পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : গণিতের খুব সূক্ষè একটি শাখা-জ্যামিতি, যেখানে আকার আর আকৃতি নিয়েই সবকিছু। এই জ্যামিতির ব্যবহার শুরু হয়েছিল কবে থেকে তা নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা। গবেষণায় দেখা গেছে এতদিন এর প্রথম ব্যবহার নিয়ে যে ধারণা ছিলো, আসলে এর ব্যবহার শুরু হয়েছে তারও বহু বহু বছর আগে থেকে। গবেষকরা বলছেন, প্রাচীন ব্যাবিলন সভ্যতার সময় রাতের আকাশে জুপিটার গ্রহকে চিহ্নিত করতে গিয়ে জ্যামিতির ব্যবহার করা হতো এমন প্রমাণ আমরা এখন পাচ্ছি।
আগে ধারণা করা হতো যে জ্যামিতির ব্যবহার ছিলো চতুর্দশ শতাব্দীতে এবং ইউরোপের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরাই এই গণিত আবিষ্কার করেছিলেন। প্যারিস আর অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানীরাই প্রথম জ্যামিতি ব্যবহার করেছিলেন। কিন্তু গবেষণা করে বিজ্ঞানীরা বলছেন, এখন থেকে প্রায় আড়াই হাজার বছর আগেও এই জ্যামিতির প্রচলন ছিলো।
অর্থাৎ খৃস্টপূর্ব তিনশো পঞ্চাশ সালের দিকেও এই জ্যামিতির প্রচলন ছিলো।
এই চমকপ্রদ তথ্যটি জানিয়েছেন জার্মানির বার্লিনে হোমবোল্ট ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ম্যাথু ওজেনড্রাইভার। এই গবেষক বলছেন, গবেষণা শুরুর আগেই তারা এমনটি ধারণা করছিলেন। কারণ পদার্থ বিজ্ঞানসহ বিজ্ঞানের প্রায় সকল বিভাগেই এই জ্যামিতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাচীন এই ব্যাবিলনীয় সভ্যতা ছিলো আজকের ইরাক ও সিরিয়ায়। এই সভ্যতার লোকেরা জ্যোতির্বিজ্ঞানে অনেক অগ্রসর ছিলেন। তখনই তারা ব্যবহার করতো মাটির তৈরি ট্যাবলেট। দেখতে রুটির মতো। রঙও রুটির মতো।
সেখানে লেখার জন্যে ছিলো তাদের নিজস্ব লেখনী পদ্ধতি - ‘কিউনিফর্ম’। দেখলে মনে হবে এর গায়ে শুধু আঁচড় কাটা হয়েছে।
প্রফেসর ওজেনড্রাইভার বলেন, রাতের আকাশে তারা যা কিছুই দেখতে পেতেন সেসব তারা লিখে রাখতেন। কয়েক শতাব্দী ধরে তারা এই কাজটা চালিয়ে গেছেন। সেখানে তারা একটা নিয়ম নীতি দেখতে পেয়েছেন- কোন গ্রহটি কোন দিকে ঘুরছে, এজন্যে কতো সময় লাগছে। এসব তারা লিখে রাখতেন। এটা তারা করতেন নম্বর আর অবস্থানের সাহায্যে। অর্থাৎ তারা জ্যামিতিক রীতিনীতিও অনুসরণ করতেন। যেমন তারা ট্র্যাপিজয়ডের মতো আকার আকৃতি নিয়ে কথা বলতেন।
তিনি বলেন, জ্যোতির্বিজ্ঞান সম্পর্কিত প্রতিযোগিতায় তারা এই জ্যামিতিকে ব্যবহার করতেন। প্রায় একই সময়ে গ্রিকরাও জ্যামিতি ব্যবহার করতো। তবে ব্যাবিলন সভ্যতার বিজ্ঞানীরা যে জ্যামিতি ব্যবহার করতেন সেটা ছিলো একেবারেই ভিন্ন ধরনের। একেবারেই তাদের নিজস্ব। এটা ছিলো বিমূর্ত, যা পরে গ্রিকরাও ব্যবহার করেছে।
তিনি বলেন, এসব ট্যাবলেটে ওরা একটি ফিগার বা আকৃতি নিয়ে কথা বলতো। এই ফিগারকে আমরা বলি ট্র্যাপিজয়েড। এটা দেখতে চতুর্ভুজের মতো। তবে উপরের বাহুটা ছোট এবং নিচের দিকে নামানো। এই ট্র্যাপিজয়েডের মাধ্যমে তারা বোঝাতো জুপিটার গ্রহের গতি কিভাবে সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হচ্ছে। ট্রাপিজয়েডের একপাশ বোঝাতো সময় আর অন্যপাশটা বোঝাতো গতি। পৃথিবীর আর কোথাও জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এই কৌশল অবলম্বন করেছেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
খনন কাজ চালিয়ে মাটির যে চারটি ট্যাবলেট পাওয়া গেছে তাতে দেখা যাচ্ছে, শুধুমাত্র জুপিটারের ওপর গবেষণার ক্ষেত্রেই এই ট্র্যাপিজয়েড ব্যবহার করা হয়েছে।
এই কৌশল ব্যাবিলনীয় সভ্যতার কোনো একজন বিজ্ঞানী করেছেন নাকি আরো অনেকেই এটা করতেন সেটাও জানা যায়নি। তবে দেখা গেছে এসব আকৃতির পরিবর্তন ঘটেছে এবং নতুন নতুন করে এগুলো লেখা হয়েছে। সূত্র : বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।