পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সউদী বাদশাহর সঙ্গে শেখ হাসিনার বৈঠক
কূটনীতিক সংবাদদাতা
বিশ্বশান্তি, উন্নয়ন ও মুসলিম উম্মাহর জন্য একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সউদী আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আলে-সউদ। গতকাল স্থানীয় সময় দুপুরে জেদ্দায় সউদী বাদশাহর বাসভবন আল-সালাম প্যালেসে দুই দেশের নেতার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এ অঙ্গীকার আসে। বৈঠক শেষে আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে সাংবাদিকদের সামনে আসেন পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক ও প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক হয়েছে। অত্যন্ত হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশে দু’জনের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী এবং সউদী বাদশাহ বিশ্বশান্তি, উন্নয়ন এবং ইসলামী উম্মাহর জন্য একসাথে কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন। ‘একইসাথে বিশ্বে এখন যে অস্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তাহীনতা-এই ক্ষেত্রে কাজ করার জন্যও প্রধানমন্ত্রী ও বাদশাহ অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন’।
বাংলাদেশকে সউদী আরব গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে জানিয়ে শহীদুল হক বলেন, ‘শুরুতেই বাদশাহ সালমান বলেছেন, সউদী আরব বাংলাদেশকে শীর্ষ সারির একটি মুসলিম দেশ মনে করে এবং তিনি বলেছেন, মুসলিম বিশ্বে বাংলাদেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দেশ।
‘একইসাথে উন্নয়ন ও ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে দু’দেশের যে অপার সম্ভাবনা আছে, তা বাদশাহ বারবার উল্লেখ করেছেন এবং দুই দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্কের কথা বলেছেন উনি দু’বার’।
সউদী বাদশাহ মনে করেন, বিশ্বে শান্তি, প্রগতি ও স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের একটা বড় ভূমিকা আছে।
‘এ আলোচনা থেকে বোঝা যায় যে, একটা শক্তিশালী সম্পর্ক উন্মুক্ত, যেটা আমরা আগে ঠিক এভাবে দেখিনি,’-বলেন পররাষ্ট্র সচিব। তিনি বলেন, ‘এটা অত্যন্ত যুগান্তকারী সফর হয়েছে। আমরা যেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিলাম, তারও অনেক বেশি সফলতা এসেছে বলে আমার মনে হয়। এই সফরের মধ্যদিয়ে শুধু নতুন অধ্যায়ই উন্মুক্ত হয়নি, আমাদের সম্পর্ক ইতোমধ্যে একটা নতুন উচ্চতায় চলে গেছে’। শেখ হাসিনা সউদী বাদশাহকে বলেছেন, বিশ্বশান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নে সউদীর সঙ্গে কাজ করতে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। একইসঙ্গে সউদী আরব ইসলামিক অ্যালায়েন্সের মাধ্যমে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে ‘সোচ্চার’ হয়েছেন সে বিষয়টিও শেখ হাসিনা তুলে ধরেন বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ যে এটাতে (সামরিক জোটে) অংশগ্রহণ করেছে, এতেই সউদী রাজা অত্যন্ত আনন্দিত’। বাদশাহ সালমান শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে যে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রয়েছে, তার প্রশংসাও করেন। বৈঠকে সউদী বাদশাহ আরবিতে কথা বললেও তিনি শেখ হাসিনাকে ‘ম্যাডাম প্রাইম মিনিস্টার’ বলে সম্বোধন করেন বলে জানান শহীদুল হক।
তিনি বলেন, ‘এই সফরের মধ্যদিয়ে প্রধানমন্ত্রীর যে নেতৃত্ব সেটা সম্পর্কে আমরা আরও একবার একটা বড় ধরনের বিশ্ব স্বীকৃতি দেখলাম। আমি মনে করি যে, এর মধ্যদিয়ে শুধু সউদী আরব নয়, মুসলিম উম্মাহর সাথে নতুন ধরনের একটা সম্পর্কের সূচনা হল’।
বাংলাদেশের কর্মকর্তারা জানান, সউদী আরবে সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘদিন পর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হল। আর এবারই ‘ক্রাউন প্রিন্স’ বাংলাদেশের কোনো সরকার প্রধানকে অভ্যর্থনা জানাতে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন।
বিকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সউদী অর্থমন্ত্রী সৌজন্য সাক্ষাতে এলে সেখানে বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয় বলে জানান শহীদুল হক। ‘উনাদের অর্থমন্ত্রী বলেছেন, বিষয়টি উনারা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখবেন’।
সরকারি হিসাবে বর্তমানে ১২ লাখ ৮০ হাজার বাংলাদেশি সউদী আরবে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত। এই হিসাবে সউদী আরবই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার। প্রধানমন্ত্রী আজ (সোমবার) সকালে মদীনার উদ্দেশ্যে জেদ্দা ত্যাগ করবেন। তিনি সেখানে মসজিদে নববীতে নামাজ আদায় করে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলেহী ওয়া সাল্লামের রওজা মুবারক জিয়ারত করবেন। আগামীকাল (মঙ্গলবার) সকালে মদীনার প্রিন্স মোহাম্মাদ বিন আব্দুল আজিজ বিমানবন্দর থেকে রওনা হয়ে সন্ধ্যায় ঢাকা পৌঁছনোর কথা রয়েছে তার।
সউদী বাদশাহ সালমান দায়িত্ব নেওয়ার পর মধ্যপ্রাচ্যের এই তেলসমৃদ্ধ দেশে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর এটাই প্রথম সফর। সর্বশেষ ২০১৩ সালের নভেম্বরে ওমরাহ করতে সউদী আরবে গিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। এই সফরের শুরুতেই মক্কায় ওমরাহ পালন করেন তিনি। এরপর জেদ্দায় ফিরে সেখানে থেকেই তিনি রিয়াদে বাংলাদেশের চ্যান্সেরি কমপ্লেক্স এবং বাংলাদেশ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। Ñসূত্র : বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।