পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চল্লিশ বছর আগে মাওবাদের ধ্বংসস্তুপের মধ্য থেকে উঠে আসে চীন। তখন থেকেই আমেরিকার সাথে তার সম্পর্কের ক্ষেত্রে মুনাফা অর্জন স্থিতিশীলতার খুঁটিতে পরিণত হয়। প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীরা চাকরি চুরির জন্য চীনকে অভিযুক্ত করবেন। গুপ্তচরবৃত্তি কেলেঙ্কারি একটি উত্তাপ সৃষ্টি করতে পারে। তখন বেইজিং ও ওয়াশিংটনে কর্পোরেট বসেরা এবং রাজনীতিকরা সিদ্ধান্তে আসবেন যে সম্পর্ককে তিক্ত করার জন্য সকল পক্ষই খুব বেশি পরিমাণ টাকা বানাচ্ছে। পারস্পরিক আত্ম-স্বার্থের উপর এই গুরুত্ব আরোপ বিবমিষা উদ্রেককারী সমঝোতার সাথে সংশ্লিষ্ট।
১৯৮৯ সালের জুনে তিয়ানআনমেন চত্বরে চীনা সৈন্যরা শত শত। সম্ভবত হাজার হাজার মানুষকে হত্যার পর সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত না করতে ‘বেদনাদায়ক সাম্প্রতিক ঘটনাবলী’ প্রতিরোধে যৌথ উদ্যোগ গ্রহণের আবেদন জানিয়ে প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ.ডবিøউ বুশ সরাসরি দেং শিয়াও পেংকে চিঠি লেখেন। ২০০৮ সালের আর্থিক বিপর্যয় সস্তা পণ্য আমদানিকারী আমেরিকা ও হিসেবি রফতানিকারক চীনের মধ্যে এক মারাত্মক সহ-নির্ভরতা প্রকাশ করে। এর নতুন নাম হয় ‘চাইমেরিকা’ বা ‘জি-২’।
তবে অর্থ আয়ই যথেষ্ট নয়। গত দুই বছরে কাজের ক্ষেত্রে সম্পৃক্তি বিষয়ে বিতর্ক কৌশলগত প্রতিযোগিতা ও নিরাপত্তা হুমকি বিষয়ে আলোচনার পথ রচনা করেছে। আকর্ষণীয় নতুন মতের পরিবর্তে পন্ডিতরা ঐতিহাসিক সাদৃশ্য সন্ধান করছেন। ইংল্যান্ড ও জার্মানির মধ্যে উচ্চাকাক্সক্ষার বিরোধ গভীর বাণিজ্য সম্পর্ক ছিন্ন করার প্রেক্ষিতে ১৯১৪ সালে কিছু আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
চীনা বিশ্লেষকরা ‘থুসিডাইডস ফাঁদ’ তত্ত¡ দ্বারা প্রভাবিত। এই গ্রীক ঐতিহাসিক সেকালের দুই শক্তি স্পার্টা ও এথেন্স প্রসঙ্গে যে মত দিয়েছিলেন তা ‘থুসিডাইডস ফাঁদ’ নামে পরিচিত। এতে ক্ষমতাসীন শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইরত উদীয়মান শক্তির বিনাশকে সমর্থন করা হয়েছে।
চীনের উত্থান সব সময়ই গোলযোগের সৃষ্টি করেছে। একই দেশ আমেরিকার সর্বাপেক্ষা প্রবল কৌশলগত প্রতিদ্ব›দ্বী। তার বৃহত্তম অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জকারী ও বিশাল বাণিজ্য অংশীদার। এটা এক নতুন বিষয়। এক দশকে জাপানের সাথে আমেরিকার বাণিজ্য ঘাটতি ২৫ গুণ বৃদ্ধি পায়। এটা আমেরিকার কাছে ‘জাপান শক’ নামে পরিচিত।
১৯৭০ ও ১৯৮০ দশকে এ পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে মার্কিন রাজনীতিকরা সুরক্ষামূলক প্রতিরোধ গড়ে তোলার দাবি জানান। কিন্তু এটা ছিল একপেশে রাজেৈনতিক যুদ্ধ। জাপান ছিল এক নির্ভরযোগ্য সমরিক শক্তি। সোভিয়েত ইউনিয়ন ছিল আদর্শগত প্রতিদ্ব›দ্বী, বাণিজ্যিক প্রতিদ্ব›দ্বী নয়।
১৯৮৭ সালে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ২০০ কোটি ডলার। বিশে^র সাথে মার্কিন বাণিজ্যের ০.২৫ শতাংশ। ২০১৮ সালে আমেরিকা ও চীনের মধ্যে দ্বিমুখী বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল দৈনিক ২০০ কোটি ডলার, আমেরিকার বিশ^ বাণিজ্যের ১৩ শতাংশ।
সমালোচকদের যুক্তি হচ্ছে, এলিটদের বিষয়টি দেখতে হবে। পশ্চিমা নেতারা আশা করেছিলেন যে বৈশি^ক অর্থনীতিতে চীনের যোগদান দেশটিকে অনেকটাই পাশ্চাত্যের মত করবে। একটি মধ্যবিত্ত শ্রেণির সৃষ্টি হবে যারা মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও অধিকতর জবাবদিহিতামূলক সরকারের জন্য দাবি জানাবে। তারা ছিলেন ভুল। ২০০৮ এর আর্থিক বিপর্যয় ও পাশ্চাত্য জনসমাজের ক্ষোভ চীনা কম্যুনিস্ট পার্টি নেতাদের। বিশেষ করে শি জিনপিংকে পাশ্চাত্যের এ মনোভাবকে প্রত্যাখ্যান করতে ও দলের শেষ্ঠত্ব আরোপের শক্তি যুগিয়েছে।
প্রযুক্তি ক্ষেত্রে আমেরিকার ধাক্কাটা বেশি খারাপ হয়েছে যা বাণিজ্য ও জাতীয় নিরাপত্তার মধ্যে অস্পষ্ট দাগ সৃষ্টি করেছে। চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়েইকে আমেরিকা বা মিত্র দেশগুলোর জন্য ৫জি টোলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করতে দেয়ার ট্রাম্প প্রশাসনের বিরোধিতা এ ভবিষ্যতের একটি পরীক্ষা।
বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে বিশ^াস যখন চীন স্বয়ংচালিত গাাড়িকে গতিমান ও বিমানকে আকাশে উড্ডীন রাখার জন্য দরকার মাইক্রোচিপসের বদলে টেনিস শ্যু ও টেলিভিশন রফতানি করে। আত্মরক্ষার জটিল রূপ ক্ষতির সৃষ্টি করে। ব্যাপকভাবে সংবেদনশীল প্রযুক্তি চিহ্নিতকরণ এবং সাবেক অর্থমন্ত্রী হেনরি পলসনের ভাষায় ‘একটি অর্থনৈতিক লৌহ আবরণ’ চীন ও আমেরিকাকে বিভক্ত করার জন্য আসতে পারে। আর তা পণ্য, পুঁজি, মানুষ ও প্রযুক্তি প্রবাহকে রুদ্ধ করবে বাকি বিশে^র ওপর যার ফলাফল হবে মারাত্মক।
চীনের ক্রমবর্ধমান প্রযুক্তি শক্তি চুরিকৃত চাকরি বিষয়ক সকল যুক্তির বাইরে বিশ্বায়নের ওপর নতুন চাপ ফেলেছে। জেনারেল মোটরস আমেরিকার চেয়ে চীনে বেশি গাড়ি বিক্রি করে- এ সত্য দুই দেশের মতাদর্শগত পার্থক্য মানিয়ে নিতে সাহায্য করেছে। আজকের চীন থেকে সেমিকন্ডাক্টর থেকে শুরু করে আমেরিকায় যন্ত্রপাতি রফতানি সরবরাহ চেইন প্রকৃতপক্ষে রাজনৈতিক ঝুঁকি বাড়িয়েছে।
লক্ষ ডলার আমেরিকান অস্ত্র বিশ^ব্যাপী প্রতিষ্ঠানগুলোর মাইক্রোচিপসের উপর নির্ভরশীল। গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর জন্য এক ডজন দেশের জিনিসপত্র। একটি মহাদেশ বিষয়ে কোনো প্রোভাইডারের নিকট থেকে সফটওয়ার আপডেট এবং অন্যের কাছে রিয়েল-টাইম ডাটা প্রবাহ প্রেরণ দরকার হতে পারে। এপ্রিলে পেন্টাগনের একটি উপদেষ্টা বোর্ড ‘জিরো-ট্রাস্ট’ বাণিজ্যিক নেটওয়ার্কের পরিকল্পনা করার জন্য প্রতিরক্ষা প্রধানদের সতর্ক করেছে। ক্রমবর্ধমান সংখ্যক ব্যবসা লেনদেন দূরবর্তী সার্ভিস প্রোভাইডারদের প্রতি আজীবন অঙ্গীকার কামনা করে। এই পৃথিবীতে কোন দেশ অংশীদার আর কোন দেশ শত্রু। সেই কঠিন প্রশ্ন আমলে নিয়ে বাণিজ্য সম্পর্ক সীমাবদ্ধ থাকতে পারে না।
শক্তিশালী হওয়ার সব অধিকারই চীনের আছে। কোটি কোটি লোককে দারিদ্র থেকে তুলে আনার তার সাফল্য প্রশংসনীয়। তার পদ্ধতির অবিরাম গতি বাণিজ্যকে নিরাপদ স্থান থেকে যোগাযোগের ক্ষেত্রে নিয়ে এসেছে। পাশ্চাত্যের প্রতিষ্ঠানগুলো শঙ্কিত যে চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো আত্ম-নির্ভর হতে পশ্চিমা প্রযুক্তি শিখে। কিনে বা চুরি করে প্রকৃতই উন্মুক্ত হওয়ার আগেই তাদের ছুড়ে ফেলা হবে।
চীনা নেতাদের কাছে পলসনের চেয়ে কম আমেরিকানেরই প্রবেশাধিকার আছে। তিনি চীন-আমেরিকা সম্পর্ক স্থাপনের দীর্ঘকালের প্রবক্তা। তাই ফেব্রুয়ারিতে যখন বিষয়টি জানা গেল তিনি ঘোষণা করলেন যে যেহেতু ২০০১ সালে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (ডব্লিউটিএ) যোগদানের সময় থেকে চীন তার অর্থনীতিকে উন্মুক্ত করতে মন্থর থাকার কারণে আমেরিকার ব্যবসায়ী সম্প্রদায় প্রবক্তা থেকে সন্দেহগ্রস্তে পরিণত হয় এবং এমনকি চীনের প্রতি অতীত কিছু নীতিরও বিরোধী হয়ে ওঠে। তিনি বলেন, বসরা শুল্ক যুদ্ধ চান না, তারা চান আরো সাংঘর্ষিক পদক্ষেপ। ট্রাম্প প্রশাসনের কাছ থেকে ব্যবসা সেটাই পাচ্ছে। (আগামীকাল শেষ পর্ব)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।