পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
ভৌত অবকাঠামো ও শিল্পখাতে বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে বা উৎসাহিত করতে বাজেটে কর অবকাশ সুবিধা বাড়ছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে এই সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। অবকাঠামো খাতের ১৯টি প্রকল্পে বিনিয়োগ করলে আগামী ১০ বছর হ্রাসকৃতহারে কর অবকাশ সুবিধা পাবেন বিনিয়োগকারীরা। এছাড়া অঞ্চলভিত্তিক ২৬টি শিল্পে বিনিয়োগের বিপরীতে কর অবকাশ সুবিধার মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে; যা এ বছরের জুনে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এদিকে শিল্প ক্ষেত্রে নতুন করে ৮টি খাত কর অবকাশ তালিকায় আনার প্রস্তাব করা হয়েছে।
গত ১৩ জুন জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় বিনিয়োগ ও ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, রফতানি বাড়াতে কর অবকাশ সুবিধার মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব দেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
প্রস্তাবিত বাজেট বিশ্লেষণে দেখা গেছে, কর অবকাশ সুবিধার আওতায় নতুন করে যেসব শিল্পখাত যুক্ত হয়েছে সেগুলো হলো-কৃষি যন্ত্রপাতি, চামড়া, চামড়াজাত পণ্য, গৃহস্থালি পণ্য, এলইডি টিভি, খেলনা উৎপাদন, মোবাইল ফোন ও প্লাস্টিক রিসাইক্লিং। এর আগে ওষুধ, স্বয়ংক্রিয় মেশিনে ইট উৎপাদন, অটোমোবাইল, ইলেকট্রনিক সামগ্রীর প্রাথমিক যন্ত্রাংশ উৎপাদন, বাইসাইকেল, বায়ো ফার্টিলাইজার, বায়োটেকনোলজিভিত্তিক কৃষিপণ্য, বয়লার ও এর যন্ত্রাংশ, কম্প্রেসার, কম্পিউটার হার্ডওয়্যার, ফার্নিচার, হোম অ্যাপ্লায়েন্স, পোকামাড়ক দমনে কীটনাশক, ফল ও সবজি প্রক্রিয়াজাতকরণ, পেট্রো কেমিকাল, টেক্সটাইল মেশিনারি, ও টায়ার উৎপাদন। প্রস্তাবিত বাজেটে এসব শিল্পখাতে বিনিয়োগের বিপরীতে কর অবকাশ সুবিধা ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ফলে এসব খাতের কোম্পানিগুলো দেশের যেকোনো অঞ্চলেই বিনিয়োগ করলে এই কর অবকাশ সুবিধা পাবে।
এদিকে অঞ্চলভেদে শিল্পস্থাপনে পাঁচ থেকে ১০ বছর মেয়াদী কর অবকাশ সুবিধা দেওয়া হয়েছে। ঢাকা, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রাম বিভাগের ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলা ছাড়া অন্য জেলায় শিল্পস্থাপনে পাঁচ বছরের কর অবকাশ সুবিধা পাবেন উদ্যোক্তারা। এক্ষেত্রে তারা প্রথম বছরের জন্য ৯০ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে ৮০ শতাংশ, তৃতীয় বছরে ৬০ শতাংশ, ৪র্থ বছরে ৪০ শতাংশ এবং ৫ম বছরে ২০ শতাংশ কর অবকাশ সুবিধা পাবেন।
এছাড়া রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও রংপুর বিভাগের সিটি করপোরেশনের বাইরে এবং রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়িতে শিল্পস্থাপনের ক্ষেত্রে ১০ বছরের কর অবকাশ সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রথম ও দ্বিতীয় বছরে ৯০ শতাংশ কর অবকাশ সুবিধা দেওয়া হবে। এরপর ক্রমহ্রাসমান হারে দশম বছরে ১০ শতাংশ কর ছাড় পাওয়া যাবে।
এদিকে অবকাঠামো খাতের গভীর সমুদ্রবন্দর, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল, ফ্লাইওভার, গ্যাস পাইপলাইন, হাইটেক পার্ক, আইসিটি ভিলেজ ও সফটওয়্যার টেকনোলজি জোন, তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক, বড় পানি শোধনাগার ও পানি সরবরাহের পাইপলাইন, এলএনজি টার্মিনাল ও ট্রান্সমিশন লাইন, মোবাইল ফোনের টাওয়ার অথবা টাওয়ার শেয়ারিং অবকাঠামো, মনোরেল, র্যাপিড ট্রানজিট, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, সমুদ্র ও নদীবন্দর, সড়ক ও সেতু, ভ‚-গর্ভস্থ রেল ও বর্জ্য শোধনাগারে বিনিয়োগ করলে কর অবকাশের সুবিধা পাওয়া যাবে।
এসব ভৌত অবকাঠোমো খাতে বিনিয়োগ করলে ১০ বছরের জন্য হ্রাসকৃতহারে কর অবকাশ সুবিধা পাবেন বিনিয়োগকারী। এক্ষেত্রে প্রথম ও দ্বিতীয় বছরে ৯০ শতাংশ কর ছাড় দেওয়া হবে। এভাবে ক্রমহ্রাসমান হারে দশম বছরে ১০ শতাংশ কর অবকাশ সুবিধা পাওয়া যাবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।