পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রফিকুল ইসলাম সেলিম : চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে ২৭ হাজার ৮১২ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণ করেছে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এক হাজার ৬৩৪ কোটি টাকা কম। চলমান ২০১৫-১৬ অর্থবছরের শুরুতে ৩৩ হাজার ১২১ কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু করে এনবিআর খাতের একক বৃহত্তম রাজস্ব আহরণকারী প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। এর আগে পরপর দুটি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ে টার্গেট ছাড়িয়ে যায় কাস্টম হাউস। এবার হোঁচট খেতে হয়েছে। এগারো মাস শেষে ঘাটতির আকার ১৬শ’ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসকে ওই লক্ষ্যে পৌঁছতে চলতি অর্থবছরের শেষ মাস জুন মাসে ৫ হাজার ৩০০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করতে হবে। কাস্টম হাউজের কর্মকর্তারা বলছেন, আমদানি বেড়েছে, আমদানির সাথে রাজস্ব আদায়ও বেড়েছে। তবে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলসহ কিছু পণ্যের দরপতন হওয়ায় রাজস্ব আদায় কিছুটা কমে গেছে। শুল্ক ফাঁকি দিয়ে মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানির প্রবণতা বেড়ে যাওয়ার কারণেও রাজস্ব আদায় কম হয়েছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
কাস্টম হাউসের একজন কর্মকর্তা জানান, অর্থবছরের শেষ মাসে প্রতিবছরই রাজস্ব আদায় বেশি হয়। চলতি জুন মাসেও তার ব্যতিক্রম হবে না। তবে এক মাসে ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আদায় সম্ভব নয়। ফলে রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। বলা যায়, এবার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হচ্ছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস।
চলতি অর্থবছরের ২৯ মে পর্যন্ত প্রায় ১১ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ২৭ হাজার ৮১২ কোটি টাকা। এ সময়ে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৯ হাজার ৪৪৬ কোটি টাকা। ঘাটতির আকার দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৬৩৪ কোটি টাকা। তবে গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের এই সময়ে ৩ হাজার ৪০৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। অর্থাৎ রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি ১৩ শতাংশ।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস এনবিআর খাতের একক বৃহত্তম রাজস্ব আহরণকারী প্রতিষ্ঠান। দেশের আমদানি বাণিজ্যের ৫৩ শতাংশ ও রফতানি বাণিজ্যের ৮৫ শতাংশ কার্যক্রম চট্টগ্রাম বন্দরভিত্তিক কাস্টম হাউসের মাধ্যমে সম্পাদিত হয়। দেশের অভ্যন্তরীণ রাজস্বের ২৩ শতাংশ এই দপ্তর আহরণ করে। আর তাই এই কাস্টম হাউসের রাজস্ব আদায়ের হার দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক সূচককে স্পষ্ট করে।
গত অর্থবছরে ২৭ হাজার ২৪৪ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। তার আগের অর্থবছরে ২৩ হাজার ২৩৭ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়। রাজনৈতিক অস্থিরতার পরও ওই দুটি অর্থ বছরে রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সক্ষম হয় চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। তবে এবার রাজনৈতিক অস্থিরতা নেই। এরপরও কেন রাজস্ব আদায় পিছিয়ে পড়া এমন প্রশ্নের জবাবে কাস্টম হাউসের একজন কর্মকর্তা জানান, বেশি শুল্ক আদায় হয় এমন কয়েকটির পণ্যের দাম বিশ্ববাজারে পড়ে গেছে। এতে করে রাজস্ব আদায়ও কম হয়েছে। আমদানির পরিমাণ ৩০ শতাংশ বেড়েছে আর রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ বেড়েছে ১৫ শতাংশ।
এবার চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রাও কিছুটা বেশি ধরা হয়েছে। তাছাড়া আইনী জটিলতায় মোটা অংকের রাজস্ব আদায় আটকে গেছে। বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের কাছে কিছু রাজস্ব বকেয়া থেকে গেছে। এসব কারণে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস পিছিয়ে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
এদিকে দেশে সার্বিকভাবে আমদানি বেড়েছে। কাস্টম হাউস সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের ৮ মাসে গত অর্থবছরের তুলনায় ৩০ শতাংশ আমদানি বৃদ্ধি পেয়েছে। গত অর্থবছরের ৮ মাসে ২ কোটি ৬০ লাখ ২৭ হাজার ৭২৮ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি হয়। এবার তার চেয়ে ৭৬ লাখ ৯২ হাজার ৯১২ মেট্রিক টন বেশি পণ্য আমদানি হয়েছে। গতবছর আমদানিকৃত পণ্যের শুল্কায়ন মূল্য ছিল ১ লাখ ১৮ হাজার ৮৫৩ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরের ৮ মাসে আমদানিকৃত পণ্যের শুল্কায়ন মূল্য ৫ হাজার ৬০৪ কোটি টাকা বেড়ে ১ লাখ ২৪ হাজার ৪৫৭ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। গত অর্থবছরের ৮ মাসে আমদানিকৃত পণ্য থেকে রাজস্ব আদায় হয় ১৭ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা। আর এ অর্থবছরের ৮ মাসে ২ হাজার ৫৪৯ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ১৫ শতাংশ।
সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয় এমন ১০টি আমদানি পণ্যের মধ্যে মোটরসাইকেল ছাড়া আর সব ধরনের পণ্যের আমদানি বেড়েছে। আমদানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ আগমনের হারও বাড়ছে। চলতি অর্থবছরের ৭ মাসে চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ আগমনের হার বেড়েছে ১৪ শতাংশ। আর এসব জাহাজে আমদানি পণ্যের পরিমাণ বেড়েছে ২১ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে চট্টগ্রাম বন্দরে ৭১১টি কন্টেইনার জাহাজ ভিড়ে। গত বছরের এ সময়ে কন্টেইনার জাহাজের সংখ্যা ছিল ৬২৩টি। জাহাজের সংখ্যা বেড়েছে ৮৮টি।
চলতি অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে বাল্ক কার্গো জাহাজ এসেছে ৮৮৫টি। গত বছরের এ সময়ে এমন জাহাজের সংখ্যা ছিল ৭৯০টি। বাল্ক জাহাজ আগমনের সংখ্যা ১২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এসব জাহাজে আমদানি পণ্যের পরিমাণ বেড়েছে ২৪ শতাংশ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।