Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সোনালি আঁশ চাষে আগ্রহ নেই কৃষকের

শাক হিসেবে পাট বিক্রি বেড়েছে

ইসমাইল খন্দকার, সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ) থেকে | প্রকাশের সময় : ১৫ জুন, ২০১৯, ১২:০৮ এএম

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে সোনালী আঁশ খ্যাত পাট চাষাবাদে কৃষকের আগ্রহ কমছে। দিন দিন পাটের প্রতি অনীহা সৃষ্টি হচ্ছে তাদের মাঝে। পাট চাষে সরকারের নানা মুখী পরিকল্পনা থাকলেও ন্যায্য দাম ও পানির অভাবে সিরাজদিখান উপজেলাজুড়ে পাট চাষাবাদ কমছে। 

গত কয়েক বছর ধরে পাটের আঁশ ছাড়ানোর পরিবর্তে শাক হিসেবে পাট বিক্রি বেড়েছে। সিরাজদিখান উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের প্রায় সব খালের মুখে পলি জমে যাওয়ায় পানি আসতে পারছে না। একই সঙ্গে কৃষকরা পাটের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। তাই কৃষক পাট চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। গত বছর যারা পাট চাষ করেছিলেন পানির অভাবে জাগ দিতে তাদেরকে সমস্যায় পড়তে হয়েছিল।
কৃষকদের ভ্যান গাড়িতে করে পাট জাগ দিতে কোন পুকুর কিংবা নদীতে নিয়ে যেতে শ্রমিক ভাড়ায় বাড়তি খরচ হয়েছে কৃষকদের। তাই উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় পাট চাষ করতে অনীহা প্রকাশ করছেন কৃষকরা। তবে পাট শাক হিসেবে খেতে অনেক সুস্বাদু হওয়ায় পাটের পাতার কদর রয়েছে বাজারে। উপজেলার অনেকেই আশের জন্য পাট চাষ করছেন না, করছেন বাজারে শাক বিক্রির জন্য। আবার কেউ পাটের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় পাট চাষ ছেড়ে অন্য কিছু করছেন।
উপজেলা ঘুরে কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আলুর জমিতেই হচ্ছে পাট চাষ। তবে সেচ দিয়ে বা বৃষ্টি হলে ভেজা জমিতে পাওয়ার টিলারে চাষ বা চাষ না দিয়েও দানা ছিটিয়ে পাট রোপন হচ্ছে। এক থেকে দুই মাসের মধ্যে পাট শাক হিসেবে বিক্রি করা যায়। সব খরচ মিলিয়ে লোকসান না হওয়ায় কৃষকরা শাক উৎপাদনের দিকে ঝুঁকছেন। তারা বলেন, পাট রোপন, শ্রমিক ও জাগসহ অন্যান্য খরচ মিলিয়ে যে পরিমাণ লাভ আসার কথা তা আসে না। উল্টো লোকসান গুণতে হয়।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর দেশি পাট ১৫০ হেক্টর ও তোষা পাট এক হাজার ৫৮০ হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় এ বছর ৩০ হেক্টর জমিতে কম চাষ হয়েছে।
উপজেলার বাসাইল ইউনিয়নের ডাকাতিয়াপাড়া গ্রামের চাষি সোহাগ বলেন, তিনি এ বছর চার বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। পাটের ন্যায্য মূল্য ও পাট চাষে খরচ ও সময় বেশি লাগায় পাট চাষ করেন না। পাট চাষের একই সময় বর্ষার আগ পর্যন্ত দুইবার পাট শাক বিক্রি করতে পারেন। চার বিঘা জমিতে শাক বিক্রি করে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা পান।
কোলা ইউনিয়নের রক্ষিৎপাড়া গ্রামের অপর চাষি মো. মোক্তার হোসেন বলেন, গত বছর তিনি ১০ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিলেন। ন্যায্য দাম ও পানির অভাবে পাট চাষ ছেড়ে দিয়ে একই জমিতে চলতি বছর আখ চাষ করেছেন। আখ চাষে এক বিঘা জমিতে খরচ হয় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। আর উৎপাদিত আখ বিক্রি করে ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা লাভ হয়ে থাকে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবোধ চন্দ্র রায় ইনকিলাবকে বলেন, আবহাওয়ার বিরুপ প্রভাবের কারনে পাট চাষ কিছুটা কম হয়েছে। সময় মত পানি ও ন্যায্য মূল্য পেলেই পাট চাষে আরো আগ্রহ প্রকাশ করবেন কৃষকরা। তবে কৃষক যেভাবে লাভবান হয় সে ভাবে কাজ করছে কৃষি অফিস।#



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পাট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ