পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গত এপ্রিল মাস থেকে দেশজুড়ে দীর্ঘ সময়ের খরার দহনের মধ্যেও সিলেট বিভাগে হালকা ও মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। গত মে মাসে সারাদেশে সার্বিক বৃষ্টিপাত ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে ২৫.২ শতাংশ কম।
সেখানে শুধু সিলেট বিভাগে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৫১০ মিলিমিটারের স্থলে বৃষ্টি ঝরেছে ৫১৭.৫ মি.মি. অর্থাৎ ১.৫ শতাংশ বেশি। আবহাওয়া-প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল দেশের ঐতিহ্যবাহী অর্থকরী শিল্প-বাণিজ্য খাত চায়ের আবাদ-উৎপাদনের ক্ষেত্রে এই ধারাবাহিক বৃষ্টিপাত যথেষ্ট উপকার বয়ে এনেছে।
কেননা বৃষ্টি-প্রধান অঞ্চলেই চা আবাদ ও উৎপাদন হয়। দেশের চা-প্রধান সিলেট অঞ্চলে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতে বেশ সতেজ রয়েছে বাগানগুলো। তবে দ্বিতীয় চায়ের এলাকা চট্টগ্রামে এবার খরার কবলে পড়েছে চা শিল্পখাত। গত জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত পঞ্জিকা সালের প্রথম চার মাসে দেশে চা উৎপাদিত হয়েছে ৮৬ লাখ কেজি। গত বছরের একই সময়ে উৎপাদনের পরিমান ছিল ৫৪ লাখ কেজি। এবার ৩২ লাখ কেজি বেশি উৎপাদিত হয়েছে।
এর সুবাদে চা খাতের জন্য বর্তমান সময় সুদিন। চায়ের বাজার দরও চাঙ্গা রয়েছে। চলতি চা নিলাম মৌসুমে এ পর্যন্ত বিকিকিনি হয়েছে ৫২ লাখ ৭ হাজার ২২ কেজি। কেজিপ্রতি গড় মূল্য পড়েছে ২৩১ টাকা ৯৮ পয়সা। গত বছর একই সময়ে চা বিক্রি হয় ৪৫ লাখ ২২ হাজার ৬৮৭ কেজি। তখন কেজিপ্রতি গড় মূল্য ছিল ২১৪ টাকা ৪৫ পয়সা। চলতি বছরে এ যাবৎ ৬ লাখ ৮৪ হাজার ৩৩৪ কেজি চা পাতা বেশি বিক্রি হয়েছে। তাছাড়া গড় মূল্যও ১৭.৫৩ টাকা বেশি রয়েছে।
অন্যদিকে বিভিন্ন দিকে সুসময় সত্তে¡ও চা শিল্প-বাণিজ্যের বিকাশের পথে অন্যতম প্রধান বাধা ও গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে চোরাচালান। ভারতীয় নিম্নমানের চা বাজারে সয়লাব হয়ে গেছে। দেশের বিভিন্ন সীমান্ত পথে বানের মতোই আসছে ভারতের অত্যন্ত নিম্নমানের এমনকি খাবার অযোগ্য ও ভেজাল চা। দামে সস্তা ও রঙচঙে হওয়ায় ক্রেতারা প্রতিনিয়তই বিভ্রান্ত হচ্ছেন। সস্তা দামে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। আর বাজারে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশীয় উৎপাদিত ভালো মানের চা।
দেশের নামিদামি এমনকি রফতানিমুখী ও রঙ-ঘ্রাণ-স্বাদে উন্নততর ব্রান্ডের চায়ের (যেমন- ইস্পাহানি মীর্জাপুর চা) মোড়ক অবিকল নকল করেই চোরাপথে আসা ভারতীয় বস্তাপঁচা চা দোকানপাটে বিকিকনি হতে দেখা গেছে। সম্প্রতি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলায় প্রশাসনের অভিযানকালে এ ধরনের নকল মোড়কে চা বিক্রির সময় হাতেনাতে ধরা পড়ে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বিশেষত পার্বত্য এলাকায় রামগড়, চট্টগ্রামের উত্তর ফটিকছড়ি, মীরসরাই, ফেনীর ছাগলনাইয়া, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম, আখাউড়াসহ বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা দিয়ে চোরাপথে দেদারসে আসছে ভারতের নিম্নমানের চা। দামে সস্তা হওয়ায় চোরাচালানের চা বাজারে বিক্রি হচ্ছে বেশি। ভারতীয় বস্তাপঁচা ও বাতিল-লটের চায়ের চোরাপথে আসা কঠোর হাতে বন্ধ না হলে অদূর ভবিষ্যতে মার খাবে দেশের ঐতিহ্যবাহী এ শিল্পখাত।
এদিকে গত ১১ জুন মঙ্গলবার চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত চলতি মৌসুমের ৬ষ্ঠ আন্তর্জাতিক চা নিলাম বাজারে ৩৪ হাজার ৯৬৮ ব্যাগ পাতা চা এবং ৬ হাজার ৬১৫ ব্যাগ গুঁড়া চা বিক্রির জন্য আনা হয়। এরমধ্যে ৭০ শতাংশ গুঁড়ো চা এবং ৬০ ভাগ পাতা চা বিক্রি হয়। বিক্রিত চায়ের মধ্যে- পাতা চা ব্রোকেনস বেস্ট প্রতিকেজি ২১৬ থেকে ২৩২ টাকা, গুড ২০০ থেকে ২১৫ টাকা, মিডিয়াম ১৮০ থেকে ১৯৯ টাকা এবং পুওর ১৫০ থেকে ১৭৯ টাকা দরে বিকিকিনি হয়।
আবার গুঁড়ো চায়ের মধ্যে ফ্যানিংস বেস্ট প্রতিকেজি ২১৮ থেকে ২৩৬ টাকা, গুড ২০০ থেকে ২১৭ টাকা, মিডিয়াম ১৮০ থেকে ১৯৯ টাকা এবং পুওর ১৫৪ থেকে ১৭৯ টাকা দরে বিক্রি হয়। নিলাম বাজারে বিশেষভাবে চয়নকৃত কিছু উন্নতমানের চা উচ্চ দরে বিক্রি হয়েছে। এরমধ্যে- মধুপুর জিবিওপি প্রতিকেজি ৩৮৬ টাকা, মধুপুর ফ্যানিংস ৩৫৯ টাকা, ডিএমপিএফ-বিটিআরআই ২৭৯ টাকা দরে বিক্রি হয়। আগামী মঙ্গলবার চলতি মৌসুমের ৮ম নিলাম চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হবে। বিক্রির জন্য আনা হবে ৪২ হাজার ৯০২ ব্যাগ পাতা চা এবং ৮ হাজার ২৩৯ ব্যাগ গুঁড়ো চা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।