পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঈদ এলেই উপচে পড়া ভিড় দেখা যায় সবগুলো ট্রেনে। ঈদ যাত্রার টিকিটের জন্য হাহাকার লেগেই থাকে। ঈদে ট্রেনের টিকিট মানে সোনার হরিণ। এবারই ঈদে ব্যতিক্রম কিছু উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে এবারই প্রথম ৫টি স্থান থেকে ঈদ যাত্রার ট্রেনের টিকিট বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে। একই সাথে অনলাইনেও ৫০ ভাগ টিকিট সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে। দুটি নতুন ট্রেন চালুর পাশাপাশি ঈদ স্পেশাল ট্রেনও থাকছে। তারপরেও কি এবার যাত্রীরা আরামে ট্রেন ভ্রমণ করতে পারবেন? রেলের হিসাব বলছে, তা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। ঈদে ঘরমুখো ১৫ লাখ যাত্রীর বিপরীতে ট্রেনের টিকিট আছে মাত্র সোয়া চার লাখ। অর্থাৎ সোয়া চার লাখ যাত্রীই শুধু নিজস্ব আসনে ভ্রমণ করতে পারবেন। বাকীদের আন্তঃনগর ট্রেনে দাঁড়িয়ে অথবা মেইল ও লোকাল বা ঈদ স্পেশাল ট্রেনে যাতায়াত করতে হবে।
স্বভাবিক সময়ে প্রতিদিন আড়াই লাখ যাত্রী পরিবহন করে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ঈদের সময় এ সংখ্যা দিনে তিন লাখ ছাড়িয়ে যাবে রেলওয়ের কর্মকর্তাদের ধারণা। এ হিসাবে ঈদযাত্রার পাঁচদিনে (৩১ মে থেকে ৪ জুন) ১৫ লাখের বেশি যাত্রীর চাপ পড়বে ট্রেনে। আন্তঃনগর ট্রেনগুলোতে এ পাঁচদিনের জন্য টিকিট রয়েছে ৪ লাখ ২৫ হাজার। বাকি যাত্রীদের দাঁড়িয়ে অথবা মেইল ও লোকাল ট্রেনে যাতায়াত করতে হবে।
রেলওয়ের অপারেশন শাখার তথ্য মতে, চলতি অর্থবছর (২০১৮-১৯) প্রতি মাসে ৭৭ লাখ যাত্রী পরিবহন করছে রেলওয়ে। এ হিসাবে দিনে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে আড়াই লাখের কিছু বেশি। ঈদের সময় যাত্রী সংখ্যা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় দিনে ৫০ হাজারের মতো বেড়ে যায়। এ কারণে এ সময় প্রতিদিন প্রায় তিন লাখ যাত্রী পরিবহন হয়। এ হিসাবে ঈদযাত্রার পাঁচদিনে পরিবহন করা হবে ১৫ লাখ যাত্রী।
ঈদে ঘরমুখো মানুষের সিংহভাগই ভ্রমণ করবে আন্তঃনগর ট্রেনগুলোতে। রেলওয়ে সূত্র জানায়, বর্তমানে সারা দেশে আন্তঃনগর ট্রেনের সংখ্যা ৯২। ২৯ মে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস নামে আরেক জোড়া ট্রেন চালু হচ্ছে। সে হিসাবে ৯৪টি ট্রেনে দৈনিক আসন সংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় ৭৩ হাজার। এর সঙ্গে ঈদের তিনদিন আগে যোগ হবে আরো ছয় জোড়া বিশেষ ট্রেন। এছাড়া আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল হওয়ায় আরো ৪৮টি ট্রেন অতিরিক্ত পরিচালনা করা হবে। সব মিলিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৮৫ হাজার যাত্রী (আসনধারী) পরিবহনের সক্ষমতা রয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ের। এ হিসাবে পাঁচদিনে প্রায় ৪ লাখ ২৫ হাজার টিকিট বিক্রি হবে।
ঈদে ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যাওয়া ট্রেনগুলোতে যাত্রীর চাপ থাকে সবচেয়ে বেশি। এ কারণে ঢাকা থেকে সবচেয়ে বেশি দিনে ২৭ হাজার টিকিট বিক্রি করবে রেলওয়ে। এ হিসাবে ঈদযাত্রার পাঁচ দিনে ১ লাখ ৩৫ হাজার মানুষ সিটে বসে যাতায়াতের সুযোগ পাবে।
অন্যদিকে, ৯৪টি আন্তঃনগর ট্রেনের বাইরে সারা দেশে প্রতিদিন আরো ২৬২টি মেইল ও লোকাল ট্রেন পরিচালনা করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। যদিও এসব ট্রেনে ঈদ উপলক্ষে কোনো অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হবে না।
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ২২ মে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু করবে বাংলাদেশ রেলওয়ে। টিকিটের জন্য দীর্ঘ লাইন ও মানুষের ভোগান্তি কমাতে এবার টিকিট বিক্রি করা হবে ঢাকার পাঁচটি স্টেশন থেকে। গন্তব্য অনুযায়ী স্টেশনগুলো টিকিট বিক্রির জন্য ভাগ করে দেয়া হয়েছে।
এবার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে শুধু বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে রেলের পশ্চিমাঞ্চলগামী ট্রেনগুলোর টিকিট পাওয়া যাবে। চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীগামী ট্রেনগুলোর টিকিট বিক্রি করা হবে বিমানবন্দর স্টেশন থেকে। একইভাবে ময়মনসিংহ ও জামালপুরগামী ট্রেনগুলোর টিকিট বিক্রি হবে তেজগাঁও স্টেশন থেকে। সিলেট ও কিশোরগঞ্জগামী ট্রেনগুলোর টিকিট বিক্রি হবে ফুলবাড়িয়া পুরাতন রেল ভবনের কাউন্টার থেকে। অন্যদিকে নেত্রকোণা ও মোহনগঞ্জগামী ট্রেনগুলোর টিকিট বিক্রি করা হবে ঢাকার বনানী রেলওয়ে স্টেশন থেকে।
২২ মে বিক্রি হবে ৩১ মের অগ্রিম টিকিট। একইভাবে ২৩, ২৪, ২৫ ও ২৬ মে বিক্রি করা হবে যথাক্রমে ১, ২, ৩ ও ৪ জুনের অগ্রিম টিকিট। ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হবে ২৯ মে। ওই দিন বিক্রি করা হবে ৭ জুনের ফিরতি অগ্রিম টিকিট। একইভাবে ৩০ ও ৩১ মে এবং ১ ও ২ জুন বিক্রি করা হবে যথাক্রমে ৮, ৯, ১০ ও ১১ জুনের অগ্রিম টিকিট। একজন যাত্রী সর্বোচ্চ চারটি টিকিট কিনতে পারবেন। টিকিট কেনার সময় অবশ্যই জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদর্শন করতে হবে।
এবার ঈদ উপলক্ষে আট জোড়া বিশেষ ট্রেন পরিচালনা করবে রেলওয়ে। ঢাকা দেওয়ানগঞ্জ-ঢাকা রুটে ২ থেকে ৪ জুন ও ৬ থেকে ১২ জুন চলবে দেওয়ানগঞ্জ ঈদ স্পেশাল এক জোড়া ট্রেন। আর চট্টগ্রাম-চাঁদপুর-চট্টগ্রাম রুটে ২ থেকে ৪ জুন ও ৬ থেকে ১২ জুন চলবে চাঁদপুর ঈদ স্পেশাল দুই জোড়া ট্রেন। ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেস ঈদের সময় বন্ধ থাকবে। ট্রেনটি দিয়ে চালানো হবে খুলনা ঈদ স্পেশাল একটি ট্রেন। ৩ জুন রাত ১২টা ৫ মিনিটে ট্রেনটি ঢাকা ছাড়বে। ঢাকা-ঈশ্বরদী-ঢাকা রুটে ২ থেকে ৪ জুন চলবে ঈশ্বরদী ঈদ স্পেশাল ট্রেন। লালমনি ঈদ স্পেশাল নামে বিশেষ একটি ট্রেন ২ থেকে ৪ জুন চলবে লালমনিরহাট-ঢাকা-লালমনিরহাট রুটে। ঈদের দিন চালু থাকবে শোলাকিয়া স্পেশাল ১ ও শোলাকিয়া স্পেশাল ২ ট্রেন দুটি। শোলাকিয়া স্পেশাল ১ চলবে ভৈরব-কিশোরগঞ্জ-ভৈরব রুটে, আর শোলাকিয়া স্পেশাল ২ চলবে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ রুটে।
ঈদ যাত্রার বিষয়ে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, ঈদে সাধারণ মানুষের যাতায়াত নিরাপদ, নির্বিঘ্ন, সুলভ ও আরামদায়ক করতে রেলপথ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ রেলওয়ে বরাবরের মতোই এবারো সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। আগাম টিকিট সংগ্রহ থেকে শুরু করে মানুষ যেন নিরাপদে গন্তব্যে যেতে পারে, সেজন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আশা করছি এবার ট্রেনে ঈদযাত্রা নিরাপদ ও আরামদায়ক হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।