পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
নেছারাবাদ (পিরোজপুর) উপজেলা সংবাদদাতা ঃ দিন দিন পলি জমে ভরাট আর অবৈধ দখলদারিত্বের কবলে নেছারাবাদের সন্ধ্যা নদী বুক চিরে থানা সংলগ্ন বয়ে যাওয়া একমাত্র বাণিজ্যিক খালটি আজ মরা খালে পরিণত হতে চলছে। উপজেলা সদরের উত্তর ও দক্ষিণপাড়ের মাঝপ্রান্ত দিয়ে প্রবাহিত খালে অবাধে অবৈধ স্থাপনা গড়ে ওঠায় ক্রমেই হারাচ্ছে এ বাণিজ্যিক খালের মূল রূপরেখা। খালটির দু’পাড় থেকেই বিশেষ করে দক্ষিণপাড় বন্দরের তেঁতুলতলা থেকে শুরু করে বন্দরের সানস্টার ব্যাটারিঘর পর্যন্ত খালের পাড়ে ইট, সুঁড়কি ও বালু, মাটি ভরাট করে গত ১০ বছরে গড়ে উঠেছে কয়েকটি ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান। গত ২০০৮ সালের তত্ত¡াবধায়ক সরকার আমলে এসব অবৈধ দখলের স্থাপনা ভাঙ্গলে তখন কিছুটা হলেও বন্ধ হয় অবৈধ দখল বাণিজ্য। পরবর্তীতে নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আসার পর পরই আবারও শুরু হয়ে যায় এ শীতলা খালে চিরাচরিত অবৈধ দখল বাণিজ্যির হিড়িক। পুনরায় কয়েকজন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যবসায়ী শুকনার দিনে খালের পাড়ে গড়ে তুলছেন তাদের ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানের পরিধি। বানিয়েছেন বাসা বাড়িও। আর খালের এ অবৈধ দখলের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিভিন্ন সময়ে অবগত করলেও কোন প্রকার ভ্রæক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না। খালে বড় কোন দখলদারিত্বের বিষয় প্রশাসনের নজরে আসলে লোক দেখানো অবৈধ দখলদারকে অফিসে ডেকে নিয়ে দু’একদিন কাজ বন্ধ করলেও পরে অজ্ঞাত কারণে বন্ধ হয়ে যায় অবৈধ খাল দখল মুক্তকরণের বিষয়টি।
স¤প্রতি উপজেলার ওই একমাত্র বাণিজ্যিক খালটির দক্ষিণপাড় কাঠের পুল সংলগ্ন থেকে এক প্রভাবশালী ব্যবসায়ী তার একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পরিধি বৃদ্বি লক্ষ্যে খালের পাড় দখল নিয়ে সেখানে তিনি ইট, সুঁড়কি ও মাটি ফেলে গড়ে তুলতে চলছেন পাকা স্থাপনা। বিষয়টি উপজেলা ভূমি অফিস জানতে পেরে প্রথম দিন মৌখিকভাবে ওই দখলদারকে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। পরের দিন ওই দখলদার পুনরায় পাড় দখলের কাজ শুরু করলে স্থানীয় সাংবাদিকদের মাধ্যমে কাজের খবর পেয়ে তারা (ভূমি অফিস) লোক দেখানো কাজ বন্ধের নির্দেশ দেন। তারপরও ওই দখলদার নিয়মনীতি উপেক্ষা করে কাজ করে যাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী ভূমি অফিসার মো. ফরিদ হোসেন জানান, আমরা ওই দখলদারকে কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছি। অফিসের সার্ভেয়ার দ্বারা খালের জায়গা নির্ধারন করে তাকে (দখলদারকে) কাজের নির্দেশ দেব। উপজেলা সার্ভেয়ার মো. জহির উদ্দিন জানান, অবৈধ খাল দখলের ব্যাপারে আমাদের একার পক্ষে কোন বিশেষ ব্যাবস্থা নেয়া সম্ভব নয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও অতিরিক্তে দায়িত্ব সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আবুল কালাম তালুকদার জানান, খালের অবৈধ দখলের ব্যাপার শুনে তিনি লোক পাঠিয়ে কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন। এরপর তিনি (নির্বাহী কর্মকর্তা) আর কিছু জানতে পারেননি। স্বাধীনতার পূর্ববর্তীকাল থেকে উপজেলা সদরের এ বাণিজ্যিক খালে নানা ধরনের ব্যবসায়ীক মালামাল নিয়ে চলাচল করত বড় বড় কার্গো ও মালবাহী ছোটখাট নৌযান। একসময় খালে ঘাট দিত ঢাকাগামী লঞ্চও। সব মিলিয়ে উপজেলার কাঠ ব্যবসায় প্রশিদ্ধ কাঠের চরসংলগ্ন এ খালে নৌপথে ব্যবসা-বাণিজ্যে সর্বধা মুখরিত ছিল।
স¤প্রতি খালে অবৈধ দখলদারিত্বের প্রভাব এতটাই বেড়েছে যে, যা বলার অপেক্ষা থাকে না। এমতবস্থায়, উপজেলা সদরের এ একমাত্র বাণিজ্যিক খালটি পুনঃখননসহ অবৈধদখল মুক্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এলাকাবাসী। বিষয়টি পিরোজপুর জেলা প্রশাসক শেখ খাইরুল আলমকে জানানো হলে তিনি বলেন, বিষয়টি ওখানকার (নেছারাবাদের) নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানান। খাল দখলের ব্যাপারে তারা নোটিশ করুক। বিষয়টি আমি দেখব বলে তিনি আশ্বস্ত করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।