Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বরিশালে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করলো প্রতিপক্ষ গ্রুপ

প্রকাশের সময় : ২৯ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বরিশাল ব্যুরো : বরিশাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্রলীগ নেতা রেজাউল করীম রেজাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে নিজ সংগঠনের প্রতিপক্ষ গ্রুপের সন্ত্রাসীরা। এ হামলায় নিহত রেজার অপর ছয় অনুসারি ছাত্রলীগ কর্মী গুরুতর জখম হয়েছে। শুক্রবার রাত ১০টার দিকে ইনস্টিটিউটের প্রধান ফটকের সামনে এই হামলার ঘটনায় গোটা এলাকায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে। নিহত রেজা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের একটির নেতৃত্ব দিতেন। নিহত রেজাউল করীম পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার খড়িকোঠা গ্রামের মৃত আবদুস সাত্তারের ছেলে। সে বরিশাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ২০০৬-০৭ শিক্ষা বর্ষের ছাত্র ছিল। ছাত্রত্ব শেষ হলেও সে প্রধান ছাত্রাবাসের একটি কক্ষে অবৈধভাবে বাস করে ছাত্রলীগের একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছিল। ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের বিবাদমান দুই গ্রুপের বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষ গ্রুপ বহিরাগত ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের দিয়ে এ হামলা চালিয়েছে বলে সংশিষ্ট একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
বরিশাল মেডিকেলে চিকিৎসাধীন আহত ছাত্রলীগ কর্মীরা হচ্ছে মেকানিক্যাল বিভাগের ৭ম সেমিস্টারের ছাত্র আসাদুজ্জামান ফাহিম, মেহেদি হাসান, ইলেক্ট্রো মেডিক্যাল বিভাগের ৭ম সেমিস্টারের ছাত্র আশিকুর রহমান রায়হান, সোহাগ, আবদুর রহিম ও কাওছার।
আহত আশিকুর রহমান রায়হান জানান, প্রতিপক্ষ সাইদুল ইসলাম গ্রুপের সঙ্গে ক্যাম্পাসের আধিপত্য নিয়ে রেজা ও সাইদুলের দীর্ঘ দিন ধরে দ্বন্দ্ব-সংঘাত চলছিল।
রেজার সহযোগীরা অভিযোগ করেছেন, ইউনিস্টিটিউট সংলগ্ন আমির কুটির সড়কের বাসিন্দা সন্ত্রাসী জাহিদ সহ ৮/১০ জন ভাড়াটে সন্ত্রাসী সাইদুলের নেতৃত্বে রেজা ও তার সহযোগীদের ওপর হামলা চালায়। এক সপ্তাহ আগে জাহিদ ও তার সহযোগীরা ধারালো অস্ত্রসহ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। এসময় রেজার নেতৃত্বে এক গ্রুপ ধারালো অস্ত্রসহ জাহিদকে ধরে বেদম মারধরের পর পুলিশে সোপর্দ করে। দুদিন আগে জাহিদ জেল থেকে ছাড়া পায়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ইলেক্ট্রো বিভাগের তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, রেজার নেতৃত্বে তার সহযোগীরা তিনটি মোটর সাইকেলযোগে রাত সাড়ে ৯টার দিকে ক্যাম্পাসে ফিরছিল। প্রধান ফটক সংলগ্ন টুইন টাওয়ার ভবনের সামনে পৌঁছালে সেখানে আগে থেকে ওঁৎপেতে থাকা জাহিদের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী রেজার মোটরসাইকেল বহরের ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা রেজা ও তার সহযোগীদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতারি কুপিয়ে জখম করে। রেজার সহযোগীরা অভিযোগ করেন, বহিরাগত হামলাকারীদের সঙ্গে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের একটি গ্রুপের কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মীও ছিল। খবর পেয়ে প্রধান ছাত্রাবাস থেকে রেজার অনুসারীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। আহতদের উদ্ধার করে শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার পরে অপারেশন থিয়েটারে রাত পৌনে ১১টায় রেজার মৃত ুঘটে। শেবাচিম হাসপাতালের সার্জারী-৪ এর সহযোগী অধ্যাপক ডা. এস.এম নজরুল ইসলাম জানান, ধারালো অস্ত্রের কোপে রেজার ঘাড়ের রগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি আতাউর রহমান জানান, পলিটেকনিক কলেজে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বের জের ধরে এক গ্রুপের নেতা রেজাউর করিম রেজাকে ও তার সহযোগীদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে প্রতিপক্ষ গ্রুপ। ঘটনার পর পর বহিরাগত সন্ত্রাসী জাহিদের বাবা সহ দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। তবে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ঘটনায় কোন মামলা দায়ের হয়নি।
এদিকে রেজার মৃত্যুর খবর ক্যাম্পাসে পৌঁছার পর রাতেই তার অনুসারীরা পলিটেকনিক প্রধান সড়কের বাসিন্দা মহানগর যুবলীগের সদস্য মেহেদি হাসানের বাসায় হামলা-ভাংচুর চালায়। তারা ওই সড়কে যানবাহন ভাংচুরের চেষ্টা করলে কোতোয়ালী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বরিশালে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করলো প্রতিপক্ষ গ্রুপ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ