পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ বেশ কয়েকটি দাবি নিয়ে কাল থেকে ফের আন্দোলনে নামছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার বরিশাল বিভাগীয় মহাসমাবেশের মাধ্যমে শুরু হওয়া এই আন্দোলন জোরদার করে দলের প্রধানকে কারামুক্ত করতে চায় সিনিয়র নেতারা। বরিশাল ছাড়াও আরও দুটি মহাসমাবেশের তারিখ চূড়ান্ত করেছে বিএনপি। আগামী ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে সকল বিভাগীয় শহরে সমাবেশ করার কথা জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপি সূত্রে জানা যায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভূমিধ্বস পরাজয়ের পর বেশিরভাগ নেতাকর্মী নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন। অন্যদিকে আইনি প্রক্রিয়ায় চেষ্টা করার পরও কারাবন্দি দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে পারেননি তারা। ফলে রাজপথে আন্দোলন করেই বেগম জিয়াকে কারামুক্ত করার চিন্তা করছে হাইকমান্ড। সেই আন্দোলনের আগে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনকে পুনর্গঠন করা হচ্ছে নতুন কমিটি ঘোষণার মাধ্যমে। অন্যদিকে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়া নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করতে বিভাগীয় শহরে মহাসমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সিনিয়র নেতারা। ইতোমধ্যে বরিশাল, চট্টগ্রাম ও খুলনা বিভাগের সমাবেশের তারিখ চূড়ান্ত হয়েছে। এর মধ্যে আগামীকাল বৃহস্পতিবার বরিশালে, ২০ জুলাই চট্টগ্রামে এবং ২৫ জুলাই খুলনায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। রাজশাহীতে ২৮, ২৯, ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে যেকোন দিন সমাবেশের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। বাকী বিভাগীয় শহরগুলোতেও আগামী ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে সমাবেশ করতে চায় বিএনপি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের ১৮ তারিখে বরিশালে, ২০ তারিখ চট্টগ্রাম ও ২৫ তারিখ খুলনায় সমাবেশ এ্রখন পর্যন্ত কনফার্ম করেছি। আমরা আশা করছি, আগামী ৩০ তারিখের মধ্যে বাকী বিভাগীয় শহরগুলো সমাবেশ করতে পারবো।
বিএনপি সূত্রে জানা যায়, বেগম জিয়ার মুক্তি আন্দোলন জোরদার ও নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করতে চায় বিএনপি। এলক্ষ্যেই বিভাগীয় শহরে সমাবেশ শুরু হচ্ছে। এর মাধ্যমে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আবারও জোরালো করা হবে। অন্যদিকে ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের পর তৃণমূলের নেতাকর্মী যারা হতাশ ও নিষ্ক্রিয়, তাদেরকে সক্রিয় করা ও সাহস যোগানো। সমাবেশ ছাড়াও ইতোমধ্যে জেলাগুলোতে নতুন কমিটি দিচ্ছে বিএনপি। এই দুই উদ্যোগে ফের নতুন করে উজ্জীবিত হয়ে ওঠেছে বিএনপি নেতাকর্মীরা। যেসব বিভাগে সমাবেশের তারিখ চূড়ান্ত হয়েছে, সেসব শহরে চলছে সাজ সাজ রব। নেতাকর্মীরা ব্যস্ত ওয়ার্ডে, ওয়ার্ডে, থানায়-থানায়, উপজেলায়-উপজেলায় প্রস্তুতি সভা করতে এবং বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে সমাবেশে টানতে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, আমরা আশা করছি এ সমাবেশের মধ্য দিয়েই ঝিমিয়ে পড়া তৃণমূল নেতাকর্মীরা আবার চাঙ্গা হবে। খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলন কর্মসূচি দিয়ে সরকারকে চাপে রাখতে চান তারা। পাশাপাশি আইনি লড়াইও চালিয়ে যাবেন। সরকার হস্তক্ষেপ না করলে শিগগিরই খালেদা জিয়া জামিনে মুক্তি পাবেন বলে আশা করছেন দলের নীতিনির্ধারকরা।
বরিশাল, চট্টগ্রাম ও খুলনা এলাকার নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মহাসমাবেশ উপলক্ষ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে স্থানীয় নেতাকর্মীরা। ইতোমধ্যে এসব এলাকার প্রতিটি জেলা, উপজেলা ও ওয়ার্ডে-ওয়ার্ডে প্রস্তুতি সভা করেছেন তারা। এসব সভায় অংশগ্রহণকারী নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে মহাসমাবেশে উপস্থিত হয়ে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করতে বলা হচ্ছে। খুলনা বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, বিভাগীয় সমাবেশ করতে খুলনার শহীদ হদিস পার্ক, জিইসি মোড়, শিববাড়ি মোড় ও সোনালি ব্যাংক চত্বরের জন্য অনুমতি চাওয়া হয়েছে। আশা করি সংশ্লিষ্টরা অনুমতি দিয়ে জনসভা সফল করতে সহায়তা করবেন। ইতোমধ্যে খুলনায় বিভাগীয় ও জেলাপর্যায়ের প্রস্তুতিমূলক সভা শেষ হয়েছে। এখন উপজেলা-থানা এবং ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সাথে প্রস্তুতি বৈঠক করছেন। তিনি জানান, সমাবেশ থেকে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও অবিলম্বে পুননির্বাচনের দাবি ও গ্যাসের বর্ধিত মূল্য প্রত্যহারের দাবি জানানো হবে।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম বলেন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমাবেশ সফল করতে সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন। ইতোমধ্যে বিভাগীয়, থানা-উপজেলা ও ওয়ার্ডের নেতাকর্মীদের সাথে প্রস্তুতিমূলক বৈঠক করেছেন। সমাবেশের জন্য চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দান ও নাসিমন ভবন দলীয় কার্যালয়ের সামনে অনুমতি চাওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম স্থানে তাদেরকে সমাবেশের অনুমতি দেয়া হবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন। তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় শহরের সমাবেশে আমাদের নেত্রীর মুক্তিই আমাদের প্রধান দাবি। পাশাপাশি এই অবৈধ সংসদ ভেঙে দিয়ে অবিলম্বে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানাবে চট্টগ্রামবাসী।
রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, রাজশাহীতে প্রস্তুতি সভা করেছি। সে সভায় আগামী ২৮, ২৯ ও ৩০ জুলাইয়ের যে কোন একদিন সমাবেশ করার জন্য অনুমতি চেয়ে পুলিশকে চিঠি দেয়া হয়েছে। মাদরাসা মাঠ ও সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টের যেকোন একটিতে অনুমতি চাওয়া হয়েছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকারের বিকট অমানবিকতা, নির্দয়-নিষ্ঠুরতার কোপানলে পড়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এখন কারাগারে, তিনি গুরুতর অসুস্থ। দেশের সর্বস্তরের মানুষের প্রাণপ্রিয় নেত্রীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আগামী ১৮ জুলাই বরিশাল, ২০ জুলাই চট্টগ্রাম ও ২৫ জুলাই খুলনায় মহাসমাবেশ কর্মসূচী সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। জেলা-উপজেলায় প্রস্তুতি সভা হচ্ছে। এই শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশগুলোতে যোগ দিতে মানুষের আগ্রহের কোন কমতি নেই। মহাসমাবেশ ঘিরে সাধারণ জনগণের অভাবনীয় সাড়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ###
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।