেকে একটি বিশাল মিছিল দৈনিক বাংলা, বায়তুল মোকাররম, পুরানা পল্টন মোড় হয়ে হাউজ বিল্ডিং এসে শেষ হয়।
বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ বাণিজ্যমন্ত্রী
Ñখেলাফত আন্দোলন
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন-এর যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী বলেছেন, রহমত, বরকত, নাজাত, শান্তি ও কল্যাণের পয়গাম নিয়ে মাহে রমজান মুসলিম উম্মাহর দ্বারপ্রান্তে। রমজান মাসের পবিত্রতা রক্ষা করে ইবাদত বন্দেগীর পরিবেশ সৃষ্টি করা সরকারের নৈতিক দায়িত্ব। বেপর্দা ও অশ্লীলতাসহ সর্বপ্রকার ইসলামবিরোধী কার্যকলাপ বন্ধ করতে হবে। ইসলামবিরোধী তৎপরতা অব্যাহত রাখার চক্রান্ত সহ্য করা হবে না।
গতকাল বাদ আসর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইটে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে মাহে রমজানকে স্বাগত জানিয়ে এবং রমজানের পবিত্রতা রক্ষা এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধের দাবিতে আয়োজিত মিছিলপূর্ব সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন।
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, দলের সহকারী মহাসচিব মুহাম্মদ আজম খান, সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি ফখরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নেতা ও মহানগরী সেক্রেটারি হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, মাওলানা সুলতান মহিউদ্দীন, মাওলানা আবুল কাসেম কাসেমী, হাফেজ মাওলানা আব্দুল মান্নান, মাওলানা মাহবুবুর রহমান, মাওলানা মোহাম্মদ হোসাইন, হাফেজ মাওলানা আবু বকর ও মো. মামুন খান প্রমুখ।
মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী আরও বলেন, বাণিজ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, রমজান মাসে দ্রব্যমূলের ঊর্ধ্বগতি হবে না, অথচ রমজান আসার পূর্বেই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে দিয়েছে। কোনো কোনো পণ্যে ৩০/৪০ টাকা কেজি প্রতি বৃদ্ধি পাওয়ার নজীর পৃথিবীতে নেই। এ ধরনের বক্তব্য দিয়ে সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী জনগণের সাথে প্রতারণা করছে। তিনি বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে চরমভাবে ব্যর্থ। বাণিজ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে বলেন, ভারতের তাঁবেদার বর্তমান সরকারের জানা থাকা দরকার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী রমজান মাসব্যাপী রোজাদারদের জন্য বিনামূল্যে ইফতারের ব্যবস্থা করেছেন। ভারত যদি রোজাদারের জন্য বিনামূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিতরণ করতে পারে বাংলাদেশ পারবে না কেন?
বক্তারা রমজান মাসে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিতকরণ, রাজধানীর যানজট নিরসন এবং দিনের বেলায় হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ রাখার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান।
সমাবেশে শেষে একটি মিছিল বের হয়ে বায়তুল মোকাররম, পল্টন মোড়, দৈনিক বাংলা হয়ে বায়তুল মোকাররমে এসে শেষ হয়।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম
পবিত্র মাহে রমজান গোটা মুসলিম উম্মাহর কাছে অত্যন্ত মর্যাদার মাস। এ মাসেই মহান রাব্বুল আলামীন পবিত্র কোরআন নাযিল করেছেন। এ মোবারক মাসে সিয়াম সাধনায় অংশগ্রহণ করে মুমিন নর-নারীগণ ঈমানী যিন্দেগীতে পূর্ণতা ও পরিপক্বতা অর্জন করে থাকে। তাই এ মাসে যাবতীয় অশ্লীলতা ও বেহায়াপনা বন্ধে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করতে হবে। যেন সাধারণ মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে ও স্বাচ্ছন্দ্যে নেক আমল করে যেতে পারে। গতকাল বিকেলে জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মিলনায়তনে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের ঢাকাস্থ নেতৃবৃন্দের এক জরুরি সভায় বক্তাগণ এসব কথা বলেন। জমিয়তের সহ-সভাপতি প্রবীণ রাজনীতিবিদ মাও. জহিরুল হক ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে উক্ত সভায় বক্তব্য রাখেন জমিয়তের মহাসচিব আল্লামা নূর হোছাইন কাসেমী, যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর জমিয়তের সভাপতি মাও. মঞ্জুরুল ইসলাম, মাও. বাহাউদ্দীন যাকারিয়া, মাও. নাজমুল হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক মাও. উবায়দুল্লাহ ফারুক, অর্থ-সম্পাদক মুফতি মুনীর হোসাইন এবং ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের সভাপতি মুফতি নাসিরুদ্দীন খান প্রমুখ।
সভায় বক্তাগণ বলেন, পবিত্র মাহে রমজানে ব্যবসায় সিন্ডিকেট করে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করা হয়, যা বড় দুঃখজনক। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির এ জাতীয় কারসাজিতে খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়ে। এবারও ইতোমধ্যেই তার পুনরাবৃত্তি হয়েছে তা পূর্ববস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।