পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিএনপির সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক এবং সংসদের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন করায় আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠে সংসদ অধিবেশন। নির্ধারিত দশ মিনিটের বক্তৃতায় তিন দফায় বাধার সন্মুখীন হতে হয়ে বিএনপি এই সংসদ সদস্যকে। এ ছাড়া বিএনপির অপর এক সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদও সংসদের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় সংলাপের উদ্যোগ নিতে সংসদ নেতার প্রতি আহবান জানান।
গতকাল জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনে ২০১৮-১৯ অর্থ বৎসরের সম্পূরক বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপি দলীয় এই সদস্যরা এ সব কথা বলেন। বিকেল ৩ টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশন শুরু হয়। রুমিন ফারহানার বক্তব্যের সময় সভাপতিত্ব করছিলেন ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া।
সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিলেও এ বিষয়ে তেমন কোন বক্তব্য দেননি ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। তিনি তার বক্তব্যে বলেছেন, এই সংসদের কেউ বলতে পারবে জনগণের প্রত্যেক্ষ ভোটে নির্বাচিত? কেউ বলতে পারবেন না। এই কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে সরকারি দলের সদস্যরা হই হই করতে থাকেন। এক পর্যায়ে ডেপুটি স্পিকার তার বক্তব্য থামিয়ে বলেন, আপনি বাজেটের বাইরে এমন কোনো কথা বলবেন না যাতে সংসদ উত্তপ্ত হয়। ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, এই সংসদে আসার আগে সংসদ নেতা বলেছিলেন আমাদের কথা বলতে দেবেন। কিন্তু আমার প্রথম দিনের বক্তৃতার দুই মিনিটের এক মিনিটও শান্তি মত কথা বলতে পারিনি। একই ঘটনা আজকেও।
কথা শুরু করার ৩৬ সেকেন্ডের মাথায় তার বক্তৃতা থামিয়ে দিয়ে ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া বলেন, এমন কথা বলবেন না যাতে বিরোধী পক্ষ উত্তেজিত হয়।
পুনরায় বক্তব্য শুরু করে তিনি বলেন, আমরা কথা বলতে পারছি না। কোন গণতন্ত্রের কথা বলছি। আমি আমার দলের কথা বলব, তারা তাদের দলের কথা বলবে। আমি দাঁড়াবার সঙ্গে সঙ্গে পুরো সংসদ যদি উত্তেজিত হয়ে যায়। তাহলে কিভাবে কথা বলব। আমাদের কথা দেওয়া হয়েছিল, এ সংসদে আমাদের কথা বলতে দেওয়া হবে। এ জন্য এ সংসদ নির্বাচিত নয় জেনেও আমরা সংসদে যোগ দিয়েছি। কারণ, আমাদের মিটিং করতে দেওয়া হয় না। ভেবেছিলাম সংসদে জনগণ, আমার দল নিয়ে কথা বলতে পারব। কিন্তু দুর্ভাগ্য এ সংসদের সরকারি দলের এমপিদের এতটুকু ধৈর্য নেই আমার কথা শোনার।
রুমিন ফারহানা বলেন, দেশে আইন আছে, আদালত আছে। কিন্তু আইনের শাসন নেই। সে কারণে মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে গত এক বছরে বিচারবর্হিভূত ৪৫০টি হত্যা হয়েছে। এ বিচারবর্হিভূত হত্যা কত জঘন্য ঘটনা, কোনো সভ্য রাষ্ট্রে তা চলতে পারে না। মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের রিপোর্ট মতে, গত এক দশকে গুম হয়েছে ৬শ’ এর উপরে। আমার সুযোগ হয়, এ গুম হওয়া পরিবারের সঙ্গে বসার। তারা এখন শুধু লাশ চায়, যাতে একটু কবর দিতে পারে।
তিনি বলেন, গত এক মাসে মৃত্যু উপত্যকা বাংলাদেশে হত্যাকান্ডর ঘটনা ঘটেছে ১৬৮টি। বাংলাদেশ এখন ধর্ষণের রঙ্গমঞ্চ। আমার দুঃখ লাগে স্পিকার এ সংসদের একজন নারী এমপিও এ নিয়ে কথা বলেন না। বাংলাদেশে এখন এক বছর থেকে শুরু করে ১০০ বছরের বৃদ্ধাও ধর্ষিত হচ্ছে। কিন্তু কোনো বিচার হয় না। কোনো না কোনোভাবে ক্ষমতার সঙ্গে যুক্ত বা সুবিধাভোগী তারাই এ ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত।
পুরো দশ মিনিটের বক্তৃতায় অল্প কিছুক্ষণ শুধু সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনা করেন। তার সেই আলোচনায় বলেন, ২০১০-১১ অর্থ বছর থেকে এ পর্যন্ত বাজেট বাস্তবায়ন হয়েছে ৭৬ শতাংশ। সরকারের সক্ষমতা দিন দিন কমছে।
নির্বাচন কমিশনে ব্যয় বাড়ানোয় সমালোচনা করে ব্যারিস্টার ফারহানা বলেন, নির্বাচন কমিশনের ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। কি নির্বাচন তারা করেছে? আমার একটা কথায় পুরো সংসদ উত্তপ্ত। কলামের পর কলাম লেখা হয়। এই সংসদে যারা আছেন তারা আল্লাহকে হাজির নাজির করে বলুক তারা জনগণের প্রত্যেক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন? তারা নিজের বিবেকের কাছে প্রশ্ন করুক সবাই উত্তর পেয়ে যাবেন। বক্তৃতার ৪ মিনিট ৫৬ সেকেন্ডে আবারও বাধা প্রদান করা হয়। এভাবেই তার ১০ মিনিটের বক্তৃতা শেষ করেন।
পরে ডেপুটি স্পিকার তাকে উদ্দেশ্যে বলেন, আপনি বাজেটের বাইরে ও সংসদীয় ভাষার বাইরে যে কথাগুলো বলেছেন তার সব কথা সংসদীয় প্রসিডিউর থেকে এক্সপান্স করা হল। এই কথা বলার পর বিএনপি’র সবাই অধিবেশন থেকে বেরিয়ে যান। পরে অবশ্য আবার অধিবেশনে ফেরেন।
এর আগে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ সংসদের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, আমাদের ৬ জনের আসার মধ্য দিয়ে এই সংসদের বৈধতা দেয়া হয় না। আমাদের সংসদে প্রবেশের অন্যতম কারণ সাংবিধানিক গণতান্ত্রিক জায়গাগুলোতে উপস্থিত হয়ে কথা বলা। তাই সংসদে এসে কথা বলছি। আমি সংসদ নেতাকে আহবান জানাচ্ছি, আশা করছি দেশে সুশাসন ফিরিয়ে আনার জন্য, গণতন্ত্র তথা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। তিনি জাতীয় নেতৃবৃন্দকে সংলাপের আহবান জানিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার একটি আবহাওয়া তৈরি করবেন, সুবাতাস বয়ে আনবেন।
বিএনপি’র এই দলীয় সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন, সংসদ নেতা আপনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পরিবারের সদস্যদের হারিয়েছেন। এটা নিঃসন্দেহে বেদনার। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকান্ড দেশের রাজনীতির ইতিহাসে জাতীয় ট্রাজেডি। আর ইন্ডিমনিটি অধ্যাদেশ বিএনপি দেয়নি। দিয়েছে আওয়ামী লীগের একটি অংশ। খন্দকার মোশতাক ক্ষমতায় থাকাকালে ইন্ডিমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে।
বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান সম্পর্কে হারুনুর রশীদ বলেন, জিয়াউর রহমান দেশে যে প্রক্রিয়াতেই ক্ষমতায় আসুক না কেনো ক্ষমতায় আসার পর উনি চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছিলেন। এখন আবার সেই গণতন্ত্র অনুপস্থিত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।