পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শ্রমবাজারসহ খুলে যেতে পারে বাংলাদেশে সউদী বিনিয়োগের দ্বার
কূটনীতিক সংবাদদাতা : জেদ্দা নগরীর আল আন্দালুসে সউদী বাদশাহর আল সালাম প্রাসাদেই আজ রোববার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বি-পক্ষীয় বৈঠক হবে সউদী বাদশাহ সালমানের। বহু আকাঙ্খিত এ বৈঠকেই বাংলাদেশের বিনিয়োগ এবং শ্রমবাজারসহ নানান সিদ্ধান্ত হতে পারে।
খুলে যেতে পারে বাংলাদেশে সউদী বিনিয়োগের দ্বার। এদিকে পবিত্র ওমরা পালন শেষে হারাম শরীফে ফজরের নামাজের মাধ্যমে গতকাল দিনের কর্মসূচি শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ম্ক্কা থেকে গতকাল বিকেলে জেদ্দা নগরীতে ফিরেন তিনি। বিকালে জেদ্দা থেকেই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি রিয়াদে বাংলাদেশের চ্যান্সেরি কমপ্লেক্স এবং বাংলাদেশ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। আজ রোববার জেদ্দা নগরীর আল আন্দালুসে সউদী বাদশাহর আল সালাম প্রাসাদে যাবেন শেখ হাসিনা। আল সালাম প্রাসাদেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বি-পক্ষীয় বৈঠক হবে সউদী বাদশাহ সালমানের। সেখানে দ্বি-পক্ষীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় ছাড়াও আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা হবে উভয়ের মধ্যে। বৈঠকে সউদী আরবে বাংলাদেশের শ্রমবাজার সম্প্রসারণ, দ্বি-পক্ষীয় ব্যবসা-বাণিজ্য, বিভিন্ন প্রকল্পে সউদী সহযোগিতা বাড়ানো এবং হজ ব্যবস্থাপনার মতো বিষয়গুলো আলোচনায় প্রাধান্য পাবে। এছাড়াও আজ জেদ্দা রয়্যাল কনফারেন্স প্যালেসে বেশ কয়েকজন সউদী মন্ত্রী ও সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং ব্যবসায়ী নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। একই দিন রয়্যাল প্যালেসে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন সউদী সরকারের প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপমন্ত্রী সালমান বিন সুলতান আলে সউদ এবং সউদী বাদশাহর রয়্যাল কাউন্সিলের উপদেষ্টা ইয়াসের আলে মিয়া। এছাড়াও আজ প্রধানমন্ত্রীর সফরকালীন আবাসস্থল জেদ্দা কনফারেন্স প্যালেসে বেশ কয়েকজন সউদী মন্ত্রী এবং সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে।
সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রী জেদ্দা থেকে বিমানে মদিনায় যাবেন এবং সেখানে মদিনা হিলটন হোটেলে অবস্থান করবেন। সেখানে তিনি মসজিদে নব্বীতে আসর এবং মাগরিবের নামাজ একসঙ্গে আদায় করে হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর রওজা মোবারক জিয়ারত করবেন। মদিনার প্রিন্স মোহাম্মাদ বিন আব্দুল আজিজ বিমানবন্দর থেকে মঙ্গলবার সউদী সময় সকাল সাড়ে ১০টায় দেশের উদ্দেশ্যে মদিনা ত্যাগ করবেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় তিনি এবং তার সফর সঙ্গীদের ঢাকা ফেরার কথা।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার রাত পৌনে ১টায় প্রধানমন্ত্রী তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে জেদ্দা থেকে মক্কায় পৌঁছান। হারাম শরীফ সংলগ্ন মক্কা গেস্ট প্যালেসে কিছুক্ষণ অবস্থানের পর প্রধানমন্ত্রী সঙ্গীদের নিয়ে হারাম শরিফে যান। এরপর হারাম শরিফে পরিবারের সদস্য ও সফরসঙ্গীদের নিয়ে মধ্যরাতের পর কাবাঘর তওয়াফ শুরু করেন। ওমরাহ শেষে প্রধানমন্ত্রী দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায় করেন এবং দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় মোনাজাতে অংশ নেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী সাফা-মারওয়া প্রদক্ষিণ করেন। মক্কায় প্রধানমন্ত্রী ফজরের নামাজ আদায় করেন। ওমরাহ পালনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানা ও কয়েকজন আত্মীয়। ওমরাহ পালন শেষে প্রধানমন্ত্রী মক্কা গেস্ট প্যালেসে অবস্থান করেন।
এর আগে সউদী আরবের স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী জেদ্দার কিং আব্দুল আজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে দেশটির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন নায়েফ বিন আবদুল আজিজ তাকে অভ্যর্থনা জানান। এরপর সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অফ অনার দেয়। এ সময় তাকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয়। পরে ক্রাউন প্রিন্স নায়েফ প্রধানমন্ত্রীকে বিমানবন্দর থেকে কিং ফয়সাল প্যালেসে নৈশভোজে নিয়ে যান।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব সাংবাদিকদের বলেন, নৈশভোজে শেখ রেহানা ও মাহমুদ আলীসহ সউদী আরবের হজ- ওমরাহ মন্ত্রী মোহাম্মদ সালেহ বিন তাহের বেনতেন, ওআইসি’র মহাসচিব ইয়াদ বিন আমিন মাদানি, আইডিবির প্রেসিডেন্ট আহমেদ মোহাম্মদ আলি আল মাদানিও অংশ নেন। নৈশভোজ শেষে জেদ্দা কনফারেন্স প্যালেসে আসেন শেখ হাসিনা। জেদ্দায় সেখানেই অবস্থান করবেন তিনি।
এছাড়াও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, সউদী আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং ওআইসিতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি গোলাম মসীহ, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক, প্রেস সচিব ইহসানুল করিম, বিশেষ সহকারী আবদুস সোবহান গোলাপ, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীনসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা এবং বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান, এফবিসিসিআই সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদসহ প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরাও ওমরাহ পালনে অংশ নেন।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০০৯ সালে তৎকালীন সউদী বাদশাহ আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল আজিজের আমন্ত্রণে সউদী আরব সফর করেন শেখ হাসিনা। ২০১৩ সালের নভেম্বরেও ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে আরও একবার দেশটিতে যান তিনি। তবে বর্তমান সউদী বাদশাহ সালমান দায়িত্ব নেয়ার পর মধ্যপ্রাচ্যের এই তেলসমৃদ্ধ দেশে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর এটাই প্রথম সফর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।