Inqilab Logo

সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অবহেলায় মলিন জিয়া স্মৃতি জাদুঘর তবুও দর্শনার্থীর ভিড়

প্রকাশের সময় : ৩০ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

রফিকুল ইসলাম সেলিম : শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে জানতে প্রতিদিন দেশি-বিদেশি শত শত দর্শনার্থী ভিড় করছে চট্টগ্রামের জিয়া স্মৃতি জাদুঘরে। গড়ে প্রতিদিন ৪৩২ জন জাদুঘরটি পরিদর্শন করছে। বছরে প্রায় সোয়া লাখ পর্যটক আসছে এখানে।
তবে অনাদর, অবহেলা আর অযতেœ মলিন হয়ে পড়েছে শতবছরের ঐতিহ্যবাহী এই জাদুঘর ভবনটি। দর্শনার্থী আগমনের দিক থেকে দেশের তৃতীয় স্থানে থাকা এই সরকারি জাদুঘরটিতে ২০০৬ সালের পর আর কোন বড়ধরনের সংস্কার কাজ হয়নি। ‘টেকনিক্যাল’ কারণ দেখিয়ে জাদুঘরটি সংস্কারে কোন বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে না। ফলে জরাজীর্ণ ভবনটিতে যেকোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
ব্রিটিশ আমলে ১৯১৩ সালে নির্মিত দৃষ্টিনন্দন পুরাতন সার্কিট হাউজ ভবনটি এখন জিয়া জাদুঘর। ৩৫ বছর আগে ১৯৮১ সালের ৩০ মে কালো রাতে এ ভবনে শাহাদাতবরণ করেন বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেনানী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। অভিশপ্ত এ ভবনের শয়নকক্ষে ছোপ ছোপ রক্তে ভেজা কার্পেট, বুলেটে ঝাঝরা হয়ে যাওয়া দেয়ালের সেই ভয়াল বিভীষিকার চিহ্ন এখনও কাঁদায় জিয়াপ্রেমিক সাধারণ দর্শকদের। ভবনের প্রতিটি কক্ষে জিয়াউর রহমানের বর্ণাঢ্য জীবনের অসংখ্য ঘটনাবহুল নিদর্শন স্থান পেয়েছে।
রয়েছে ঐতিহাসিক এবং দুর্লভ অনেক ছবি ও দর্শনীয় বস্তু। সৈনিক থেকে রাষ্ট্রনায়ক থেকে শুরু করে আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার, সার্কের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে জিয়াউর রহমানের ভূমিকা স্থান পেয়েছে এ জাদুঘরে। একজন পরিপূর্ণ জিয়াকে জানতে এবং বুঝতে এই যাদুঘরে আসছেন দেশ-বিদেশের অনেক মানুষ। অনেকে আসেন দৃষ্টিনন্দন ভবনটি দেখতে। তবে ভবনের ভেতরে থাকা মানুষটির বর্ণাঢ্য জীবনগাথা তাদেরও নাড়া দেয়।
গতকাল রোববার সকালে জিয়া স্মৃতি জাদুঘর ঘুরে দেখা যায় অনেক দর্শনার্থী। কেউ এসেছেন ছেলে মেয়েদের নিয়ে। কেউ একাই ঘুরতে এসেছেন। নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী গোলাম মোস্তফা ব্যবসার কাজে চট্টগ্রাম আসেন। এক ফাঁকে ঘুরতে আসেন জাদুঘরে। তিনি বলেন, অনেকবার চট্টগ্রাম এসেছি, তবে এখানে আসার সুযোগ পাইনি। জাদুঘর ঘুরে দেখার পর জিয়াউর রহমান সম্পর্কে তার ধারনা একেবারেই পাল্টে গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, জিয়াকে বলা হচ্ছে ‘রাজাকার’, ‘পাকিস্তানের চর’। এসব কথা যে অপপ্রচার তা এখানে না এলে এতো ভাল করে বুঝতেই পারতাম না। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, জিয়ার দল বিএনপি জিয়ার আদর্শ তো দূরের কথা তার কর্মময় জীবন-দর্শন প্রচার করারও কোন উদ্যোগ নিতে পারেনি। তাদের কোন মিডিয়াও নেই, প্রকাশনাও নেই। দেশে এত মিডিয়া অথচ জিয়াকে নিয়ে কারো কোন অনুষ্ঠান নেই। এই জাদুঘর সে ঘাটতি কিছুটা হলেও পূরণ করছে বলে মনে করেন তিনি।
সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছেলেকে নিয়ে জাদুঘরে আসেন নোয়াখালীর সোনাইমুড়ির বাসিন্দা আবদুল জব্বার। তিনি বলেন, জিয়ার সম্পর্কে অনেক শুনেছি। অনেক কিছু জানি। কিন্তু আমার ছেলে তার সম্পর্কে কোন ধারণা নেই। বাজারে জিয়ার ওপর কোন বইও তেমন নেই। তাই জিয়াউর রহমান সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দিতেই ছেলেকে নিয়ে আসা। এখানে যা কিছু তা একেবারেই বাস্তব। এটা ইতিহাসের অংশ। তিনি মনে করেন দেশের মানুষ স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যেমন জানবে তেমনি স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানকেও জানবে। কারণ তারা দুইজনই এই দেশের ইতিহাসের অংশ।
কয়েকজন দর্শনার্থী জিয়া স্মৃতি জাদুঘরের দৈন্যদশার বিষয়টি তুলে ধরেন। তারা বলেন, জাদুঘরটির সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ হচ্ছে না। কর্তৃপক্ষের কিছুটা অবহেলা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পুরো ভবনটি মলিন হয়ে গেছে। জিয়া স্মৃতি জাদুঘর লেখা স্মৃতি ফলকটিতে কি লেখা তা বোঝার উপায় নেই। খসে পড়েছে ভবনের আস্তর। দরজা-জানালায় ধুলোবালির আস্তরণ। পর্দার নিচে ঝুলছে মাকড়সার জাল। জাদুঘরের ভেতরের টয়লেট ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। পাঁচ তারকা হোটেল রেডিসন ব্লু আর নতুন সার্কিট হাউজের মাঝখানে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী দৃষ্টিনন্দন এ ভবনটির দৈন্যদশা খুবই বেমানান দেখাচ্ছে। দর্শনার্থীরা বলছেন, অনাদর, অবহেলা চলতে থাকলে জাদুঘরটি দর্শক হারাবে। জাদুঘর কর্মকর্তাদের কাছ থেকে খোঁজ নিয়ে দর্শনার্থীদের অভিযোগের সত্যতাও মিলেছে।
জানা যায়, ২০০৬ এর পর ভবনটির কোন সংস্কার কাজ হয়নি। একজন কর্মকর্তা জানান, সংস্কার কাজের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে অনেক আগে। তবে তা পাশ হচ্ছে না। উপরের কর্তা ব্যক্তিরা বলছেন, এটি জিয়ার নামের জাদুঘর। টাকা বরাদ্দ পেতে টেকনিক্যাল সমস্যা আছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, জাদুঘরটি এখন লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাঁড়িয়েছে। দর্শনার্থী ফি থেকে বছরে প্রায় ১৬ লাখ টাকা আসছে। অডিটোরিয়াম ভাড়া দিয়েও আয় হচ্ছে অনেক। তাছাড়া পুরাতন সার্কিট হাউজের এ ভবনটি শুধুমাত্র দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্যশৈলী নয়, ইতিহাসেরও অংশ। এ ভবনটি সংরক্ষণ করা অত্যন্ত জরুরী। এ প্রসঙ্গে জাদুঘরের কিউরেটর মোঃ মতিয়ার রহমান ইনকিলাবকে বলেন, সংস্কার কাজের জন্য অর্থ বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আশা করছি বরাদ্দ পেলে শিগ্গির সংস্কার কাজ শুরু করা যাবে। দীর্ঘদিন বড় ধরনের সংস্কার কাজ না হওয়ার বিষয়টি স্বীকারও করেন তিনি।
এরপরও জাদুঘরটিতে দর্শর্নার্থীর সংখ্যা দিনে দিনে বাড়ছে। চলতি অর্থবছরের সাড়ে ৯ মাসে ৯০ হাজার ৩৬৮ জন দর্শনার্থী জাদুঘর পরিদর্শন করে। তাদের মধ্যে ১০৮ জন বিদেশী ৭ হাজার ৬৬৯ জন শিশু এবং বাকি ৮২ হাজার ৫৯১ জন প্রাপ্তবয়স্ক। সপ্তাহে ৫ দিন খোলা থাকে জাদুঘর। সে হিসেবে গড়ে প্রতিদিন ৪৩২ জন দর্শনার্থী এসেছে জিয়া স্মৃতি জাদুঘরে। জাদুঘর সূত্র জানায়, গেল অর্থবছরে ১ লাখ ২০ হাজার দর্শনার্থী জাদুঘরটি পরিদর্শন করেছেন। বৃহস্পতি এবং শুক্রবার দুইদিন সরকারী ছুটি ছাড়া বাকি ৫ দিন দর্শনার্থীরা জাদুঘর পরিদর্শন করতে পারেন। তবে শুক্রবারে বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত বিশেষ ব্যবস্থায় খোলা থাকে জাদুঘরটি। গ্রীষ্মকালে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা এবং শীতকালে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে জাদুঘর। জাদুঘরের কর্মকর্তারা জানান, ঢাকার জাতীয় জাদুঘর ও আহসান মঞ্জিলের পর সবচেয়ে বেশি দর্শনার্থী আসে জিয়া স্মৃতি জাদুঘরে। দেশের ৫টি জাদুঘরের মধ্যে দর্শনার্থী আগমনের হারে জিয়া জাদুঘর তৃতীয়।
১৯৯১ সালে ক্ষমতায় আসার পর বিএনপি সরকার জিয়াউর রহমান শাহাদাত বরণের স্মৃতি বিজড়িত চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজকে জিয়া স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেয়। তার ধারাবাহিকতায় ১৯৯৩ সালের ৬ সেপ্টেম্বর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এবং জিয়াউর রহমানের পতœী বেগম খালেদা জিয়া এই স্মৃতি জাদুঘরের উদ্বোধন করেন। এর পাশাপাশি চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজের নতুন একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। বৃটিশ স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত জিয়া স্মৃতি জাদুঘর ভবনটি এ অঞ্চলের মধ্যে দৃষ্টিনন্দন একটি ভবন হিসেবে দেশী-বিদেশী পর্যটকদের নজর কাড়ছে। ভবনটিতে জিয়াউর রহমানের উপর প্রকাশিত বিভিন্ন বই নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে একটি পাঠাগারও। সেখানে রয়েছে অভিজাত একটি অডিটোরিয়াম।
জিয়া স্মৃতি জাদুঘরের ১৭ গ্যালারীতে প্রায় সহস্রাধিক বস্তুগত নিদর্শন রয়েছে। এক নম্বর গ্যালারীতে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধপূর্ব সময়ে জিয়াউর রহমানের ভূমিকা। বিশেষ করে তার সৈনিক জীবনের বিভিন্ন দিক সেখানে স্থান পেয়েছে। দ্বিতীয় গ্যালারীতে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক নানা নিদর্শন। কালুরঘাটের বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে মুক্তিযুদ্ধ ঘোষণার স্মৃতি বিজড়িত বেতারযন্ত্রসহ নানান সামগ্রী সেখানে স্থান পেয়েছে।
তৃতীয় গ্যালারী সেক্টর ভিত্তিক মুক্তিযুদ্ধের নানা কর্মকা- ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। সেখানে আছে মুক্তিযুদ্ধকালীন সেক্টর কমান্ডার এবং বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবপ্রাপ্তদের প্রোট্রেট। চতুর্থ গ্যালারীতে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের কালুরঘাটে সংঘটিত ঐতিহাসিক যুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের কৌশলগত রণপ্রস্তুতির ঘটনা ডিউরমার মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
গ্যালারি পাঁচে রয়েছে কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারীতে একটি পোস্ট অফিস স্থাপনের নিদর্শন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন তৎকালীন জেড ফোর্সের অধিনায়ক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান মুক্ত অঞ্চল হিসেবে ওই এলাকায় একটি ডাকঘর স্থাপন করেন। গ্যালারি ছয়-এ জিয়াউর রহমানের সংগ্রামী সৈনিক জীবনের নানা চিত্র বর্ণনা করা হয়েছে। সেখানে স্থান পেয়েছে জিয়াউর রহমানের সামরিক পোশাক, ব্যাগ, টুপি, ছড়িসহ নানা সামগ্রী।
সাত নম্বর গ্যালারিতে বিএনপির প্রতিষ্ঠালগ্নে জিয়াউর রহমানর হাতে লিখা বিএনপির আদর্শ, উদ্দেশ্য সম্বলিত মেন্যুফেস্টু স্থান পেয়েছে। এছাড়া সেখানে আছে বিএনপির দলীয় পতাকা এবং মনোগ্রামের ছবি। আট নম্বর গ্যালারিতে স্থান পেয়েছে জিয়াউর রহমানের বেশকিছু বিরল ছবি। নয় নম্বর গ্যালারিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে বঙ্গভবনে অফিসকরাকালীন দৃশ্য। যা ডিউরমার মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। বঙ্গভবনে যে চেয়ার এবং টেবিলে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন সে চেয়ার টেবিলও এ গ্যালারিতে রাখা হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট থাকাকালে আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকা- শুরু করেন জিয়াউর রহমান। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল বিষয় ভিত্তিক বাংলাদেশের কৃষকের ভাগ্যোন্নয়নে খাল খনন কর্মসূচি। দশ নম্বর গ্যালারিতে ডিউরমার মাধ্যমে জিয়াউর রহমান নিজেই খাল কাটায় অংশ নেয়ার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
দেশ গড়ার পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন এবং অভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মনোযোগী হন জিয়াউর রহমান। এর ধারাবাহিকতায় এ অঞ্চলের ৭টি দেশ নিয়ে গঠিত হয় সার্ক। এগার নম্বর গ্যালারিতে সার্কের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে রয়েছে সার্কভুক্ত ৭টি দেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপ্রধানদের প্রোট্রেটসহ একটি ডিউরমা।
বার নম্বর গ্যালারিতে স্থান পেয়েছে প্রেসিডেন্ট হিসেবে জিয়াউর রহমানের বিদেশ সফরের বেশকিছু দুর্লভ ছবি। এর পাশাপাশি সেখানে রাখা হয়েছে তাঁর নির্মম হত্যাকা-ের পর বিশ্ব প্রচার মাধ্যমে প্রকাশিত খবরাখবরের কাটিং। গ্যালারি তেরতে শোভা পাচ্ছে প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিদেশ সফরকালে বিভিন্ন সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানদের দেয়া উপহার সামগ্রী।
গ্যালারী চৌদ্দ এবং পনেরতেও বিভিন্ন উপহার সামগ্রীর পাশাপাশি বিদেশ সফর এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সভা-সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও তার স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাথে বিদেশী সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানদের দুর্লভ অনেক ছবি। ষোল নম্বর গ্যালারিতে আসলেই দর্শকদের চোখ আটকে যাবে সেখানে রাখা একটি খাট তারপাশে রাখা ছোট্ট টেবিল এবং তার উপর একটি গ্লাসের দিকে।
শাহাদাতের পূর্বমুহূর্তে এ কক্ষেই রাত্রি যাপন করেছিলেন জিয়াউর রহমান। খাটের পাশে মেঝেতে রাখা কার্পেট এবং কক্ষ থেকে বের হওয়ার পথে ছোপ ছোপ রক্তের দাগ এবং বুলেটে ঝাঝরা হয়ে যাওয়ার দৃশ্য জ্বলজ্বল করছে এখনও। ওই কক্ষেই ঘাতকের তপ্ত বুলেটে ঝাঝরা হয়ে যায় জিয়াউর রহমানের শরীর। শাহাদাত গ্যালারি হিসেবে পরিচিত এ গ্যালারি থেকে বের হলেই গ্যালারি নম্বর সতের। চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজের শাহাদাত বরণের পর জিয়াউর রহমানের লাশ গোপনে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে রাঙ্গুনিয়ার জিয়ানগরে দূর্গম পাহাড়ি এলাকায় দাফন করা হয়। পরে সেখান থেকে লাশ তুলে নিয়ে ঢাকায় তাকে দাফন করা হয়। রাঙ্গুনিয়ার প্রথম মাজার এবং ঢাকার মাজারের চিত্র ডিউরমার মাধ্যমে এ গ্যালারিতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
এদিকে প্রতিবছর জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ মিলাদ ও বিশেষ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে আসছে। আজ সোমবার ৩৫তম শাহাদাতবার্ষিকীতে মিলাদ মাহফিল হবে।



 

Show all comments
  • Foyze Rana ৩০ মে, ২০১৬, ১:১২ পিএম says : 0
    মানুষের মন থেকে কখনো মুছে ফেলা যাবেনা
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অবহেলায় মলিন জিয়া স্মৃতি জাদুঘর তবুও দর্শনার্থীর ভিড়
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ