পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : গত দুই বছরে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের সাথ জড়িত শ্রমিকদের কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা রক্ষায় সরকার, কারখানা মালিক, অ্যাকর্ড-অ্যালায়েন্সের নেয়া কার্যক্রম ও অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছে ইউরোপ, আমেরিকা ও আইএলও। এই কার্যক্রমকে অব্যাহত রাখা, শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের মাধ্যমে এ খাতের টেকসই উন্নয়নে গুরুত্ব দিয়েছেন তারা। একই সঙ্গে শ্রমিকদের অবাধ ট্রেড ইউনিয়নের সুবিধা নিশ্চিত করা, এ লক্ষ্যে প্রয়োজন অনুযায়ী শ্রম আইনের ফের সংশোধন করা, শ্রমিকের মর্যাদা ও নিরাপত্তা কার্যক্রম বাড়ানোর পক্ষে মত দিয়েছেন তারা।
পোশাক খাতের শ্রমিকদের নিরাপত্তা মান উন্নয়নে সরকার ও মালিকপক্ষের বিনিয়োগ বাড়ানোর পরিপ্রেক্ষিতে পোশাকের ন্যায্য দামের দাবিও এসেছে। সরকার, কারখানা মালিক ও শ্রমিকরা সমস্বরে এ দাবি তুলেছেন। তারা বলেছেন, সস্তায় পোশাক কেনার চিন্তা করে শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিত করার দাবি করা যায় না। শ্রম অধিকার নিশ্চিত করতে হলে পোশাকেরও ন্যায্য মূল্য দিতে হবে। একই সঙ্গে রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর শ্রম মান উন্নয়নে নেয়া পদক্ষেপ ইতিবাচক হলেও এখনো ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধনে জটিলতা, শ্রমিকের অপর্যাপ্ত মজুরি, শ্রম আইনে স্বল্প পরিমাণে ক্ষতিপূরণের প্রসঙ্গ তোলেন শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।
তৈরি পোশাক খাতের টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে ইউরোপ, আমেরিকা, আইএলও (আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা) ও বাংলাদেশের সরকারের সমন্বয়ে গঠিত প্ল্যাটফর্ম ‘সাসটেইনেবিলিটি কমপ্যাক্টের’ হাই প্রোফাইল বৈঠক গতকাল ঢাকার একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৩ সালে রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর গঠিত এই প্ল্যাটফর্মের প্রথম বৈঠক গত বছর বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে হয়েছিল। ওই বৈঠকের পর অগ্রগতি পর্যালোচনা করতে ঢাকায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো। এবার এ উদ্যোগের সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হলো কানাডা। দিনব্যাপী বৈঠক ও সংশ্লিষ্ট পক্ষের সঙ্গে আলোচনা-পর্যালোচনা শেষে উভয় পক্ষ একটি যৌথ ঘোষণা উপস্থাপন করে। এতে বলা হয়, ব্রাসেলস সভার পর শ্রম নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উন্নয়ন তাৎপর্যপূর্ণ। এটি চলমান রাখতে এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ ঐক্যবদ্ধ থাকবে। তবে ট্রেড ইউনিয়ন প্রক্রিয়া আরো সহজ করা, সরকারি প্রতিষ্ঠান কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের (ডিআইএফই) দক্ষতা ও স্বচ্ছতা বাড়ানো, লোকবল নিয়োগের বিষয়ে উভয়ে একমত হয়েছে। নির্ভয়ে শ্রমিকদের কথা বলার অধিকার নিশ্চিত করতে আইএলও’র নীতিমালা অনুযায়ী শ্রম আইন ও বিধির সংশোধনের লক্ষ্যে আলাপ-আলোচনা শুরু করা, রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকায় ট্রেড ইউনিয়ন নিশ্চিত করতে আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধন, রপ্তানির সঙ্গে সম্পৃক্ত সব ধরণের কারখানা পরীক্ষা ও সংস্কার নিশ্চিত করা এবং এ জন্য প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দেয়া। একই সঙ্গে সংস্কার প্রক্রিয়া ও এর অগ্রগতি স্বচ্ছতার সাথে তদারকি ও তা ডিআইএফই’র ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা, এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে সহায়তা করা, কারখানা সংস্কারের লক্ষ্যে দেয়া অর্থের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করার বিষয়টিও যৌথ ঘোষণায় এসেছে। আগামী বছরের শুরুতে ফের এর পর্যালোচনা হবে।
সন্ধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলনে যৌথ ঘোষণা উপস্থাপন করেন বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের সফরকারি দলের প্রধান সান্ড্রা গ্যালিনা, যুক্তরাষ্ট্রের সফরকারি দলের প্রধান মাইকেল জে ডিলেনি, আইএর’র প্রতিনিধি ড্যান কুনিয়া। বানিজ্য মন্ত্রী বলেন, আমাদের অগ্রগতি তারা সবাই স্বীকার করেছেন। সন্তোষ জানিয়েছেন। এ বিষয়ে তাদের কোন মতানৈক্য নেই। তবে কিছু ক্ষেত্রে আরো উন্নতির প্রয়োজন রয়েছে। সেটি চিহ্নিত করা হয়েছে।
বাংলাদেশের পোশাক খাতের কর্মপরিবেশের নিরাপত্তা বিষয়ে অগ্রগতি স্বীকার করেছেন মাইকেল ডিলেনিও। তিনি বলেন, এই ইস্যুটি এখন আর বাংলাদেশের নয়। এটি গ্লোবাল ইস্যু। তবে অবাধে ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকারসহ শ্রমিকের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা, তাদের মর্যাদা নিশ্চিত করা, শ্রম আইনের যথাযত বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ইউরোপ সব সময় বাংলাশের সঙ্গে একত্রে কাজ করবে।
এ সময় বাংলাদেশের যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেন্স ব্লুম বার্নিকাট, ইইউ রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়াদুন, আইএলও’র কান্ট্রি ডিরেক্টর শ্রীনিভাস রেড্ডিসহ পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের শ্রমিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।