পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বগুড়ায় চাঁদাবাজির সবচেয়ে বড় সেক্টর পরিবহন খাতে ১০ টি পৃথক সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মাসে প্রায় কোটি টাকার চাঁদা উঠলেও ঈদ উপলক্ষে এই পরিমাণ ৩ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। ক্ষমতাসীন দলের নেতারা পরিবহন খাতে চাঁদাবাজি করে বিপুল অর্থের মালিক হলেও দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সিএনজি, অটোরিকশা ভ্যানের চালক, মালিক ও শ্রমিকরা।
জানা গেছে, বগুড়ায় পরিবহন খাতে চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের এক শ্রেণির নেতা। নির্দিষ্ট ১০টি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মালিক-শ্রমিকদের নামে মাসে প্রায় পৌনে ৩ কোটি টাকা চাঁদাবাজি হয়। পুলিশের কাছে চাঁদার টাকার ভাগ যাওয়ায় প্রকাশ্যে চলা চাঁদাবাজি দিনকে দিন মালিক ও শ্রমিকদের জন্য ভীষণ যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভুক্তভোগীরা জানিয়েছে, সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে পুলিশের সামনে দিয়েই ঢাকা-রংপুর ও বগুড়া-নাটোর ও বগুড়া নওগাঁ মহাসড়কে মাঝে মাঝে গ্যাপ দিয়ে নিয়মিতভাবে চলছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা। ‘টোকেন বাণিজ্যে’র মাধ্যমে চলছে তিন চাকার এসব যান। সিএনজি অটোরিকশা, ইজি বাইক, চার্জার ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান ও দূরপাল্লার বাস-কোচ, ট্রাক সব মিলিয়ে প্রতিদিন সাড়ে ৬ লাখ টাকার চাঁদা তোলা হয়। যার একটি অংশ যায় পুলিশের পকেটেও।
বিআরটিএ বগুড়া ও ট্রাফিক পুলিশের তথ্য মতে, বগুড়া শহরেই প্রায় ২০ হাজার সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করে। এর মধ্যে মাত্র পাঁচ হাজারের নিবন্ধন আছে। বগুড়া শহরকেন্দ্রিক এসব অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণ করে পৃথক ৫টি সিন্ডিকেট। এর মধ্যে দত্তবাড়ী স্ট্যান্ডে একটি, চেলোপাড়ায় দুটি, গোহাইল সড়কে একটি, পূর্ব বগুড়া মালিক সমিতি ও স্টেশন সড়কে একটি সংগঠনের নামে চলে চাঁদাবাজি। এই সিন্ডিকেট প্রতিদিন বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী প্রায় তিন হাজার ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যানে ২০ টাকা করে ৬০ হাজার, ৫০০ ইজি বাইকে ৩০ টাকা করে ১৫ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করে থাকে। প্রতিটি রিকশা ও ভ্যানের মালিককে সমিতির সদস্যভুক্ত হওয়ার জন্য ১ হাজার ৮০০ টাকা করে দিতে হয়।
বগুড়ার ওপর দিয়ে চলাচলকারী দূরপাল্লার বাস থেকে দিনে ও রাতে আড়াইশ টাকা তোলা হয় একটি শ্রমিক সংগঠনের নামে। এর মধ্যে দিনে উঠানো চাঁদার টাকা জমা হয় এক জনের নামে আবার রাতের টাকা জমা হয় অপর জনের নামে। যাদের নামে এই টাকা তোলা হয় তারা এক এখন বগুড়ার শীর্ষ ধনকুবের পরিণত হয়েছে। বগুড়া জেলা ট্রাক মালিক সমিতি বগুড়ার ওপর দিয়ে চলাচলকারী গড়ে প্রায় ৫০০ ট্রাক থেকে ১০০ টাকা করে চাঁদা ওঠায়। এর মধ্যে ৪০ টাকা সংগঠনের জন্য মন্ত্রণালয় থেকে নির্ধারিত থাকলেও বাকি টাকা লাইন খরচের নামে আদায় করে জমা হয় ব্যক্তিগত খাতে।
চাঁদাবাজ ১০টি সিন্ডিকেট বিভিন্ন পয়েন্টে দৈনিক প্রায় ৩০০ টাকা মজুরির বিনিময়ে শতাধিক কালেক্টর নিয়োগ করে ছোট ছোট টোকেন স্লিপ দিয়ে চাঁদার টাকা আদায় করা হয়। ১০ চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট বিভিন্ন সাংগঠনিক নাম ও পরিচয়ে চাঁদাবাজি করলেও ওই সব সংগঠনের নামে কোনো ব্যাংক একাউন্ট নেই বা চাঁদার টাকায় মালিক শ্রমিকদের কল্যাণে একট টাকাও ব্যয়ও করা হয় না। এদিকে ঈদ আসন্ন হওয়ায় বগুড়ার ট্রাফিক নিয়মিতভাবে বেআইনিভাবে চলাচলকারী যানবাহন আটক করে কিছু সংখ্যকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিলেও বাকি গুলো টাকা নিয়ে ছেড়ে দিচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, বগুড়ায় সাধারণভাবে পরিবহন খাতে দিনে ৬/৭ লাখ টাকার ওপেন চাঁদাবাজি হয়। মাসে প্রায় পৌনে ৩ কোটি বছরে কমবেশি ৩০ কোটি টাকার চাঁদাবাজি হয়। ভৌগলিক অবস্থানের কারণে এখানে পরিবহন খাতের চাঁদা আদায় অন্যান্য জেলার তুলনায় বেশি হয়। এই চাঁদা আদায়কে ঘিরে দলাদলি, মারামারি, খুন লেগেই থাকে। কথায় কথায় এই রুটে ওই রুটে যানবাহন চলাচলে ধর্মঘটও লেগেই থাকে।
স¤প্রতি পরিবহণ খাতের চাঁদাবাজিকে ঘিরে সৃষ্ট বিরোধের জেরে সম্প্রতি মাহবুব আলম শাহীন নামে একজন প্রভাবশালী পরিবহন মালিক খুনও হয়েছে। হত্যাকান্ডের এজাহার নামীয় ১ নম্বর আসামি নবগঠিত পরিবহন মালিক গ্রুপের সেক্রেটারি আমিনুল ইসলামকে বগুড়া বারের আইনজীবীরা আইনি সহায়তা না দেওয়াকে ঘিরে ফের অস্থির হয়ে উঠেছে পরিবহন সেক্টর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।