পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ হেভিওয়েট বক্সার, বিংশ শতাব্দীর আইকন মোহাম্মদ আলী আর নেই। শনিবার ভোরে যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো তিনবারের হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন কিংবদন্তি এই বক্সারের ইন্তেকালের খবর নিশ্চিত করেছে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। দীর্ঘদিন ধরে মোহাম্মদ আলী পারকিনসন রোগে ভুগছিলেন। সপ্তাহের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ আরিজোনার ফিনিক্স হাসপাতলে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার কারণে তাকে ভর্তি করা হয়। গত কয়েকদিন তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল বলে হাসপাতাল সূত্র নিশ্চিত করেছে। শুক্রবার সকাল থেকেই মোহাম্মদ আলীর অবস্থার অবনতি হতে থাকে। শুধু বক্সিং রিঙেই তিনি জনপ্রিয় ছিলেন না, সেবামূলক কর্মকা-ে নিজেকে জড়িয়ে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক সমাদৃত হয়েছিলেন।
সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যায় প্রায়ই তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ২০১৪ সালে একবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। সর্বশেষ গত বছর মারাত্মক মূত্রনালীর সংক্রমণে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে যেতে হয়েছিল তাকে। দীর্ঘদিন যাবৎ পারকিনসন রোগে আক্রান্ত হয়ে তার কথা বলার ক্ষমতা অনেকটাই কমে গিয়েছিল। সকলের সাথে না হলেও পরিবারের সদস্যদের সাথে তিনি নিজের ইচ্ছা বা মতামত ভাগাভাগি করতে পারতেন। এপ্রিল মাসে ফিনিক্সে একটি সেলেব্রেটি ফাইট নাইট ডিনারে তিনি অংশ নিয়েছিলেন, যেখান থেকে আয়কৃত অর্থ পারকিনসন রোগীদের চিকিৎসার কাজে ব্যয় করা হয়।
৩০ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে মোহাম্মদ আলীকে বিশ্ব প্রথম চিনতে শুরু করে ১৯৬০ সাল থেকে। ১৯৮১ সালে অবসর গ্রহণের আগ পর্যন্ত তার ক্যারিয়ার রেকর্ড ছিল ৫৬-৬। এর মধ্যে ১৯৭৪ সালে মধ্য আফ্রিকার জায়ারের কিনশাসাতে জর্জ ফোরম্যানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক বাউটের কাহিনী তো বিশ্ববাসীর কাছে এখনো সমুজ্জ্বল। ‘রাম্বেল ইন দ্য জাঙ্গেল’ নামে যা পরিচিত ছিল। এছাড়া সনি লিস্টন ও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী জো ফ্রেজিয়ারকে নক আউট করে দিয়ে মোহাম্মদ আলী তোলপাড় ফেলে দিয়েছিলেন।
ফ্রেজিয়ার মারা গেছেন ২০১১ সালে, আর এবার আলীকে হারিয়ে ফোরম্যান টুইটারে লিখেছেন, ‘আলী, ফ্রেজিয়ার ও আমি একই সত্তা। এর মধ্যে শুধু আমিই রয়ে গেলাম...।’ সাবেক হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন মাইক টাইসনও মোহাম্মদ আলীর ইন্তেকালে তাৎক্ষণিকভাবে শোক জানিয়েছেন। ১৯৯৬ সালে আটলান্টা অলিম্পিকের মশাল বহনের কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন মোহাম্মদ আলী। ১৯৯৮ সালে জাতিসংঘের শান্তিদূত হিসেবে তাকে মর্যাদা দেয়া হয় এবং ২০০৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সিভিলিয়ান অনার ‘প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম’ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। এখন পর্যন্ত তিনিই একমাত্র মুষ্টিযোদ্ধা যিনি তিনবার বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ানের শিরোপা জয় করেন।
১৯৯৯ সালে শ্রোতা/দর্শকদের সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে তিনি বিবিসি আয়োজিত শতাব্দীর সেরা ক্রীড়া ব্যক্তিত্বের সম্মান অর্জন করেন। মোহাম্মদ আলী নিজেকে বলতেন ‘দ্য গ্রেটেস্ট’ অর্থাৎ সবার সেরা।
বক্সিং রিঙে তিনি প্রজাপতির মত দুলে দুলে উড়তেন আর বোলতার মত আঘাত করতেন প্রতিপক্ষকে। জন্ম ক্যাসিয়াস ক্লে নামে, ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন ষাটের দশকে। তার জন্ম হয়েছিল ১৯৪২ সালের ১৭ জানুয়ারি, ক্যাসিয়াস মার্সেলাস ক্লে হিসেবে কেনটাকি রাজ্যের লুইভিল শহরে। ক্যাসিয়াস ক্লে ১৯৬৪ সালে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে নাম বদলে রাখেন মোহাম্মদ আলী। তিনি প্রথম সবার নজর কাড়েন ১৯৬০ সালে রোম অলিম্পিকে। সেখানে তিনি স্বর্ণপদক জয় করেন। এর চার বছর পর সনি লিস্টনকে হারিয়ে তিনি প্রথমবারের মতো বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন হন। সেই শিরোপা জয়ের ঠিক পরদিন তিনি ঘোষণা করেন, তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। ভিয়েতনাম যুদ্ধকে মোহাম্মদ আলী অনৈতিক বলে মনে করতেন। সে কারণে আমেরিকান হিসেবে ঐ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে তিনি অস্বীকৃতি জানান। তার এই নৈতিক অবস্থানের জন্য মার্কিন কর্তৃপক্ষ সে সময় তার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ানের শিরোপা কেড়ে নিয়েছিল। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রায় আড়াই বছর ধরে আইনি লড়াই চলেছিল। এরপর মোহাম্মদ আলী আবার বক্সিং রিঙে ফিরে আসেন এবং জর্জ ফোরম্যানকে পরাজিত করে আবার বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন হন।
তৎকালীন জায়ারের (বর্তমান নাম গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র) রাজধানী কিনসাসায় ১৯৭৪ সালে হওয়া এই প্রতিযোগিতার আরেকটি জনপ্রিয় নাম ‘রাম্বেল ইন দা জাঙ্গেল’। এরপর মোহাম্মদ আলীকে অনেকেই চ্যালেঞ্জ করেন এবং একসময় তিনি লিওন স্পিংক্সের কাছে পরাজিত হন। কিন্তু ফিরতি ম্যাচে তাকে আবার পরাজিত করে মোহাম্মদ আলী তিনবার বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন হয়ে ইতিহাস তৈরি করেন। মোহাম্মদ আলী বেশ পরিণত বয়সে মুষ্টিযুদ্ধ থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
বিশ্বব্যাপী শোকের ছায়া
শতাব্দীর সেরা ক্রীড়াবিদ বক্সার ‘দ্য গ্রেটেস্ট’ মোহাম্মদ আলীর ইন্তেকালে শোকাহত গোটা বিশ্ব। বিবৃতি-ক্ষুদে বার্তায় মোহাম্মদ আলীর রুহের মাগফিরাত কামনা করছেন বিশ্বের নেতা ও তারকা ব্যক্তিত্বরা। তারা একইসঙ্গে সমবেদনা জানাচ্ছেন মরহুম মোহাম্মদ আলীর পরিবার ও শুভানুধ্যায়ীদেরও।
বক্সিং কিংবদন্তির মৃত্যুর খবর পেয়েই শোকের ভারে নুয়ে পড়েন বিশ্বনেতা ও তারকা ব্যক্তিত্বরা। শোকের ছায়া নেমে আসে ফেসবুক-টুইটার-ইনস্টাগ্রামসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন তৎক্ষণাৎ তার বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা তাকে একইসঙ্গে দেখেছি নির্ভীক, তরুণদের প্রেরণা, অভাবীদের জন্য দরদি এবং নিজের ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য নিয়ে জটিলতার মধ্যেও দৃঢ় ও দারুণ মজার মানুষ হিসেবে।’
আরেক কিংবদন্তি বক্সার মাইক টাইসন তার টুইটার বার্তায় বলেন, ‘স্বয়ং ঈশ্বর এসেছিলেন চ্যাম্পিয়ন হতে। আলী ছিলেন একজন মহান বক্সার...!’
আলীর ‘রাম্বেল ইন দ্য জাঙ্গাল’ লড়াইয়ের প্রতিদ্বন্দ্বী ও তার বন্ধু বক্সার জর্জ ফোরম্যান বলেন, ‘মোহাম্মদ আলী চলে যাওয়ায় যেন আমার একটি অঙ্গ হারিয়ে গেল। তিনি আমার জীবনে অমূল্য রতন।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মনোনয়নপ্রত্যাশী ডোনাল্ড ট্রাম্প তার টুইটার বার্তায় বলেন, ‘মাত্র ৭৪ বছর বয়সে চলে গেলেন মোহাম্মদ আলী। তিনি ছিলেন সত্যিকারের একজন চ্যাম্পিয়ন। আমরা সবাই তাকে মিস করব।’
রাগবি খেলোয়াড় জারেড হেন টুইটারে বলেন, ‘মোহাম্মদ আলী ছিলেন সবার অনুপ্রেরণা। তার আত্মার শান্তি কামনা করছি।’
আরেক বক্সার ফ্র্যাঙ্ক ব্রুনো টুইট করেন, ‘মনুষ্যত্বের ঈশ্বর তিনি। কাছের মানুষ বন্ধু। তাকে দেখে অনুপ্রেরণা পাই।’
স্প্রিন্টার ক্যাথি ফ্রিম্যান তার টুইটার বার্তায় বলেন, ‘তিনি বিশ্বের একজন মহান মানুষ। তার নাম ও খ্যাতি সারাজীবন মনে রাখবে মানুষ।’
বক্সার অস্কার দে লা হোয়া টুইট করেন, ‘তিনি একজন কিংবদন্তি। আলী বক্সিংয়ে বিপ্লব এনে দিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন সত্যিকারের চ্যাম্পিয়ন।’
মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে তোলা একটি ছবি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করে সংগীতশিল্পী ম্যাডোনা বলেন, ‘কী হচ্ছে সব? আমরা আমাদের জাতীয় বীরদের হারিয়ে ফেলছি। আমাদের মানবতার স্তম্ভ¢ ছিলেন তিনি। তিনি ছিলেন দ্য গ্রেটেস্ট।’
ভারতীয় ক্রিকেটার বীরেন্দর শেওয়াগ তার টুইটার বার্তায় মোহাম্মদ আলীর একটি বাণী উদ্ধৃত করে তাকে চ্যাম্পিয়ন বলে স্মরণ করেন। এছাড়া বিশ্বের সব দেশের সর্বস্তরের শ্রেণি-পেশার মানুষ শোক জানাচ্ছেন মোহাম্মদ আলীর মৃত্যুতে। তারা মরহুম মোহাম্মদ আলীর রুহের মাগফিরাতও কামনা করছেন।
বাংলাদেশে মোহাম্মদ আলী
মোহাম্মদ আলী ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ সফর করেন। সরকারের আমন্ত্রণে পাঁচ দিনের এই সফরের সময় তাকে বিপুল সংবর্ধনা দেয়া হয় এবং সম্মানসূচক নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়। সারা বিশ্বের মত বাংলাদেশেও রয়েছে তার কোটি ভক্ত। বিশেষ করে ১৯৭৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্ত্রী ভেরোনিকাসহ সপ্তাখানেকের বাংলাদেশ ভ্রমণ ছিল এদেশের জনগণের জন্য একটি দারুণ অর্জন। ঐ সফরে আলীকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়েছিল। সফরকালে তিনি তৎকালীন ঢাকা স্টেডিয়ামে এক প্রদর্শনী লড়াইয়ে অংশ নেন। তার প্রতিপক্ষ ছিল ১২ বছর বয়সী মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন।
বাংলাদেশের প্রতি ভালবাসা থেকে আলী বারবার এখানকার সৌন্দর্যের প্রশংসা করেছেন। এমনকি দেশে ফিরে গিয়ে বাংলাদেশ ভ্রমণ নিয়ে নির্মিত একটি তথ্যচিত্রে তিনি কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘কেউ যদি স্বর্গে যেতে চায় তবে তাকে বাংলাদেশে গেলেই চলবে।’
১৯৭৯ সালে বিবিসি বাংলার লন্ডন স্টুডিওতে গিয়েছিলেন মুহাম্মদ আলী। বিবিসি বাংলার লন্ডন স্টুডিওতে তার সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন সেসময় বিবিসি বাংলার প্রযোজক শ্যামল লোধ। ওই সাক্ষাৎকারের এক অংশে বিবিসি বাংলার শ্রোতাদের বাংলায় অভিনন্দন জানিয়েছিলেন কিংবদন্তি এই মুষ্টিযোদ্ধা।
প্রেসিডেন্টের শোক
প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ বক্সিংয়ের কিংবদন্তি মোহাম্মদ আলীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। গতকাল এক শোক বাণীতে প্রেসিডেন্ট বক্সার মোহাম্মদ আলীর তিনবার ওয়ার্ল্ড হেভিওয়েট বক্সিং চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কথা স্মরণ করে তাকে এ যাবৎ কালের সর্বশ্রেষ্ঠ বক্সার হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘মোহাম্মদ আলীর মৃত্যুতে বিশ্বের ক্রীড়াজগতের এক অপূরণীয় ক্ষতি হলো। তার নাম অমর হয়ে থাকবে।’ প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আলীর রূহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের গভীর সমবেদনা জানান।
প্রধানমন্ত্রীর শোক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বকালের সেরা বক্সার হিসেবে পরিচিত মোহম্মদ আলীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। পাঁচ দিনের সরকারি সফরে সউদী আরবে অবস্থানকারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক শোক বাণীতে মোহম্মদ আলীর তিন দশকের বক্সিং ক্যারিয়ারে তিনবার বিশ্ব হেভিওয়েট বক্সিং চ্যাম্পিয়নের অবিশ্বাস্য পারফরমেন্স স্মরণ করেন। বাণীতে তিনি বলেন, মোহাম্মদ আলী ছিলেন সর্বকালের সেরা বক্সার এবং তিনি বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে বক্সিংকে জনপ্রিয় ইভেন্টে পরিণত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
তিনি বলেন, পাশাপাশি মোহাম্মদ আলী ছিলেন মহান ব্যক্তিত্বদের একজন। তিনি সারা বিশ্বে বঞ্চিত ও নির্যাতিতদের অধিকার আদায়ে ছিলেন সব সময়ে সোচ্চার।
নাগরিকত্ব দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান : শোকবার্তায় খালেদা জিয়া
বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া খ্যাতনামা মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলীর ইন্তেকালে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। বিএনপি প্রধান গতকাল বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় এই শোক প্রকাশ করেন। বেগম খালেদা জিয়া বলেন, খেলাধুলার ইতিহাসে কিংবদন্তী মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের অধিকারী মানুষ হিসেবে অভিহিত হবেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনবারের হেভিওয়েট বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন প্রবাদপ্রতিম এই মুষ্টিযোদ্ধা অবহেলিত মানুষের পাশে দাঁড়াতেন নির্দ্বিধায়। সমাজকর্মে তার নিঃস্বার্থ আত্মনিবেদন সকল মানুষের জন্য উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে উল্লেখ করে বিএনপির চেয়ারপার্সন আরও বলেন, বর্ণবাদ, যুদ্ধ ও রক্তপাতকে তিনি মনেপ্রাণে ঘৃণা করতেন এবং এর বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন অকুতোভয় সোচ্চার। শান্তির স্বপক্ষে তার আপসহীন সংগ্রাম আজও আমাদের সকলের জন্য প্রেরণা। তিনি বলেন, এই কিংবদন্তি মুষ্টিযোদ্ধাকে ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশে নিয়ে এনে নাগরিকত্ব দিয়ে সম্মানিত করেছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। বেগম খালেদা জিয়া বিশ্বসেরা মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলীর রূহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকাহত পরিবার, নিকটজন, যুক্তরাষ্ট্রবাসীসহ সারাবিশ্বের কোটি কোটি শোকাহত ভক্ত, অনুরাগীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
অপর এক শোকবার্তায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও মুষ্টিযুদ্ধে শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপাজয়ী মোহাম্মদ আলীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
এরশাদের শোক
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বিশ^খ্যাত (বক্সার) মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী’র মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। গতকাল এক শোক বিবৃতিতে এরশাদ বলেন, মোহাম্মদ আলী শুধু একজন বিশ^খ্যাত মুষ্টিযোদ্ধাই ছিলেন না, তিনি ছিলেন একজন মানবতার প্রতীক। তিনি বলেন, ১৯৭৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় ক্রীড়া বোর্ডের আমন্ত্রণে মোহাম্মদ আলী যখন বাংলাদেশে আসেন, তখন সৌভাগ্যক্রমে জাতীয় ক্রীড়া নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলাম আমি। সেদিন বাংলাদেশের মানুষ মোহাম্মদ আলীকে অত্যন্ত আপনভাবে গ্রহণ করেছিলেন। বিশ^খ্যাত এই মুষ্টিযোদ্ধা বাংলাদেশের অগণিত মানুষের অন্তরের মণিকোঠায় আজীবন বেঁচে থাকবেন বলে তিনি বিবিৃততে আশা প্রকাশ করেন। এরশাদ মরহুমের রূহের শান্তি ও মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। সূত্র : এএফপি, বিবিসি, বাসস, রয়টার্স ও সিএনএন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।