Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

পণ্যের দাম বাড়ানো সাংঘাতিক চ্যালেঞ্জ- রুবানা হক

প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে বিজিএমইএ পোশাকখাতে আরও প্রনোদনার দাবী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ জুন, ২০১৯, ৯:১০ পিএম

২০১৯-২০ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে আরও ৫ হাজার ৬৫০ কোটি টাকার প্রনোদনা বরাদ্দ বাড়ানোর দাবী করেছে তৈরী পোশাক রফতানীকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ। সংগঠনটি বলছে, প্রস্তাবিত বাজেটে তৈরী পোষাক খাতের জন্য ১ শতাংশ হারে প্রনোদনা দিয়ে ২ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কিন্তু সার্বিক বিবেচনায় আরও ২ শতাংশ প্রনোদনা বাড়িয়ে অতিরিক্ত ৫ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিতে হবে। কেননা পোশাকখাতকে টিকিয়ে রাখতে বেশ কয়েকটি বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ক্রমেই বন্ধ হচ্ছে ছোট ছোট কারখানা। এজন্য প্রনোদনা বাড়ানোর বিকল্প নেই। রোববার ( ১৬ জুন) প্রস্তাবিত বাজেট পরবর্তী প্রতিক্রিয়া জানাতে রাজধানীর একটি হোটেলে বিজিএমইএ এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিজিএমইএ। এতে বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক এই দাবী করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ’র সিনিয়র সহ-সভাপতি ফয়সাল সামাদ, সহ-সভাপতি এস.এম. মান্নান (কচি), সহ-সভাপতি (অর্থ) এম. এ রহিম (ফিরোজ) ও সহ-সভাপতি মো. মশিউল আজম (সজল)।

রুবানা হক বলেন, তৈরী পোশাক খাত দেশের মোট রফতানীর ৮৩ শতাংশ অবদান রাখে। এর সঙ্গে প্রত্যাক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িয়ে আছে কয়েককোটি মানুষ। প্রস্তাবিত বাজেটের আগে আমাদের দাবী ছিল ৫ শতাংশ হারে প্রনোদনার। এতে টাকার পরিমান দাড়াতো ১৮ হাজার ১২৫ কোটি টাকা। কিন্তু দেয়া হয়েছে এক শতাংশ হারে। এটি যথেষ্ট নয়। এজন্য চূড়ান্ত বাজেটে ৩ শতাংশ হারে বরাদ্দ দাবী করছি।

মূদ্রার বিনিময় হারকে প্রনাদনা বাড়ানোর যুক্তি হিসাবে তুলে ধরে তিনি বলেন, আমাদের প্রস্তাব ছিল ডলার প্রতি ৫ টাকা বিনিময় হার প্রদান। কিন্তু তা গৃহীত হয় নি। অথচ মোট রফতানী আয়ের উপর পলার প্রতি ১ টাকা অবমূল্যায়ন হলেও পোশাকখাতে বছরে প্রায় ৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা পায়, সে হিসাবে ১ শতাংশ প্রনোদনা কম।

এক প্রশ্নের জবাবে তৈরী পোষাক থাত একটি বিরাট চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, তৈরী পোশাকের ভাবমুর্তি ফিরিয়ে আনা অন্যতম চ্যালেঞ্জ। একারনে পন্য বহুমূখীকরণ করা যাচ্ছে না। এছাড়া এখাতে প্রযুক্তির যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। টেকনোলজি না থাকার কারণে প্রতিযোগি দেশ গুলোর সঙ্গে পেরে উঠা যাচ্ছে না।

রুবানা হক আরও বলেন, বিশে^র সবচেয়ে বেশী কমপ্লায়েন্স কারখানা এখন বাংলাদেশে। কিন্তু বায়ারদের কাছে পণ্যের দাম বাড়ানো যাচ্ছে না। এটা এখন সাংঘাতিক চ্যালেঞ্জ। এছাড়া ছোট কারখানাগুলোকে বাঁচিয়ে রাখা যাচ্ছে না। প্রতি মাসের কিছু কিছু করে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

রুবানা হক বলেন, প্রতিনিয়ত শুনতে হয়, আমরা ম্যাচিউরড, এস্টাব্লিশড। আর সাহায্য দরকার নেই, তা ঠিক নয়। পোশাকে কিন্তু ডাবল ডিজিট প্রবৃদ্ধি নেই। গড়ে ৫ শতাংশের মতো প্রবৃদ্ধি রয়েছে। গত এক মাসে আমরা ৩০টি ফ্যাক্টরি বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি। ঈদের আগে অনেকে মেশিন বিক্রি করে হলেও বেতন দিয়েছে।

পোশাক খাতকে বাঁচিয়ে রাখতে প্রণোদনা বাড়ানো দরকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, বরাদ্দ বেশী থাকলেও বছরে আমরা সর্বোচ্চ ৮০০ কোটি টাকার প্রণোদনা উঠিয়েছি। নানারকম আমলাতান্ত্রিক ঝামেলার কারণে অনেকেই ইনসেন্টিভ পান না, নেনও না। নতুন বাজারের ক্ষেত্রে প্রণোদনা বাড়ানো উচিৎ। পোশাক খাতকে পরাজিত বনের বিড়াল বানাবেন না। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, কৃষকের সঙ্গে মালিকের তুলনা করা চলে না। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে গেলে মনে হয় আমাদের পোশাক খাত শিশু। আসলেই আমরা দুর্বল শিশুর অবস্থানে চলে এসেছি। প্রস্তাবিত বাজেটে পোশাক কারখানায় প্রাকৃতিক গ্যাস, পানি ও বিদ্যুতে উপর ভ্যাট অব্যাহতির বিষয়টিকেও স্বাগত জানান বিজিএমইএ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রুবানা হক
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ