পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
২৪ ঘণ্টা সিএনজি খোলা থাকবে ১০ দিন
স্টাফ রিপোর্টার : এবারের ঈদুল-ফিতর ফিতর উপলক্ষে ঈদের আগে ৩ দিন ও পরে ৩ দিন মহাসড়কে যান চলাচল সীমিত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সিএনজি স্টেশনগুলো ১ জুলাই থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত (১০ দিন) ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার হবে। গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাজধানীর একটি হোটেলে আসন্ন পবিত্র ঈদল-ফিতর উপলক্ষে সড়ক, নৌ ও রেলপথে যাতায়াতকারী যাত্রী সাধারণের যাতায়াত নির্বিঘœ করতে প্রস্তুতি সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সভার সভাপতি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এ বছর হাতে সময় রেখেই ঈদের প্রস্তুতি সভা আহ্বান করা হয়েছে, যাতে ঈদে ঘরমুখো মানুষের চলাচল নির্বিঘœ করতে সভায় উত্থাপিত সমস্যাদি সমাধানের সময় পাওয়া যায়। সভার সিদ্ধান্তসমূহ গতানুগতিক হলেও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া যেন গতানুগতিক না হয়। জনগণের স্বাচ্ছন্দ্যে ও উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদ উদযাপনে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে সকলকে সচেষ্ট হতে আহ্বান জানান তিনি।
সভায় গৃহিত সিদ্ধান্তসমূহের মধ্যে রয়েছে, জনস্বার্থ বিবেচনায় ও যানজট নিরসনে পবিত্র ঈদের আগের ৩ দিন ও পরের ৩ দিন সকল মহাসড়কে ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও লরী চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য, পঁচনশীল দ্রব্য, গার্মেন্টস সামগ্রী, ওষুধ, কাঁচা চামড়া এবং জ্বালানি বহনকারী যানবাহনসমূহ এর আওতামুক্ত থাকবে। সিএনজি স্টেশনগুলো ১ জুলাই থেকে ১০ জুলাই মোট ১০ দিন ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা হবে। ঘরমুখো যাত্রিদের অত্যাধিক চাপ কমানোর লক্ষ্যে গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষকে ভিন্ন ভিন্ন দিনে ছুটি প্রদান করতে এবং ভিন্ন ভিন্ন দিনে খুলতে এ সভা থেকে অনুরোধ করা হয়।
চাঁদাবাজি বন্ধ: বাস টার্মিনাল ও মহাসড়কে চাঁদাবাজি বন্ধে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আলাদাভাবে কাজ করছে। একই সাথে ঘরে ফেরা মানুষের যাতায়াত নির্বিঘœ করার জন্য সড়কপথে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, পকেটমার, মলম পার্টি, অজ্ঞান পার্টির দৌরাত্ব্য রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। নৌ-পথ ও রেলপথেও অনুরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ঈদ উপলক্ষে ১ থেকে ১০ জুলাই ২০১৬ সময়ে সড়কপথে যাতায়াতকারী যানবাহন সুনির্দিষ্ট পূর্ব তথ্য ব্যতিত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক সড়কের উপর থামানো যাবে না।
ভিজিলেন্স টিম: বাসযাত্রীদের নিকট থেকে অনুমোদিত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া দাবী/আদায় করা যাবে না। ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রি/মালামাল বহন করা যাবে না। সায়েদাবাদ, মহাখালী ও গাবতলী বাস টার্মিনাল এবং ঢাকার বিভিন্ন স্থান হতে ছেড়ে যাওয়া ও আগত গাড়ীগুলো যাতে যানজট ব্যতীত ঢাকা মহানগরীতে প্রবেশ ও বাহির হতে পারে তা নিশ্চিত করতে পৃথক ৩টি ভিজিলেন্স টিম কাজ করবে। ভিজিলেন্স টিম প্রতিটি বাস টার্মিনালে সার্বক্ষণিক অবস্থান করবে। বিভাগীয় শহর ও পুরাতন জেলা শহরেও অনুরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
যানজট ও দুর্ঘটনামুক্ত রাখা: ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-ময়মনসিংহ, ঢাকা-টাঙ্গাইল, ঢাকা-মানিকগঞ্জ-আরিচা, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-মাওয়া ইত্যাদি জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে বিশেষ করে বাসস্ট্যান্ড ও বাজার এলাকায় যাতে যানজট সৃষ্টি না হয় তা নিশ্চিত করা হবে। ঢাকা মহানগরীতে প্রবেশ ও বহির্গমণ মুখসমূহ যানজটমুক্ত রাখা হবে। মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার এর কারণে সন্নিহিত এলাকার সড়কের সমস্যা সমাধানের জরুরিভিত্তিতে উদ্যোগ নেয়া হবে। ঈদের ১০ দিন পূর্ব থেকে সড়কে খোঁড়াখুঁড়ি বন্ধ থাকবে। দুর্ঘটনায় পতিত গাড়ি দ্রুত অপসারণের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক রেকার ও ক্রেন প্রস্তুত রাখা হবে। বঙ্গবন্ধু সেতু, মেঘনা সেতু ও গোমতি সেতুসহ সকল গুরুত্বপূর্ণ সেতুর টোল বুথ ২৪ ঘন্টা চালু রাখা হবে।
মহাসড়ক মনিটরিং: মহাসড়কের অবস্থা বর্তমানে ভালো থাকলেও সকল জাতীয়, আঞ্চলিক ও জেলা মহাসড়কের পরিস্থিতি সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অভ্যন্তরীণ মনিটরিং পদ্ধতিতে পর্যবেক্ষণে থাকবে। উপরন্তু সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের ২৫টি মনিটরিং টিম অব্যাহতভাবে পর্যবেক্ষণ করবে। প্রতিটি সড়ক বিভাগে মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য উপকরণসহ মোবাইল ট্রাক ইউনিট প্রস্তুত থাকবে।
বিকল্প সড়ক ব্যবহার: ঢাকা মহানগরীতে প্রবেশের ও বহির্গমনের মূল সড়কগুলোতে যানবাহনের চাপ কমানোর লক্ষ্যে ছোট যানবাহনকে বিকল্প মহাসড়ক ব্যবহার করার জন্য বিআরটিএ রুটসমূহ উল্লেখ করে প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে।
যাত্রীসুবিধা সম্প্রসারণ: অপ্রত্যাশিত যানজটকালীন সময়ে মহিলা ও শিশুদের ব্যবহারের সুবিধার্থে মহাসড়কের পার্শ্বে অবস্থিত পেট্রোল পাম্প, সিএনজি স্টেশন, হাইওয়ে রেস্টুরেন্ট, ডাক বাংলো এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের টয়লেটগুলো ব্যবহারের উপযোগী রাখা হবে। মাওয়া, কাওড়াকান্দি, দৌলতদিয়া, পাটুরিয়াসহ সকল ফেরী ও লঞ্চঘাটে মহিলা ও শিশুদের জন্য টয়লেট সুবিধা প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে। যান চলাচল স্বাভাবিক করার লক্ষ্যে ঢাকা শহরে যত্রতত্র গাড়ী পার্কিং করতে দেয়া যাবে না। যত্রতত্র পার্কিং বন্ধে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। ফেরীঘাটে গাড়ী পারাপার নির্বিঘœ করার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক ফেরী মজুদ রাখা হবে। নসিমন, করিমন, ইজিবাইকসহ সকল অননুমোদিত যানবাহন জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে চলাচল বন্ধে কঠোর অবস্থান নিতে হবে। বিআরটিসি’র স্পেশাল ঈদ সার্ভিস, রেলওয়ের স্পেশাল ট্রেন সার্ভিস এবং নৌরুটে স্পেশাল ফেরী ও লঞ্চ সার্ভিস পরিচালনা করা হবে।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি’র সভাপতিত্বে অন্যান্যর মাঝে রেলপথ মন্ত্রী মজিবুল হক এমপি, এলজিইডি প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা এমপি, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াত আইভি, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এমএএন ছিদ্দিক, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বাংলাদেশ পুলিশের সকল রেঞ্জের ডিআইজি, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, পরিবহন মালিক সমিতি, শ্রমিক সংগঠন, ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
ঈদল-আযহা’র আগাম প্রস্তুতি: এবারের সভায় ঈদল-আযহা উপলক্ষে বেশ কিছু আগাম প্রস্তুতির সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়েছে। সেগুলো হচ্ছে, ঈদল-আযহা ২০১৬ উপলক্ষে কোন অবস্থাতেই জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কের উপর ও পার্শ্বের স্থান গরুর হাট বসানোর জন্য ইজারা প্রদান করা যাবে না। ঢাকা শহরের প্রবেশ ও নির্গমণ মুখ বাধাগ্রস্থ হয় এমন কোন স্থানেও গরুর হাট বসানোর জন্য ইজারা প্রদান করা যাবে না। এ ব্যাপারে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবে।
মহানগরী ও পৌর এলাকার যে সব স্থানে গরুর হাট বসবে সে সব স্থানে সড়কের পার্শ্বে এমনভাবে বেড়া দিতে হবে যাতে হাট সড়কের উপর এসে যান চলাচলে বিঘœ সৃষ্টি না করে। ফরিদপুর জেলার ভাংগা উপজেলার মালিগ্রাম কোরবানীর পশুরহাট পার্শ্ববর্তী নির্মাণাধীন বাসস্ট্যান্ডে স্থানান্তর করতে হবে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সন্নিকটে দনিয়ায় এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর মহাসড়কাংশের টঙ্গী ইজতেমা মহাসড়কের মুখে কোরবানীর পশুরহাট বসানো হয়। ফলে সকল শ্রেণির ঘরমুখো মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগের সম্মুখীন হয়। দনিয়া এবং টঙ্গী ইজতেমা মহাসড়কের মুখে কোরবানীর পশুরহাট না বসানোর জন্য জেলা প্রশাসক, ডিআইজি-ঢাকা, এবং সংশ্লিষ্ট সিটি কর্পোরেশনের মেয়রকে অনুরোধ করা হয়। কোরবানীর পশুর বর্জ্য যাতে সড়ক-মহাসড়কের উপর অথবা পার্শ্বে না ফেলে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলা হয় সেজন্য স্থানীয় সরকার বিভাগ হতে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করতে হবে। সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভাগুলোর কোরবানীর পশুর বর্জ্য দ্রুত অপসারণে ব্যবস্থা রাখতে হবে। ফিটনেসবিহীন গাড়িতে কোরবানীর পশু পরিবহন করা যাবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।