Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইতিকাফের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট-২

এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুন্শী | প্রকাশের সময় : ২ জুন, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিমে ইতিকাফ প্রসঙ্গে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইতিকাফ করতেন, যতক্ষণ না আল্লাহ পাক তার ওফাত করেছেন। তার ওফাতের পর তার স্ত্রীগণ ইতিকাফ করেছেন। ইতিকাফের হুকুম সম্পর্কে অভিমত ব্যক্ত করতে গিয়ে ইমাম ইবনুল হুম্মাম (রহ.) বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর এই কাজ নিরবচ্ছিন্ন ও ক্রমাগতভাবে করা এবং বিনা কারণে পরিত্যাগ না করা, সাহাবিদের মধ্যে যারা ইতিকাফ করেননি তাদেরকে এর জন্য অভিযুক্ত না করা হতে বুঝা যায় যে, এটি সুন্নাত। যদি এর অন্যথা হতো, তাহলে ইতিকাফ ওয়াজিব বলে প্রমাণিত হতো। মোটকথা, ইতিকাফ সুন্নাত। একে অধিকাংশ ফোকাহা সুন্নাতে কেফায়া বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন। অর্থাৎ ব্যক্তিগতভাবে যেমন সুন্নাত তেমনি মহল্লার মসজিদে কেউ যদি ইতিকাফ করেন, তাহলে সবার পক্ষ থেকে সুন্নাতে কেফায়া রূপে তা আদায় হয়ে যাবে।
রাসূলুল্লাহ (সা.) কখনো কখনো বিশেষ কোনো কারণে ইতিকাফ করেছেন। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেছেন, অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সা.) সেই রমজান মাসের ইতিকাফ পরিহার করেছেন এবং শাওয়াল মাসের ১০ দিন ইতিকাফ করেছেন। - সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিম।
রাসূলুল্লাহ (সা.) নিয়মিত ইতিকাফ করলেও কোনো কোনো সাহাবি ইতিকাফ করেননি। এ প্রসঙ্গে ইমাম মালিক (রহ.) বলেছেন, হজরত আবু বকর (রা.), হজরত উমর (রা.), হজরত ওসমান (রা.) ও ইবনুল মুসাইয়্যেব (রা.) নিয়মিত ইতিকাফ করেছেন বলে আমার নিকট খবর পৌঁছেনি। ইতিকাফের তীব্রতা ও কঠোরতার জন্য তারা কখনো কখনো ইতিকাফ করেননি। ইতিকাফে রাত এবং দিন অভিন্ন। ১০ দিন ইতিকাফকারীর উচিত মাহে রমজানের ২০ তারিখ মাগরিবের সময়ই মসজিদে অবস্থান গ্রহণ করা। অন্যথায় চান্দ্রমাসের হিসাবে ১০ দিন পূর্ণ হবে না। আর ইতিকাফ সংক্রান্ত হাদিসসমূহ থেকে জানা যায়, পুরুষদের ইতিকাফ মসজিদেই হতে হবে। আর মহিলারা নিজ নিজ আসাবস্থলে নির্দিষ্ট প্রকোষ্ঠে ইতিকাফ করবে। বিশেষ জরুরত ছাড়া ইতিকাফস্থল পরিত্যাগ করতে পারবে না। খাওয়া-দাওয়া মসজিদেই সম্পন্ন করতে হবে। পায়খানা-পেশাব কিংবা অজু-গোসল ব্যতীত অন্য কাজের জন্য মসজিদের বাইরে গেলে ইতিকাফ নষ্ট হয়ে যাবে। মুয়াত্তা ইমাম মুহাম্মদ-এ উল্লেখ আছে, বর্ণনাকারী হজরত আয়েশা (রা.) বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন মসজিদে ইতিকাফ করতেন, তখন তিনি মসজিদে থেকেই স্বীয় মাথা মোবারক আমার নিকটবর্তী করে দিতেন। তখন আমি তার মাথা মোবারক আঁচড়ে দিতাম এবং তিনি এ সময় নিতান্ত মানবীয় প্রয়োজন ছাড়া কখনো গৃহে আসতেন না। ইতিকাফের দ্বারা গোনাহ মাফ হয়, আল্লাহ পাকের রেজামন্দি অর্জনের পথ সহজতর হয় এবং ইতিকাফকারীর মধ্যে দুনিয়ার আসক্তি কমে যায়। সুতরাং সময় ও সুযোগের সদ্ব্যবহারকল্পে ইতিকাফ করা সব মুমিন মুসলমানের জন্যই শ্রেয়।



 

Show all comments
  • Mohammad Sirajullah, M.D. ২৪ এপ্রিল, ২০২০, ৪:৪৮ এএম says : 0
    We face this question everyday and can not answer with our very limited knowledge of Islam. Question is what will happen to millions of people who did not hear about Prophet Muhammad (SA) and his prophethood. Even in Bangladesh people did not hear about the prophethood of Muhammad (SA) until 600 years after his death. What would happen to these fore fathers of ours. They lived in the period of Muhammad (SA) ‘s Nobuyat but did not hear his name even. Same is true for the millions of people who lived in American Continents. Next question comes the Bush men in Andaman, Australia, Newzealand and Amazon (They stay naked) who were not visited by any body from Tabligee Jamat. Will they go to heaven ? or get burnt in Hell. Also What will happen to Hijras. Will any body with better religious knowledge please write an article on this subject for our education. Islam says education is mandatory for all the Muslims and Muslimas.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মাহে রমজান

৩ এপ্রিল, ২০২২
৩ এপ্রিল, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ