Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্দোলন চায় ২০ দল

খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি

রফিক মুহাম্মদ | প্রকাশের সময় : ১৯ মে, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতারা প্রচন্ড চাপে। দলের তৃণমূল নেতারা চান চেয়ারপার্সনের মুক্তির দাবিতে দ্রুত রাজপথে আন্দোলন কর্মসূচি। কেন্দ্রীয় নেতারা বারবার আন্দোলনের আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত কোনো কর্মসূচি দিতে পারেননি। এতে তৃণমূলে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে। দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের পাশাপাশি বিএনপির চেয়ারপার্সনের মুক্তির দাবিতে এবার সোচ্চার হয়েছে ২০ দলীয় জোটের শরিক দলগুলো। সম্প্রতি ২০ দলীয় জোটের সভায় শরিক দলগুলো বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য জোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণার দাবি জানায়।
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপির নেতারা প্রতীকী অনশন, মানববন্ধন, সেমিনার, বিদেশি কূটনীতিকদের অবহিত করতে বৈঠক করা ছাড়া রাজপথে কোনো আন্দোলন করতে পারেননি কিংবা একটি বিক্ষোভ মিছিল করে সরকারের মনোভাব বোঝারও চেষ্টা করেননি। কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ না হলে মামলা হবে, এমন ধারণা দলটিকে রাজপথ থেকে দলীয় কার্যালয়ে আবদ্ধ করে ফেলেছে। এ অবস্থায় খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে রাজপথে আন্দোলন শুরু করতে চায় ২০ দলীয় জোট।
এ বিষয়ে ২০ দলীয় জোটের শরিক লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি- এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমেদ বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ঠেকাতে বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তার মুক্তির জন্য এলডিপি সারা দেশে জনমত গড়ে তুলবে। আন্দোলনের মাধ্যমে তাকে মুক্ত করতে হবে।
এ বিষয়ে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ২০ দলীয় জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘ দিন ধরে কারাগারে বন্দি আছেন। কার্যত গোটা দেশই আজ বন্দি। তাই খালেদা জিয়া এবং বন্দি দেশটাকে মুক্ত করার জন্য সবাইকে একসঙ্গে আন্দোলন সংগ্রাম করতে হবে।
তবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার এ বিষয়ে কিছুটা দ্বিমত পোষণ করেন। বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বলছেন, আইনি প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়ার জামিন সম্ভব নয়। আন্দোলনের মাধ্যমেই তাকে মুক্ত করতে হবে। নেতাদের বারবার এমন বক্তব্য দেয়ার পরও আন্দোলন কর্মসূচিতে বিএনপি যাচ্ছে না কেন? এর জবাবে খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বলেন, বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। এই দলের পক্ষে আইনি প্রক্রিয়ার বাইরে কিছু করার সুযোগ নেই। আমরা কোনোভাবেই আইনি প্রক্রিয়া লঙ্ঘন করতে পারি না। চেষ্টা করছি, আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই তাকে মুক্ত করতে।
বিএনপি চেয়ারপার্সন দীর্ঘ ১৫ মাস ধরে কারাবন্দি। গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির মামলায় দন্ডিত হয়ে তিনি কারাবন্দী হন। দলীয় প্রধানের মুক্তির জন্য আইনি পথে হাঁটছে বিএনপি। তবে এতে তারা খুব একটা সফল হতে পারছে না। আর খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে রাজপথের আন্দোলনও জোরদার হচ্ছে না। দলের নেতারা অনেক সময় আইনি ও আন্দোলন দুটো পথেই অগ্রসর হওয়ার কথা বললেও এখন পর্যন্ত কাক্সিক্ষত ফল পায়নি বিএনপি
গত বছর ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খালেদা জিয়াকে ছাড়া অংশ নিয়ে বিএনপির ভরাডুবির পর দলের নেতাকর্মী, সমর্থকদের কাছে চেয়ারপার্সনের মুক্তির দাবি আবার জোরালো হয়। তার মুক্তির জন্য বিএনপির সর্বস্তরে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণার দাবি ওঠে। তবে বিএনপির অধিকাংশ সিনিয়র নেতা মনে করেন, আইনি পথে খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব নয়। তারা সে কথা প্রকাশ্যে বলেছেনও। এ প্রসঙ্গে আইনজীবী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন ইনকিলাবকে বলেন, সরকার চাইলেই কেবল খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সরকারের কাছে কাকুতি-মিনতি করে বেগম জিয়ার মুক্তি আসবে না। রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামই বেগম জিয়ার মুক্তির একমাত্র পথ। আর আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে নেমে জেল-জুলুমের ভয় করলে চলবে না। আন্দোলন করতে গেলে জেল আসবে, জুলুম আসবে। এসব মোকাবেলা করেই সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও অর্থদন্ড দেন। পরে ওই বছরের ৩০ অক্টোবর খালেদা জিয়ার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছরের কারাদন্ড দেন হাইকোর্ট। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা রিভিশন আবেদনের রুল যথাযথ ঘোষণা করে হাইকোর্ট খালেদা জিয়ার সাজা বাড়িয়ে দেন। এ ছাড়াও খালেদা জিয়ার নামে আরো ৩২টি মামলা রয়েছে।



 

Show all comments
  • জেসমিন জাহান ১৯ মে, ২০১৯, ১:২৭ এএম says : 0
    বাংলাদেশের রাজনীতির মতো কোনো রাজনীতি বইতে পড়িনি আর চোখে দেখিনি। সে বিদেশি এতিমের টাকা মেরে খাওয়ায় জেল হলো বুঝলাম, দেশের ব্যাংকের, কয়লা, পাথর, হাজার হাজার কোটি টাকা যারা মেরে দিল তাদেরও তো জেল হওয়া দরকার ছিল। আমি কোনো দলের হয়ে বলছিনা। বলছিলাম আইন যদি সবার জন্য সমান হয় অপরাধের বিচার সবার হওয়া উচিৎ।
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammad Robi ১৯ মে, ২০১৯, ১:২৮ এএম says : 0
    বেগম খালেদা জিয়া যদি জেলে মৃত্যু বরণ করেন তা হলে বিএনপি নামক দলটির জন্য কলঙ্কক জনক। এত বড় একটা দল তাদের নেত্রীকে জেল থেকে মুক্তি করতে পারল না। এটা সাধারণ মানুষ হিসেবে আমার কষ্ট হয় এবং এই দলের নেত্রাকর্মীদের প্রতি ধিক্কার জানাই।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Riyajul Islam ১৯ মে, ২০১৯, ১:২৮ এএম says : 0
    জনগণ ই শক্তি দিতে পারে মুক্তি.. চলবে না কোনো তালবাহানা, ষড়যন্ত্র করে গণতন্ত্রের বুকে মাটি চাপা দেওয়া যাবেনা
    Total Reply(0) Reply
  • ইঞ্জিঃ ফারুকুল ইসলাম ফারুক ১৯ মে, ২০১৯, ১:২৯ এএম says : 0
    খালেদা জিয়া মরে যাবে, আর বিএনপি লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে মিলাদ পড়িয়ে মোনাজাত করবে,তবুও কোন দালাল রাস্তায় নামতে সাহস পাবে না।
    Total Reply(0) Reply
  • Mohd Kamal ১৯ মে, ২০১৯, ১:২৯ এএম says : 0
    সারা জীবন দেশের জন্য দেশের মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন। আজকে এই যদি হয় তার প্রতিদান বাংলার মানুষ সারা জীবন এই গুলোর কথা মনে রাখবে আল্লাহ তায়ালা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নেক হায়াত দান করুন আমিন।
    Total Reply(0) Reply
  • মোহাম্মদ নুর আলম আলমগীর ১৯ মে, ২০১৯, ১:৩০ এএম says : 0
    আল্লাহ মালিক। একদিন সবাই কে মরতে হবে। কেউ সারা জীবন বাচবে না। খালেদা জিয়া যেভাবে মরবে,হয়তো বা অন্য রা আরও বেশি কষ্ট করে মারা যেতে পারে। সবই আল্লাহ জানে
    Total Reply(0) Reply
  • মনিরুল ইসলাম ১৯ মে, ২০১৯, ১১:০৪ এএম says : 0
    খালেদা জিয়া এবং বন্দি দেশটাকে মুক্ত করার জন্য সবাইকে একসঙ্গে আন্দোলন সংগ্রাম করতে হবে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খালেদা জিয়া

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ