পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : রাষ্ট্রপরিচালনায় ব্যর্থ হয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে ফেরাতেই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দিয়েছে বলে দাবি করেছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে শুক্রবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে আয়োজিত
দৃষ্টি ভিন্ন দিকে ফেরাতে
এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এ কথা বলেন। বিএনপির অন্যতম অঙ্গ সংগঠন জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল এর আয়োজন করে।
গত ২১ ডিসেম্বর রাজধানীতে একটি আলোচনা সভায় খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে বলেন, ‘আজকে বলা হয় এত লক্ষ লোক শহীদ হয়েছেন। এটা নিয়েও অনেক বিতর্ক আছে যে, আসলে কত লাখ লোক মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। নানা বই-কিতাবে নানা রকম তথ্য আছে।’ তার ওই বক্তব্যের পর রাজনৈতিক অঙ্গনসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে মামলা করা হয়েছে তার কোনো ভিত্তি নেই। তিনি সেদিন অন্যদের বক্তব্যের প্রতিধ্বনি করেছিলেন। তিনি শহীদদের পূর্ণ সম্মান দিতে চান। আমরা মুক্তিযোদ্ধারাও চাই, শহীদদের সঠিক সংখ্যা নিরূপণ হোক। তাদের আরও সুযোগ-সুবিধা নিয়ে উচ্চ সম্মান দেয়া হোক। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই সরকারের সেই ধরনের কোনো মনমানসিকতা নেই।
বিএনপির এই নেতা বলেন, তিনি (খালেদা জিয়া) এমন কি বললেন যে, দেশ রসাতলে গেল? নামগ্রোত্রহীন এক উকিল তার নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। যিনি মুক্তিযুদ্ধের সময়ে পাকিস্তানিদের হাতে দুটি সন্তানসহ ছয় মাস বন্দি থাকলেন, নির্যাতন ভোগ করলেন, তিনি আজ দেশদ্রোহি হয়ে গেলেন। আর যারা পালিয়ে বেড়ালো তারা হয়ে গেলেন মুক্তিযোদ্ধা; ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
হাফিজ বলেন, দেশে যদি গণতন্ত্র, ভোটাধিকার থাকতো; আর যদি আগামী একমাসের মধ্যে কোনো কারণে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, তাহলে দেখা যাবে কে দেশদ্রোহি আর কে দেশনেত্রী।
খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তায় কালিমা লিপ্ত করতেই তার নামে দেশদ্রোহিতার মামলা দেয়া হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।
বিএনপি নেত্রীর বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান দলের অন্যতম এই ভাইস চেয়ারম্যান।
সরকারের কাছে আহ্বান জানাবো, মামলাবাজি বন্ধ করুন। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করুন। বিএনপি নেত্রীর বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করুন। যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মামলা জন্য অনুমতি দিয়েছেন, একদিন তাদের ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে, হুঁশিয়ারি জানান হাফিজ।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, যেভাবে সরকার মামলাবাজি শুরু করেছে তাতে প্রধান বিচারপতির নামে দেশদ্রোহিতার মামলা হলে মোটেও আশ্চর্য হব না। তিনি বলেন, এই ধরনের মিথ্যা মামলাবাজি করে বাংলাদেশে কেউ পার পেয়ে যাবে না। এই সরকার শেষ সরকার নয়। সুতরাং এই দুঃশাসনের হাত থেকে বাঁচতে হলে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে জনগণের সঙ্গে নিয়ে তুমুল গণআন্দোলনের মাধ্যমে এর জবাব দেয়া হবে।
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আইন প্রণয়নের উদ্যোগের সমালোচনা করে মুক্তিযুদ্ধের বীর বিক্রম মেজর হাফিজ উদ্দিন বলেন, আইন প্রণয়ন করে কোনো শ্রদ্ধা বা সম্মান পাওয়া যায় না। বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যে আইন করতে যাচ্ছে তা অর্থহীন। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তাদের (আওয়ামী লীগ) কারও কথা পছন্দ না হলে তাকে কারাগারে নিক্ষেপ করা হবে। সে যদি মুক্তিযোদ্ধাও হয়।
তিনি বলেন, এই দেশে যেহেতু আইনের শাসন নেই, নির্বাচিত আইনসভাও নেই সেজন্য তাদের প্রত্যেকটি কথা অসাড় বলে গুরুত্ব দিতে চাই না। বর্তমানের যে পরিস্থিতি চলছে, তাতে মুক্তিযোদ্ধারা হতাশ। এখন তামাশা ছাড়া আর কিছু হচ্ছে না। গণতন্ত্র বিলুপ্ত আইনের শাসন নির্বাসনে, মানুষের অধিকার নেই।
মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে আলোচনায় আরও বক্তব্য রাখেন ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক দল বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর বিক্রম, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর, যুব বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নির্বাহী সম্পাদক রাশেদা বেগম হীরা, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক শফিউজ্জামান খোকন, সিনিয়র সহ-সভাপতি আবুুল বাশার, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।