পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আহমদ আতিক : বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সউদের আমন্ত্রণে পাঁচ দিনের দ্বিপক্ষীয় সফরে সউদি আরব যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সফর উভয় দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করবে। দেশের জন্য বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি এ সফরে প্রধানমন্ত্রী পবিত্র ওমরা পালন করবেন। জিয়ারত করবেন মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) এর পবিত্র রওজা মোবারক। আর এর মধ্য দিয়েই প্রধানমন্ত্রী শুরু করবেন রমজানের রোজা। এ সফরে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এবং এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি সালমান এফ রহমানের নেতৃত্বে থাকছেন ১০ সদস্যের উচ্চপর্যায়ের বাণিজ্য প্রতিনিধি দলও।
কূটনৈতিক সূত্র জানায়, অতীতের যেকোনো সফর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বর্তমান সউদী আরব সফর অনেক বেশি গুরুত্বপুর্ণ। সউদী বাদশাহর সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সমঝোতার ফলে বাংলাদেশে বিলিয়ন-বিলিয়ন ডলার সউদী বিনিয়োগের সুযোগ হাতছানি দিচ্ছে। বাংলাদেশ হয়ে উঠতে পারে সউদী আরবের বিদেশি বিনিয়োগের শীর্ষ ৪টি গন্তব্যের একটি। সফরের সফলতার ফলে হজের পর বাংলাদেশ সফরে আসতে পারেন সউদী ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন নায়েফ।
জানা গেছে, ৩ জুন শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে জেদ্দা যাবেন প্রধানমন্ত্রী। আর পবিত্র জুমার রাতেই মক্কায় ওমরা পালন করবেন তিনি। ৬ জুন তিনি মহানবীর (সা:) রওজা শরীফ জিয়ারতের জন্য মদিনা যাবেন। ৭ জুন বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে মদিনা থেকে সরাসরি ঢাকায় ফেরার কথা প্রধানমন্ত্রীর। পবিত্র রমজান মাসকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রীর এ সউদী সফর রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ধর্মীয় দায়িত্ব পালনের এক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকছে।
প্রধানমন্ত্রীর সউদী আরব সফর নিয়ে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মোহাম্মদ জমির ইনকিলাবকে বলেন, আমি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়নের ক্ষেত্রে আরো আশাবাদী। শুধু বাণিজ্য বা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নয়, আমাদের এখান থেকে যারা কাজ করতে যায় তাদেরও একটি সম্ভাবনা বাড়বে এবং সেটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপুর্ণ।
তিনি আরো বলেন, আমাদের শ্রমশক্তির মাধ্যমে তাদের মধ্যে আমাদের সম্পর্কে আস্থা তৈরি হয়েছে। এ সূত্র ধরেই যদি বিনিয়োগ আসে তাহলে আশ্চর্য হবার কিছু নেই। এতে করে আমরা মিউচুয়ালী বেনিফিসিয়ারি হবো। আর সামরিক সহায়তার ক্ষেত্রে আমরাতো বলেছিই যে, যদি প্রয়োজন পড়ে তবে আমরা তাদের পাশে দাঁড়াবো।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা ও বিশেষ ব্যক্তিবর্গ প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হবেন। ১০ সদস্যের একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলও যাবে তার সঙ্গে। এ দলের নেতৃত্বে থাকছেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এবং এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি সালমান এফ রহমান। তার সাথে থাকছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি আব্দুল মাতলুব আহমাদ, বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম এবং বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) এবং এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম মজুমদার প্রমুখ।
প্রধানমন্ত্রীকে সউদী আরবের তিনজন মন্ত্রী জেদ্দার বিমানবন্দরে স্বাগত জানাবেন। বাদশাহর পাশাপাশি সউদী আরব সফরে প্রধানমন্ত্রীর সাথে সউদী আরবের ডেপুটি ক্রাউন প্রিন্স, উপ-প্রধানমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, শ্রমমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রীসহ দেশটির নেতারা তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এসব আলোচনা দুই দেশের সম্পর্ককে আরো বেগবান করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সূত্র জানায়, সউদী বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ এবং রাজ পরিবারের সদস্যদের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী উপহার সামগ্রী নিয়ে যাচ্ছেন। এসব উপহার সামগ্রীর মধ্যে আছে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী শাড়ি, রূপার তৈরি হস্তশিল্প পণ্য, সিরামিক সামগ্রী, কাটারিভোগ, চিনিগুড়া ও কালিজিরা চাল, আম ও লিচু।
প্রসঙ্গত; প্রধানমন্ত্রীর সউদী আরব সফরের আগেই গত মাসে ‘ওআইসি সদস্য রাষ্ট্রগুলোর ১৫তম বাণিজ্য মেলায়’-যোগদান উপলক্ষে সউদী আরব সফরকালে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ সউদী ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সউদী আরবে বাংলাদেশের তৈরি হোম টেক্সটাইল, টেরি-টাওয়েল, পাট ও চামড়াজাত পণ্য, সিরামিক, হিমায়িত মাছ, হালাল মাংস, ভেজিটেবল, শুকনা খাবারের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। সউদী সরকারের কাছে আমরা এসব পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার চেয়েছি। বাণিজ্য বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে ২০০৬ সালে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এ চুক্তি কার্যকর করে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বাড়ালে উভয় দেশ উপকৃত হবে। মন্ত্রী আরো বলেন, গত অর্থবছর বাংলাদেশ সউদী আরবে ১৮৬ দশমিক ৩২ মিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করে এবং একই সময়ে ৮২৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি করে।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, কিছুদিনের মধ্যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল নিয়ে সউদী আরব সফর করবেন। এ সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।