পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় নির্মানাধীন পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত চীনা শ্রমিক ঝাং ইয়াং ফাং (২৬) মারা গেছে। বুধবার সকালে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এর আগে কলাপাড়া থেকে আহত অবস্থায় তাঁকে নিয়ে এ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঝাং ইয়াং ফাং পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ইলেকট্রেশিয়ান পদে কর্মরত ছিলেন। এছাড়া চীনা শ্রমিক হচ্ছেন লিন কু মু (২৭), ঝ্যাং হুয়া (৩৪), ঝ্যাং সিং থান (২৫), ঝাং হু (২৬) ও জু ঝাং (৫৪) কে বুধবার বেলা ১১ টার সময় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। সংঘষে আহত তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান (৪৭) ও নির্মাণ শ্রমিক মো. জহুরুল ইসলামকে (৬৫) বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে এঘটনায় ইপিসি,বিসিপিসিএল ও স্থানীয় প্রশাসনের সম¤œয় আলাদা তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩ টার সময় উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নে নির্মানাধীন ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বয়লারে কর্মরত অবস্থায় সবিন্দ্র দাস (৩২) নামে এক বাংলাদেশী শ্রমিকের মৃত্যু হয়। নিহত শ্রমিকের লাশ গুম হওয়ার গুজব ছড়িয়ে পড়লে বাংলাদেশী শ্রমিকরা বিক্ষুদ্ধ হয়ে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বয়লার এলাকার একটি অফিসসহ ক্যান্টিন, প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে, ওয়েল্ডারে এবং পাশ্ববর্তী স্থাপনায় হামলা-ভাংচুর চালায়। এ ছাড়া বাংলাদেশী শ্রমিকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে চায়না শ্রমিকদের আবাসিক এলাকায় প্রবেশ করে হামলা-তান্ডব চালায়। মঙ্গলবার রাতে কয়েক দফা হামলা-ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সাংবাদিকরা সংবাদ সংগ্রহর কাজে গেলে তারও হামলার শিকার হয়। এ সময় ছবি তুলতে গেলে স্থানীয় সংবাদকর্মী ফরাজী মো. ইমরানের মোটরসাইকেল ও একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম রয়েলের ক্যামেরা ভাংচুর করে শ্রমিকরা। এমন পরিস্থিতিতে পুলিশ সদস্যরা টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে সবাইকে ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন আনে। বর্তমানে প্রকল্প এলাকা শ্রমিকদের কার্যক্রম বন্ধ রায়েছে।
পরিস্থিতিতে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ, র্যাব, বিজিবি এবং আর্মড পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পটুয়াখালী জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পুলিশ, র্যাব এবং আর্মডপুলিশ যৌথভাবে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অভ্যন্তরে মঙ্গলবার রাতে বাংলাদেশী ও চীনা শ্রমিকদের সাথে সভা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করার চেষ্টা করেন।
এমন পরিস্থিতির খবর পেয়ে বুধবার সকালে হেলিকপ্টারে যোগে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র এলাকা সফর করেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। তিনি তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখেন। এরপর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের সাথে জরুরী সভা করেন। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্মকর্তারা তাঁকে সার্বিক পরিস্থিতি অবহিত করেন বলে জানা গেছে।
বিসিপিসিএল এর প্রশাসনিক কর্মকর্তা শাহমনি জিকো জানান, ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা গুজবের কারণে উত্তেজিত হয়ে ক্যান্টিনে, অফিসে, প্রশিক্ষন কেন্দ্রে ও ওয়েল্ডারে হামলা-ভাংচুর চালায়। বর্তমানে বিজিবি, পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে কলাপাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আসাদুর রহমান বলেন, নিহত শ্রমিক সবিন্দ্র দাসের লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়না তদন্ত সম্পন্ন হলে নিহতের লাশ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মতিউল ইসলাম চৌধরী জানান, ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক ভাবে চলে এসেছি। আহত চাইনিজ ও বাংলাদেশী শ্রমিকদের উদ্ধার করে পটুয়াখালী হাসপাতালে ভর্তি করি। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল পাঠানো হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক চাইনিজ শ্রমিক মারা যায়। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এছাড়া বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী, সচিব, বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে যৌথ সভা করা হয়েছে। এসভায় তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।