পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে ৫১টি আগ্নেয়াস্ত্র জমা
মনিরুল ইসলাম দুলু মংলা থেকে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে মংলায় আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসর্মপণ করেছে সুন্দরবনের দুর্ধর্ষ বনদস্যু মাস্টার বাহিনীর ১০ সদস্য। মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের ফুয়েল জেটিতে আয়োজিত আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের হাতে ৫১টি দেশী-বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র ও ৫ হাজার রাউন্ড গুলি হস্তান্তর করেছে তারা। এ সময় র্যাব, পুলিশ ও সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আত্মসমর্পণকারীরা হলেনÑ মংলা উপজেলার মিঠাখালী এলাকার আব্দুল লতিফ শেখের ছেলে মো: মোস্তফা শেখ ওরফে কাদের মাস্টার, একই এলাকার ইসমাইল খানের ছেলে মো: সুলতান খান, রামপাল উপজেলার বড় কাঁঠালিয়া এলাকার ইউসুফ আকনের ছেলে সোহাগ আকন, একই এলাকার আহাদ আলী শেখের ছেলে মো: ফজলু শেখ, শ্রীফলতলা গ্রামের সফরুল শেখের ছেলে সোলাইয়াম শেখ, খুলনার দাকোপের মো: মতলেব শেখের ছেলে শাহীন শেখ ও সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার মোনাগাছার নুরুল ইসলাম সরদারের ছেলে সুমন সরদার। তারা সবাই দস্যুতা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (গোয়েন্দা) কর্নেল আনোয়ার হোসেন, র্যাব-৮ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল ফরিদুল আলম, উপ-অধিনায়ক মেজর আদনান কবির, র্যাব-৬ এর অধিনায়ক রফিকুল ইসলাম, পুলিশের খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মনিরুজ্জামান, বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো: জাহাঙ্গীর আলম, পুলিশ সুপার (এসপি) মো: নিজামুল হক মোল্লা, মংলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আলী প্রিন্স প্রমুখ। এর আগে দুপুরে হেলিকপ্টারে করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল মংলায় আসেন।
এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, দস্যুরা সাধারণ জীবনে ফিরতে সরকার তাদের আইনি সহায়তা করবে। সুন্দরবনে থাকা বাকি দস্যুদেরও এই ঘৃণীত পথ ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের জীবনের নিরাপত্তার জন্য এই আত্মসমর্পণ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
গত রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণের কথা থাকলেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে পরে তা স্থগিত করা হয়। ওই দিন ভোরে আত্মসমর্পণের লক্ষ্যে সুন্দরবনের চরাপুটিয়ার ভারানী খালে এসে র্যাব-৮ এর কাছে দেশী-বিদেশী মোট ৫১টি অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র ও প্রায় পাঁচ হাজার গুলি জমা দেন মাস্টার বাহিনীর সাত সদস্য। এর পর থেকে তারা র্যাব-৮ এর হেফাজতে ছিলেন।
সভায় র্যাব-৮ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফরিদুল আলম বলেন, এই আত্মসর্মপণের মাধ্যমে সুন্দরবনের অন্যান্য দস্যু বাহিনীও অস্ত্র ত্যাগ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সাহায্য করবে। তিনি আরো বলেন, আত্মসমর্পণ করা দস্যুদের বিরুদ্ধে অর্ধশতাধিক মামলা রয়েছে। তাদের পুলিশে সোপর্দ করা হবে। তবে তাদের সাজা কমিয়ে দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার ব্যাপারে বিশেষভাবে সহায়তা করা হবে।
মাস্টার বাহিনী প্রধান মোস্তফা শেখ জানান, বাগেরহাটের রামপাল এলাকার এক ইউপি চেয়ারম্যানের হাত ধরে প্রথমে এই পথে আসেন তিনি। পরে রাজু বাহিনীর সঙ্গে সুন্দরবনে দস্যুতা শুরু করেন। সুন্দরবনের এক সময়ের ত্রাস রাজু বাহিনী থেকে বের হয়ে নিজেই ১০-১৫ জনের একটি গ্রুপ নিয়ে বাহিনী গঠন করেন। র্যাবের তৎপরতায় ও ক্রসফায়ারে একের পর এক বনদস্যু নিহতের ঘটনায় তারা দীর্ঘদিন ধরে আত্মসমর্পণের চেষ্টা করেন। মাস্টার বাহিনীর বাকি সদস্যরা আত্মসমর্পণের খবর পেয়ে পালিয়ে গেছে বলে জানা গেছে।
বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল যমুনা টিভির বিশেষ প্রতিনিধি মহসিনুল হাকিমের মাধ্যমে মাস্টার বাহিনী আত্মসমর্পণের জন্য সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে বলে জানা গেছে। মোহসিনুল হাকিম জানিয়েছেন, মাস্টার বাহিনী গত বছর প্রথম তার সঙ্গে যোগাযোগ করে আত্মসমর্পণের ইচ্ছা প্রকাশ করে। এরপর দ্বিতীয়বার তারা যোগাযোগ করে সরকারের কাছে আবেদন জানায়। এরই ধারাবাহিকতায় দস্যুরা আত্মসমর্পণ করল।
র্যাবের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশের পশ্চিম উপকূল এবং সুন্দরবনের জেলে, বাওয়ালী, মৌয়ালদের ত্রাস ছিল দস্যু মাস্টার বাহিনী। নৌকা ও জালের হিসাব করে নির্ধারিত হারে দস্যুদের চাঁদা দিতে হতো জেলে ও বনজীবীদের। এতদিন অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়সহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ছিল এ বাহিনীর সদস্যরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।