Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বেড়িবাঁধে শুভঙ্করের ফাঁকি

হুমকিতে উপকূলবাসীর জীবন-জীবিকা

প্রকাশের সময় : ২৯ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৪৫ পিএম, ২৮ মে, ২০১৬

শফিউল আলম : সমুদ্র উপকূলীয় বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও জোড়াতালি সংস্কার-মেরামতের নামে বছর বছর ধরে চলে আসছে সীমাহীন দুর্নীতি। এ নিয়ে সরকারি বরাদ্দকৃত অর্থের শুধুই হরিলুট হচ্ছে। এর পেছনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) একশ্রেণীর অসৎ প্রকৌশলী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ঠিকাদার মিলে গড়ে উঠেছে সংঘবদ্ধ লুটেরাচক্র। ওরাই রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়েছে। কিন্তু দেশের উপকূলে ‘স্থায়ী’ বেড়িবাঁধ আজো হয়নি।
উপকূলবাসীর জানমাল, বন্দর-শিল্পাঞ্চলসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও সম্পদের পুরোপুরি সুরক্ষা দিতে পারেনি নড়বড়ে, দায়সারা গোছের নির্মিত বেড়িবাঁধ। দেশের ২১টি উপকূলীয় জেলার প্রায় সাড়ে ৪ কোটি মানুষের জানমালের নিরাপত্তার জন্য অপরিহার্য হচ্ছে বেড়িবাঁধ। কিন্তু ঠিকমতো কোথাও বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও মেরামত না হওয়ায় সেই জোড়াতালির বেড়িবাঁধ পরিণত হয়েছে উপকূলবাসীর জন্য মরণফাঁদ। প্রতিনিয়ত ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস আর প্রবল জোয়ারের আতঙ্ক মাথায় নিয়েই দিনাতিপাত করতে হয় উপকূলবাসীকে। স্থায়ী ও টেকসই বেড়িবাঁধের অভাবে উপকূলবাসীর জীবন-জীবিকা হুমকির সম্মুখীন। কেননা কৃষি-খামার, ফসলি জমি, লবণের মাঠ, চিংড়িসহ মাছের ঘের, পুকুর, সবজি ক্ষেতসহ গ্রামীণ অর্থনীতি এমনকি বসতভিটা সবকিছুই উত্তাল সাগরের করাল গ্রাসের মুখে রয়েছে। ভাঙাচোরা বেড়িবাঁধ দিয়ে আবার কোথাও বেড়িবাঁধের চিহ্নও না থাকার কারণে সাগরের লোনা পানি গ্রাম-জনপদ ও ফসলের জমি প্লাবিত করছে নিয়মিত জোয়ার-ভাটায়। গত ২১ মে শনিবার ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাস রোয়ানুর আঘাতে আগের বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধের সাথে আরও নতুন করে বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। এতে করে নিয়মিত সামুদ্রিক জোয়ারে ডুবভাসি করছে উপকূলের বিস্তীর্ণ এলাকা। জীবন-জীবিকা নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছে লাখ লাখ উপকূলবাসী।
অতীতে দেশি ও বিদেশি বিপুল অংকের অর্থ বরাদ্দ বাবদ চট্টগ্রামের আনোয়ারা, বাঁশখালী, সীতাকু-, সন্দ্বীপ, পতেঙ্গা, কক্সবাজার, কুতুবদিয়া, মহেশখালী, চকরিয়া, পেকুয়া, টেকনাফ, নোয়াখালীর হাতিয়া, ভোলা জেলাসহ সমগ্র উপকূলীয় অঞ্চলে বেড়িবাঁধ নির্মাণ, সংস্কার বা মেরামতের কাজ চলেছে একের পর এক। কিন্তু কাজের মান নিয়ে উপযুক্ত তদারকি, যাচাই, কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার কোন বালাই ছিল না। বেড়িবাঁধের মানসম্মত কাজ হয়নি কোথাও। অধিকাংশ জায়গায় বেড়িবাঁধ টেকেনি, বিরান হয়ে গেছে সাগরের পেটে। এতে করে ফেরেনি উপকূলবাসীর ভাগ্য। তাদের মূল সমস্যা, দাবি তথা বেড়িবাঁধের অভাব যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই রয়ে গেছে। বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার কাজের পেছনে সীমাহীন দুর্নীতি, কারচুপি এবং এর মাধ্যমে সরকারি বরাদ্দ বাবদ শত শত কোটি টাকা লুটপাটকারী চক্রকে সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিত করে সাজা দেয়ার দাবি উঠলেও তা আমলে নেয়া হয়নি কখনও। এতে যথেচ্ছ নিম্নমানের কাজ গছিয়ে দিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেও পার পাওয়া খুবই সহজ হয়েছে। এ অবস্থায় দেশের টেকনাফ-সেন্টমার্টিন-শাহপরীর দ্বীপ, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, সীতাকু-, সন্দ্বীপ, হাতিয়া, ভোলা, বরিশাল, পটুয়াখালী, খুলনা, সাতক্ষীরা, দুবলারচর অবধি দেশের ৭১৫ কিলোমিটার বিস্তীর্ণ সমুদ্র উপকূলভাগ, চর ও দ্বীপাঞ্চল স্থায়ী ও টেকসই বেড়িবাঁধের অভাবে অরক্ষিত রয়ে গেছে। এখনও উপকূলবাসী তাকিয়ে আছে বেড়িবাঁধের আশায়।
নড়বড়ে বালির বাঁধ
খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে, দেশের সমুদ্র উপকূলভাগে, চর-দ্বীপাঞ্চলে বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও মেরামত কাজের নামে সবসময়ই শুভঙ্করের ফাঁকি, হরেক কায়দা-অপকৌশলে দুর্নীতি-অনিয়মই ‘নিয়মে’ পরিণত হয়েছে। বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও জোড়াতালি মেরামতে নয়-ছয় দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি বরাদ্দকৃত অর্থ লোপাট হয়েছে শত শত কোটি টাকার। বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ আদৌ মানসম্মতভাবে করা হয়নি এমন অভিযোগ সর্বত্রই। নিছক বালি ফেলে বাঁধ নির্মাণ কিংবা মেরামতের ‘মহড়া’ দেয়া হয়েছে। বৃষ্টি আর জোয়ারের সময় সেই বালি আবারও সাগরের পেটে চলে গেছে। এভাবে ঘন ঘন বেড়িবাঁধ ধসে গিয়ে সাগরে বিলীন হয়ে গেলেই ঠিকাদাররা ফের নতুন করে কাজ বাগিয়ে নেয়। অর্থাৎ বাঁধ যায়, কাজ আসে! নামেমাত্র কাজ করেই বিল তুলে নিয়ে সটকে পড়ে। বেড়িবাঁধের কাজে পালাক্রমে বছর বছর তাই চলছে। তাছাড়া বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও মেরামতের সময় তা যথেষ্ট উঁচু করেও কাজ করা হয়নি। সামুদ্রিক জোয়ারের সমান উঁচু করে বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার করা হয়েছে। এতে করে জোয়ারের পানি বেড়িবাঁধ অতিক্রম করে ফসলি জমি, লবণ মাঠ ও লোকালয় ভাসিয়ে দিচ্ছে। যথেষ্ট উঁচু ও মজবুত করে বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও মেরামত কাজ সম্পন্ন না করার কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় তা উপকূলবাসীকে সুরক্ষা দিতে পারছে না। ফলে বাস্তবে অকার্যকর হয়ে পড়েছে বেড়িবাঁধ। এলাকাবাসী অনেকেই বলেছেন, মাটি আর পানির কাজে সঠিক হিসাব পাওয়া খুব কঠিন। ঠিকাদার ও পাউবো’র অসাধু কর্তারা সেই সুযোগটিই নিয়ে থাকে। দেখা গেছে, সরকারি বরাদ্দ প্রাপ্তির পর ৫০ কোটি টাকার ঠিকাদারি কাজে বাস্তবে কাজ হয়েছে ৮/১০ কোটি টাকার। আর সিংহভাগই ঢুকেছে অসৎ সিন্ডিকেটের পকেটে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, দেশের দ্বীপাঞ্চল ও উপকূলভাগে শতকরা ৩৫ ভাগ জায়গায় বেড়িবাঁধের চিহ্ন অনেক আগেই মুছে গেছে। উপকূলের প্রায় ৪৫ ভাগ বেড়িবাঁধ কম-বেশি বিধ্বস্ত ও নড়বড়ে অবস্থায় রয়েছে। বাদবাকি ২০ ভাগ জায়গায় বেড়িবাঁধ থাকলেও তা অনেকক্ষেত্রে সামুদ্রিক জোয়ারের তুলনায় যথেষ্ট উঁচু, মজবুত ও মানসম্মত নয়। গত ২১ মে সংঘটিত ঘূর্ণিঝড়ের সাথে জলোচ্ছ্বাসে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায় ৬০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সম্পূর্ণরূপে এবং ১৭০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ আংশিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এতে করে সামুদ্রিক জোয়ারের লোনা পানিতে নিয়মিত প্লাবিত হচ্ছে বিস্তীর্ণ উপকূলভাগ। বেড়িবাঁধ অর্থাৎ দুর্যোগে উপকূলীয় অঞ্চলের প্রধান প্রতিরক্ষাব্যুহের অভাবেই জানমালের ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা বেড়ে গেছে। সরকারি হিসাব মতে, শুধু চট্টগ্রাম জেলায় কম-বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫ লাখ উপকূলবাসী। রোয়ানু’র মতো প্রতিটি ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাস সংঘটিত হওয়ার পর উপকূলবাসীর জোরালো দাবি সত্ত্বেও স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে সরকারের পক্ষ থেকে উপকূলবাসীকে সুরক্ষায় স্থায়ী পদক্ষেপ নেয়া হয় না। এটিই তাদের আক্ষেপ।
বরাদ্দ আসে : বাঁধ টেকে না
বারবার সরকারি বরাদ্দ আসে ঠিকই। কিন্তু কাজে যথেচ্ছ ফাঁকির কারণে সেই বেড়িবাঁধ টেকেনা। ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল সংঘটিত ভয়াল সেই ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাসের পর থেকেই কোটি উপকূলবাসীর প্রত্যাশা উপকূল-দ্বীপাঞ্চলে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মিত হবে। তারা তখন থেকেই স্থায়ী বেড়িবাঁধের জন্য সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে দেন-দরবার, ধরণা দিয়ে আসছে। এর পর বিভিন্ন সময় সরকারের পক্ষ থেকে বরাদ্দও আসে। কিন্তু সেই বরাদ্দের অর্থ ব্যাপকভাবে হয়েছে অপব্যবহার। বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও মেরামতের বরাদ্দ দিয়ে বালির বাঁধ তৈরি করা হলেও তা টেকেনি। দ্রুতই চলে গেছে সাগরের গর্ভে। চট্টগ্রামের সবচেয়ে প্রত্যন্ত উপকূলীয় উপজেলা বাঁশখালীতে এবার রোয়ানু’র আঘাতে ৯ জনের প্রাণহানিসহ এলাকাবাসীর সহায়-সম্পদের ক্ষতি হয়েছে সর্বাধিক। বাঁশখালী উপকূলে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য সরকারের তরফে নতুন করে ২৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয় অনেক আগেই। কিন্তু বেড়িবাঁধের নির্মাণ ও মেরামতের কাজ এখনও সেখানে শুরু হয়নি। পাউবো সূত্র জানায়, এবারের ঝড়-জালোচ্ছ্বাসে বাঁশখালীর বর্তমানে ছনুয়া, গন্ডামারা, খানখানাবাদ, শেখেরখীল, সরল, কাথরিয়া, বাহারছড়া, সাধনপুর, পুকুরিয়া, পুঁইছড়িসহ সাগর ও উপকূলীয় অভ্যন্তরীণ মিলে প্রায় ৪৪.৪৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ আংশিক কিংবা সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে আর্থিক ক্ষতি দাঁড়িয়েছে ১৩ কোটি টাকারও বেশি। ঘূর্ণিঝড়ের পর (২২ মে) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ক্ষতিগ্রস্ত বাঁশখালী পরিদর্শনকালে তাকে এলাকাবাসী ঘিরে ধরে দাবি তুলেছেÑ ‘আমরা রিলিফ (ত্রাণ সামগ্রী) চাই না, স্থায়ী বেড়িবাঁধ চাই’। এ সময় ত্রাণমন্ত্রী অবিলম্বে প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপকূলবাসীর সুরক্ষায় স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি ও গুরুত্ব তুলে ধরবেন বলে আশ্বাস প্রদান করেন।
এদিকে ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাস রোয়ানু’র ছোবলে আনোয়ারা সমুদ্র উপকূলভাগে প্রায় ১২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। আনোয়ারা উপকূলে ৭৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নামেমাত্র থাকলেও এর প্রায় ৯৫ ভাগেরই বর্তমানে কোন চিহ্ন নেই। বাঁধের অধিকাংশ স্থানে বড় বড় ফাটল রয়েছে। নিয়মিত সামুদ্রিক জোয়ারের লোাপানিতে ডুবভাসি করছে বিস্তীর্ণ উপকূলীয় এলাকা। মাছের ঘের, ফসলি জমি, জনবসতি প্লাবিত হচ্ছে। বিগত ২০১৪-১৫ অর্থবছরে রায়পুর এলাকায় বেড়িবাঁধের ১ কোটি ৭০ লাখ টাকার দায়সারা গোছের মেরামত কাজ হলেও তা আদৌ মানসম্মত হয়নি। ফলে সংস্কার কাজ শেষ হতে না হতেই তা সাগরেই বিলীন হয়ে গেছে। পাউবো সূত্র জানায়, আনোয়ারা উপকূলে বেড়িবাঁধের স্থায়ী সংস্কার ও নির্মাণ কাজে প্রায় ২৮০ কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষে একটি প্রকল্প একনেক কর্র্তৃক অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এদিকে স্থায়ী ও টেকসই বেড়িবাঁধ না থাকার কারণে চট্টগ্রাম নগর উপকণ্ঠের পতেঙ্গা-হালিশহর-কাট্টলী, ভাটিয়ারী, ফৌজদারহাট, জেলার সীতাকু-, সন্দ্বীপ, কক্সবাজার, কুতুবদিয়া, মহেশখালী, পেকুয়া, চকরিয়াসহ বিস্তীর্ণ উপকূলবাসীর জানমাল সুরক্ষা অনিশ্চিত অবস্থায় রয়েছে।
এদিকে চট্টগ্রাম অঞ্চলে প্রায় ৪ শ’ কিলোমিটার উপকূলীয় বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও মেরামত করে আসছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। এর পেছনে প্রতিবছর গড়ে ৫০ কোটি টাকা ব্যয় হয়। এ ক্ষেত্রে শুধু বিগত দেড় দশকের হিসাব ধরা হলে কমপক্ষে ৭৫০ কোটি টাকা খরচ করেও চট্টগ্রামের উপকূলভাগে স্থায়ী ও টেকসই বেড়িবাঁধ হয়নি আজও। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি), অনুন্নয়ন রাজস্ব খাত ও কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচির আওতায় বিপুল অর্থ ব্যয় করা হয় বেড়িবাঁধের নির্মাণ ও মেরামত কাজে। অথচ সেই দায়সারা গোছের মেরামত কাজে উপকূলবাসীর সুদিন ফিরেনি। নাজুক অবস্থাতেই রয়ে গেছে উপকূলব্যাপী বেড়িবাঁধ।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ ও রেডক্রিসেন্ট ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) সাবেক আঞ্চলিক পরিচালক এ জে এম গোলাম রব্বানী গতকাল (শনিবার) সমুদ্র উপকূলীয় বেড়িবাঁধ প্রসঙ্গে দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, টেকসই বেড়িবাঁধ না থাকার কারণেই দুর্যোগে উপকূলীয় অঞ্চলে জানমালের ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা বেশি হচ্ছে। দেখা গেছে, গত ২১ মে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু’র আঘাতে বাতাসের গতিবেগের তুলনায় জলোচ্ছ্বাসের ছোবল বেশি ছিল। এ কারণে বৃহত্তর চট্টগ্রামের বাঁশখালী, আনোয়ারা, পেকুয়া, চকরিয়ায় বসতঘর, ফসলি জমি, মাছের ঘের, লবণ মাঠ সাগরের লোনাপানিতে তলিয়ে গেছে। তিনি জানান, ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের ঘূর্ণিঝড়ের পর থেকেই উপকূলে স্থায়ী ও টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য জোরালো দাবি উঠে। কিন্তু তা আজো না হওয়ায় ক্ষয়ক্ষতি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ অবস্থায় অতি জরুরীভিত্তিতে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে আশু পদক্ষেপ নিতে হবে। সমগ্র উপকূলীয় বেল্টে জলোচ্ছ্বাস ঠেকানোর জন্য, লাখ লাখ উপকূলবাসী ও সম্পদ সুরক্ষার জন্য যথেষ্ট উঁচু করে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা অপরিহার্য। আর এ কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। টেকসই বেড়িবাঁধ না থাকায় বর্তমানে উপকূলীয় এলাকা অরক্ষিত। সামনে অমাবশ্যা-পূর্ণিমার ভরা জোয়ারে পুনরায় উপকূলভাগ প্লাবিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।



 

Show all comments
  • Hasib ২৯ মে, ২০১৬, ১:৪৩ পিএম says : 0
    অতি জরুরীভিত্তিতে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে আশু পদক্ষেপ নিতে হবে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বেড়িবাঁধে শুভঙ্করের ফাঁকি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ