Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জরিপ চালাবে সরকার

প্রকাশের সময় : ৪ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সাখাওয়াত হোসেন বাদশা : ভারতের মত দেশেও বিদ্যুতের ওপর জরিপ চালাতে যাচ্ছে সরকার। এজন্য বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ মন্ত্রণালয়কে এ ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েছেন।
মন্ত্রণালয় থেকে জানা যায়, দেশে প্রকৃত অর্থে কী পরিমাণ বিদ্যুৎ প্রয়োজন, কতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোর কোনটার কী অবস্থা, সঞ্চালন ও বিতরণ লাইনের বর্তমান অবস্থা কী- এসব বিষয় এই জরিপে উঠে আসবে।
এছাড়াও জরিপে গ্রাহক দুর্ভোগ কেন হচ্ছে এবং দুর্ভোগ লাঘবে কী ধরনের পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন এসব বিষয়ও তুলে ধরা হবে। জরিপে আরও থাকবে-গ্যাসের বর্তমান অবস্থা এবং গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো আর কতদিন চলতে পারে, এসব বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে ডুয়েল-ফুয়েল করা যায় কী না, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলা এবং আর কী ধরনের বিকল্প জ্বালানি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়- এসব বিষয়ও উঠে আসবে এই জরিপে। দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন নিয়ে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) যে তথ্য দেয়- তা কতটুকু সঠিক এ নিয়ে খোদ বিদ্যুৎ বিভাগেরই প্রশ্ন রয়েছে। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ইতোপূর্বে একাধিকবার বলেছেন, পিডিবি দেয়া তথ্য কতটুকু সঠিক তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। আর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ম. তামীম বলেন, পিডিবি’র দেয়া তথ্যে শুভঙ্করের ফাঁকি রয়েছে। সেকারণেই পিডিবি উৎপাদন ও চাহিদার যে তথ্য জানায় সেটাকে প্রকৃত হিসাব ধরলে দেশে লোডশেডিং থাকার কথা নয়। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে- রাজধানীর বাইরে জেলা শহরগুলোতে ব্যাপক লোডশেডিং হচ্ছে।
পিডিবি সূত্র জানায়, গরমের কারণে কয়েক দিন ধরে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে। গতকাল চাহিদা ছিল প্রায় ৮ হাজার মেগাওয়াট। এই পরিমাণ উৎপাদনও হয়েছে। এ হিসাবে দেশে কোন লোডশেডিং হওয়ার কথা নয়। কিন্তু ঢাকার বাইরে শুক্রবারেও লোডশেডিং ছিল তীব্র। ঢাকায় বিদ্যুৎ বিতরণকারী দুটি কোম্পানি ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি) ও ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি (ডেসকো) সূত্র জানায়, তারা চাহিদা মোতাবেক বিদ্যুৎ সরবরাহ পায় না। ফলে কয়েক দিন ধরে এই দুটি কোম্পানির মোট লোডশেডিং হচ্ছে প্রায় ৩০০ মেগাওয়াট। আর পল্লী বিদ্যুতের (আরইবি) আওতাধীন বিস্তীর্র্ণ গ্রামাঞ্চলের অবস্থা বেশ খারাপ। আরইবি’র এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, তারা গড় লোডশেড করেছে ১ হাজার মেগাওয়াটের ওপরে।
বিদ্যুতের এমন দুরবস্থায় এই খাতের ওপর সরকার জরিপ চালালে প্রকৃত তথ্যই বেরিয়ে আসবে। অনেকেই মনে করছেন, দেশে প্রথমবারের মতো বিদ্যুৎ জরিপ চালানোর উদ্যোগ সরকারের একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত বলেই বিবেচিত হবে। এই উদ্যোগের মধ্যে বেরিয়ে আসবে- সরকার আরও কী ধরনের ব্যবস্থা নিলে উৎপাদন আরও ভাল হবে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, এর আগে পাওয়ার প্লান্টের বিষয়ে ইঞ্জিনিয়াররা আমাদেরকে বেশ কিছু ভুল তথ্য দিয়েছিলেন। তারা বলেছিলেন, পাওয়ার প্লান্টগুলো নষ্ট। তবে এখন দেখা যাচ্ছে, সেখানে কয়লার ময়েশ্চারের সমস্যা রয়েছে। সেগুলো পুরোপুরি নষ্ট নয়। নিয়মিত জরিপ হলে এরকম ভুল তথ্য আর উপস্থাপিত হবে না।
নসরুল হামিদ বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশেও বিদ্যুতের জরিপ করা হয়। ভারতে এ জরিপ প্রক্রিয়া প্রতি দু’বছর পর পর করা হয়। কিন্তু আমাদের দেশে এর আগে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। আশা করি, এ উদ্যোগের মাধ্যমে সুফল পাওয়া যাবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জরিপ চালাবে সরকার
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ