Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অচেনা আষাঢ়ের তিন সপ্তাহ পার

শফিউল আলম | প্রকাশের সময় : ৫ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৭ এএম

ঢাকা, রংপুর ও খুলনা বিভাগীয় শহরে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় কোনো বৃষ্টিপাতই হয়নি। চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল ও ময়মনসিংহ শহরে এ সময় বৃষ্টিপাতের পরিমান মাত্র ১১ থেকে ৪ মিলিমিটার পর্যন্ত। যার মানে ছিটেফোঁটা ও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে এবার ভিন্ন রূপে অচেনা এক আষাঢ়। বর্ষার মৌসুমী বায়ু বিস্তার লাভ করেছে দেশজুড়ে। অথচ আষাঢ় মাসের তিন সপ্তাহেও মৌসুমী বায়ু সক্রিয় নয়। কার্যত স্থির অবস্থায় রয়েছে। আষাঢ়ের গেল ২০ দিনে বৃষ্টিপাতের স্বাভাবিকের চেয়ে অর্ধেকেরও নিচে। স্মরণকালের মধ্যে গ্রীষ্মের দীর্ঘতম তাপপ্রবাহে পুড়ছে বাংলাদেশসহ সমগ্র উপমহাদেশ।

আর এভাবেই ভরা বর্ষায় খরতপ্ত আষাঢ় মাসের ২০ তারিখও পার হলো গতকাল। তাপমাপক সর্বোচ্চ পারদ ছিল যশোরে ৩৫.৮ ডিগ্রি সে.। ঢাকার পারদ সর্বোচ্চ ৩৪.৫ এবং ২৭.৬ ডিগ্রি সে.। ভরা বর্ষার ‘স্বাভাবিক’ বর্ষণ কবে শুরু হবে এ সম্পর্কে আবহাওয়া বিভাগও সুনির্দিষ্ট কিছু জানাতে পারছে না। মিলছে না বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাসও।
অসময়ে ভ্যাপসা গরম আর টানা তিন-চার মাসের খরা, অনাবৃষ্টি, তাপদাহে বাংলাদেশের কৃষি-খামার, জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ-প্রকৃতির ওপর পড়েছে মারাত্মক বিরূপ প্রভাব। দেশের সর্বত্র মানুষ ভাইরাস জ¦র, সর্দি-কাশি, ডায়রিয়া, চর্মরোগ, ডেঙ্গুজ্বরসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। হাসপাতাল ক্লিনিকগুলোতে প্রতিদিনই চোখে পড়ছে রোগীর ভিড়। তাছাড়া বিশুদ্ধ খাবার পানির সঙ্কট তীব্র হয়ে উঠেছে। পানির উৎসগুলো শুকিয়ে তলায় ঠেকেছে। ভ‚গর্ভস্থ পানির স্তর ক্রমাগত নিচে নেমে যাচ্ছে।

ট্রপিক্যাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. মো. আবুল কালাম দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, স্বাভাবিক বর্ষাকালীন বৃষ্টি হচ্ছে না। এ কারণে ভ্যাপসা গরম বিরাজ করছে। টানা খরতাপে ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে বিভিন্ন রোগব্যাধির প্রকোপ দেখা দিয়েছে। বর্তমান বৈরী জলবায়ু-প্রকৃতির কারণে মানুষের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা হ্রাস অথবা হারিয়ে যাচ্ছে। মানুষের উৎপাদন ক্ষমতাও হ্রাস পাচ্ছে।

আবহাওয়া বিভাগ জানায়, প্রথমে উত্তর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি সরে গিয়ে ভারতের মধ্য প্রদেশে সুস্পষ্ট লঘুচাপ থাকাকালে দুর্বল হয়ে গেছে। এটি মৌসুমী বায়ুর অক্ষের সাথে মিলিত হয়েছে। একইভাবে গত জুন মাসেও সাগরে একাধিক মৌসুমী লঘুচাপ ঘনীভূত না হতেই দুর্বল অথবা ভারতের দিকে কেটে পড়ে। বর্তমানে বর্ষারোহী মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারী থেকে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।

আজ (শুক্রবার) সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাস মতে, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় বৃষ্টিপাত হতে পারে। রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরণের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।

সারাদেশে দিন-রাতে তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। অবশ্য গতকাল বিচ্ছিন্ন-বিক্ষিপ্তভাবে টেকনাফে ৯০, কক্সবাজারে ৫৫, খেপুপাড়ায় ৮১ মিলিমিটার ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ ঝরেছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অচেনা আষাঢ়
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ