Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দিনে ৫৬৫ কোটি টাকা আদায় করতে হবে এনবিআরকে

প্রকাশের সময় : ২৯ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : আগামী (২০১৬-১৭) অর্থবছরের বাজেটে রাজস্ব আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হচ্ছে তা পূরণ করতে প্রতিদিন ৫৬৫ কোটি টাকা কর আদায় করতে হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান। গতকাল শনিবার রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অফ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ভবনে মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন-২০১২ বাস্তবায়ন নিয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে এসব তথ্য জানান এনবিআর চেয়ারম্যান। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন।
এনবিআরের চেয়ারম্যান বলেন, দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বাজেট আগামী ২ জুন অর্থমন্ত্রী জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করতে যাচ্ছেন। এবারের ৩ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকার বাজেটের মধ্যে ২ লাখ ৩ হাজার ১৫০ টাকার রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হচ্ছে। সে হিসাবে মাসিক প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা, দৈনিক ৫৬৫ কোটি টাকা এবং প্রতি ঘন্টায় প্রায় ২৪ কোটি টাকা আমাদের রাজস্ব সংগ্রহ করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের প্রথমে বদলাতে হবে। রাজস্ব আদায়ে গণমুখী অবস্থান নিতে হবে। ব্যবসায়ীদের ওপর চাপ যেন না পড়ে সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। আমরা আয়কর মেলাতে দেখেছি করদাতাদের তীব্র ভিড়। তাই আমি মনে করি, আমরা যদি পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারি তাহলে আরো বেশি রাজস্ব আদায় সম্ভব হবে।
নতুন ভ্যাট আইন নিয়ে এ কর্মকর্তা আরও বলেন, আমরা ভ্যাট আইন বুঝানো ও তা বস্তÍবায়নের জন্য দু’বছর ধরে বিভিন্ন জেলা-উপজেলা ও শহরে সেমিনার-কর্মশালা করছি। চেষ্টা করছি যেন বিষয়টি সাধারণ মানুষের কাছে সহজভাবে উপস্থাপন করা যায়। আমরা মূলত প্রধানমন্ত্রীর রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি। কেননা ২০২১ রূপকল্প বাস্তবায়ন হলেই রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাশেদ খান মেনন বলেন, আমাদের দেশে করের আওতায় যে পরিমাণ লোকের থাকা প্রয়োজন সে পরিমাণ লোক নেই। অন্য সকল দেশে করদাতা অনেক বেশি। আসলে আমরা কর দিতে চাই না। সাধারণ মানুষ অনেকেই কর দেয়। তারা কর দিতে চায়। কর দিতে চায় না তারাই, যাদের আয় বেশি। তাদের হয়তো অপ্রদর্শিত আয় রয়েছে। অথবা এতো বেশি আয় হয়েছে যদি তারা কর দিতে চায় তাহলে তারা ধরা পড়ে যাবে।
তিনি বলেন, আগামী অর্থবছরের ৩ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকার যে বাজেট ঘোষণা করতে যাচ্ছে সরকার, অনেক আলোচনায় এটাকে উচ্চাভিলাষী বাজেট বলা হচ্ছে। কিন্তু এটাও সত্য এই বাজেট যদি আমরা না দিতে পারি, তাহলে আমাদের যে উন্নয়নের গতিধারা ধরে রাখতে পারবো না। তিনি আরো বলেন, আমাদের সবচেয়ে বড় অর্জনের হলো যে, গত ৭ বছর ধরে আমাদের জিডিপি’র প্রবৃদ্ধি ৬ ঘরে ছিল। এখন সেই বৃত্ত ভেঙে তা ৭ পযর্ন্ত উন্নীত করেছি। আমাদের এই প্রবৃদ্ধি ধারাবাহিকতাকে বজায় রাখতে হলে অবশ্যই কর দিতে হবে এবং করের আওতাও বৃদ্ধি করতে হবে বলে যোগ করেন এই মন্ত্রী।
মন্ত্রী জানান, আশির দশকে বৈদেশিক সাহায্য নির্ভর আমাদের বাজেট দিতে হতো। কিন্তু এখন তা কমে ৪ থেকে ৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এটা থেকে সরকার পুরোপুরি বেরিয়ে আসতে চায় মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এজন্যও আমাদের করের পরিধি বাড়াতে হবে। কর আদায় বৃদ্ধি করতে পারলে আমাদের অন্যের উপর নির্ভরতা কমে আসবে।’
তিনি নতুন ভ্যাট আইন নিয়ে বলেন, এই আইন জলদি বুঝে নেয়ার বিষয় নয়। সাধারণ মানুষ যেন বুঝতে পারে সেজন্য সভা-সেমিনার-ওয়ার্কশপ অব্যাহত রাখতে হবে। ১৯৯১ সালে আইনের মাধ্যমে যখন ভ্যাটের প্রচলন করা হয়, তখন এটা নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছিল। এমনকি আমরাও বিরোধী দলে থেকে এর বিরোধিতা করেছি। কিন্তু পরবর্তীতে এই ভ্যাটই রাজস্ব আদায়ে বিশাল ভূমিকা পালন করছে।
এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরো বক্তব্য রাখেন এনবিআর সদস্য (কর) আব্দুর রাজ্জাক, সদস্য (মূসকনীতি) ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন এবং সদস্য (শুল্কনীতি) সুলতান মো. ইকবাল প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দিনে ৫৬৫ কোটি টাকা আদায় করতে হবে এনবিআরকে
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ