Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উত্তরায় নিজ বাসায় কর্ণেলের মা’কে গলা কেটে হত্যা

প্রকাশের সময় : ৬ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:১০ এএম, ৬ জুন, ২০১৬

স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর উত্তরার আবাসিক এলাকায় সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার মাঝেই নিজ বাসায় গলা কেটে  মনোয়ারা সুলতানা (৬৪) নামে এক মহিলাকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
তিনি সেনাবাহিনীতে কর্মরত খালেদ বিন ইউসুফ নামে এক কর্ণেলের মাতা। গতকাল রাত ৩টার দিকে উত্তরা (পশ্চিম) থানা পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে । গতকাল সকাল ১১ টার দিকে তার লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। ময়না তদন্তের পর তার লাশ নিহতের পরিবারের কাছে গতকাল বিকালে লাশ হস্তান্তর করা হয়।
বর্তমানে সিএমএইচ-এর হিমাগারে তার লাশ রাখা হয়েছে। তার দুই ছেলে অস্ট্রেলিয়া ও আমেরিকা প্রবাসী। তারা দেশে ফিরলে বুধবার বনানী কবর স্থানে তাঁকে দাফন করার কথা রয়েছে। তাদের বাড়ি ভোলায়। গত শনিবার দিবাগত রাতে রাজধানীর উত্তরার নিজ বাসায় তাকে হত্যা করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে। ওই ঘটনায় ভাড়াটিয়াসহ ৫ জনকে পুলিশ আটক করেছে। পুলিশ বলছে, গতরাতেই নিহতের ছেলে কর্ণেল খালেদ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। গতকাল সকালে ঘটনাস্থল সিআইডি, র‌্যাব ও ডিবি’র উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরিদর্শন করেছেন। ঘটনাস্থল থেকে সিআইডি বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছে।
ডিএমপি’র মিডিয়া প্রধান উপ-পুলিশ কমিশনার মাসুদুর রহমান জানান, তদন্তে আগে কিছুই বলা যাচ্ছে না। আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এছাড়া তিনি একাই থাকতেন নাকি তার সাথে বাসায় আরো কেউ ছিলেন তাও তদন্ত করা হচ্ছে।
পুলিশ জানায়, খালেদ বিন ইউসুফ চিটাগাং ক্যান্টমেন্টে কর্মরত। নিহত মনোয়ারা মৃত ডা. আবু মোহাম্মদ ইউসুফের স্ত্রী। তিনি উত্তরা ৯ নম্বর সেক্টরের ১ নম্বর রোডের ৫ তলা বিশিষ্ট ১১ নম্বর বাড়ির ২য় তলায় একা থাকতেন। ৩ ছেলের মধ্যে বড় ছেলে ইকবাল ইবনে ইউসুফ অস্ট্রেলিয়ায় ও ছোট ছেলে আরমান ইবনে ইউসুফ আমেরিকায় থাকেন। ওই রাতে মনোয়ারা বেগমের সাড়া না পেয়ে বিল্ডিংয়ের নিচ তলার ভাড়াটিয়া তার ছেলে কর্নেল খালেদ ইবনে ইউসুফকে ফোন করে জানান। তিনি থানা পুলিশকে অবহিত করলে তারা বাসার দরজা ভেঙে মনোয়ারা বেগমের লাশ উদ্ধার করে।
উত্তরা (পশ্চিম) থানার উপ-পরিদর্শক মো. মামুন মিয়া জানান, নিহতের গলা কাটা ছিল। এ ছাড়া থুতনি ও গালে কয়েকটি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বাসার ড্রইং রুমে সোফাসেটে হেলানো অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহতের ভাই মির্জা আজম বেগ জানান, মনোয়ারা বেগমের সঙ্গে একজন কাজের বুয়া থাকতো। গত ৩-৪ দিন ধরে সে অনুপস্থিত ছিল। তার অনুপস্থিতিতে ওই বিল্ডিংয়ের ৪তলার এক ভাড়াটিয়া তাকে খাবার দিত।
 সে ভাড়াটিয়া নিজে অথবা কারও সহায়তায় খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে ও গলা কেটে মনোয়ারাকে হত্যা করতে পারে বলে ধারণা করেন তিনি। কারণ হিসাবে বলেন, মনোয়ারা বেগম দীর্ঘদিন ধরে তার স্বামীর সঙ্গে সউদি আরবে ছিলেন। সেখানে থাকা অবস্থায় অনেক স্বর্ণালংকার কিনেছেন তিনি। মসজিদ বানানোর জন্য গত কয়েক বছর ধরে তিনি আরও স্বর্ণ জমাচ্ছিলেন। এ পর্যন্ত প্রায় ১০০ ভরি স্বর্ণ জমিয়েছেন তিনি। ৪ তলার ওই ভাড়াটিয়া স্বর্ণের বিষয়টি জানতে পেরে তাকে হত্যা করতে পারে। হত্যার পর স্বর্ণের জন্য বাসার বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালানোর আলামত পাওয়া গেছে। কিন্তু তারা কোনো স্বর্ণ পায়নি। এগুলো ব্যাংকের ভল্টে রাখা হয়েছে।
ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বিল্ডিংয়ের ৫ ভাড়াটিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
উত্তরা জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার বিধান ত্রিপুরা বলেছেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকা-। তিনি বলেন, এটা চুরি বা ডাকাতির কোন ঘটনা নয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে নিহতের ছেলেরা আসলে তাদের কাছ থেকে জানা যাবে এর পেছনে কে বা কারা জড়িত থাকতে পারে। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে নাকি অন্য কোন ঘটনা আছে তা তদন্তে বেরিয়ে আসবে।
                                                                  



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: উত্তরায় নিজ বাসায় কর্ণেলের মা’কে গলা কেটে হত্যা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ