পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
একটি গ্রামের নাম জোয়াগ। রমজান এলেই জোয়াগে মানুষদের মধ্যে কর্মচাঞ্চল্যতা বেড়ে যায়। একে অপরের সাথে কথা বলারও সময় পান না। যার যার কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন সবাই। এমন দৃশ্য পুরো রমজান মাসেই দেখা যায় কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম জোয়াগের প্রতিটি ঘরে ঘরে। জোয়াগের সকল নারী পুরুষ এমন কি স্কুলে পড়–য়া ছাত্র-ছাত্রীরা সবাই রমজান মাসে ব্যস্ত হয়ে পড়েন পোশাক তৈরীতে। সারা গ্রামে দেখা যায়, প্রতিটি বাড়ির আঙিনা ও অলিগলিত ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে চুমকির কাজ করা বিভিন্ন রকমের ডিজাইনের তৈরী কাপড়।
গ্রামের নারী-পুরুষ-শিশুসহ সব বয়সের মানুষেই কাপড়ে চুমকির কাজ করা বিভিন্ন রকমের ডিজাইনের পোশক তৈরী করতে নিয়োজিত রেখেছেন নিজেকে। গৃহকর্তা-গৃহকর্ত্রীর পাশাপাশি তাদের সন্তানেরাও পিছিয়ে নেই। প্রত্যেকে নিজ নিজ কাজের ফাঁকে সময় অনুযায়ী কাপড়ে চুমকির কাজ করা যাচ্ছেন।
তবে রমজানের ঈদকে সামনে রেখেই এখন জোয়াগ গ্রামের অধিকাংশ পরিবারের ব্যস্ত সময় কাটছে বিভিন্ন রকমের ডিজাইন তৈরীতে। এখান থেকেই বিভিন্ন ডিজাইনের তৈরী পোশাক চলে যায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বড় বড় আলিশান মার্কেটগুলোতে। ঈদকে সামনে রেখে জোয়াগ গ্রামে থ্রিপিস, শাড়ি, লেহাঙ্গাসহ বিভিন্ন নিত্যনতুন ডিজাইনের জামা কাপড় তৈরী হচ্ছে।
গত দু’দিন জোয়াগ গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, নারী ও পুরুষ সবাই যার যার কাজ নিয়েই ব্যস্ত। কাজের ফাঁকে ফাঁকে কথা হয় কারখানার মালিক জুয়েল, মনির, ইয়াছিন ও ইউসুফের সাথে। তারা জানান, গ্রামের লোকজন ১২ মাসই চুমকির কাজ করা পোশাক তৈরী করেন। তবে রমজানের ঈদকে কেন্দ্র করেই দুই তিন মাস আগে থেকেই শুরু হয়ে যায় তাদের কাজের কর্মচাঞ্চল্যতা।
তাদের কথায়, এই সময়ে সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়েন নিত্য নতুন ডিজাইনের চুমকির পোশাক তৈরীতে। এখন সবার একটি লক্ষ্য থাকে ঈদের বাজার শেষ হবার আগেই দোকানীদের হাতে মাল তুলে দিতে হবে। সে কথা মাথায় রেখেই তারা কাজ করে যাচ্ছেন। তারা জানান, ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার বড় বড় দোকানীরা জোয়াগের বুটিক কারখানার মালিকদের সাথে কথা বলে তাদেরকে এই কাজের অর্ডার দেয়া হয়।
দোকানীরা কাপড়গুলো পিছ করে সাথে ডিজাইনের ফটোকপি বুটিক মালিকদের দিয়ে থাকে। তারা ডিজাইন অনুযায়ী কাপড়ে কাজ করে ঢাকায় নিয়ে মালগুলো দোকানে দিয়ে আবার নতুন নতুন অর্ডার নিয়ে আসেন। জোয়াগ গ্রামের বুটিক শিল্পের কারিগর গোলাম কিবরিয়া, কাউসার, ওয়াসীম ও সুমন জানান, সকাল ৮টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত কাজ করেন এবং কাজের ফাঁকে দুইবার বিশ্রাম নেন।
মাস শেষে পারিশ্রমিক পান প্রত্যেকেই আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা করে। তবে রোজার মাস এলেই তাদের পারিশ্রমিক বেড়ে যায়। তখন প্রত্যেক কারিগর পান চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা। চুমকির কাজ করে যে টাকা পাচ্ছেন তাতে কারিগররা খুশি। তারা বলেন, আমরা আমাদের নিজ গ্রামে বসে পরিশ্রম করে টাকা কামাই করছি। এটা তো বড়্ই আনন্দের। তাদের চুমকির পোশাক তৈরীর কাজ শবে কদর রাত পর্যন্ত চলবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।